করোনায় সুস্থ হওয়ার হার বাড়লেও সাবধানতায় ঢিলেমি নয়। ছবি: এপি।
দেশে এক দিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ল ২০০৩ জন!
নয়া সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছিল মাঝেমধ্যেই। মৃতের সংখ্যাও রোজ গড়ে দু’শো-তিনশোর ঘরে থাকছিল। কিন্তু এই প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা এত বেড়ে যাওয়ায় চমকে ওঠে গোটা দেশ। এর ফলে মোট মৃতের সংখ্যা ৯৯০০ থেকে বেড়ে আজ হয়েছে ১১,৯০৩। আর মৃতের সংখ্যা দশ হাজার পেরোনোর দিনেই মোট সংক্রমিতের সংখ্যা সাড়ে তিন লক্ষ পেরিয়েছে। ১০৯৭৪ জনের নতুন সংক্রমণে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,৫৪,০৬৫।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যদিও বক্তব্য, এই ২০০৩ জনই গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গিয়েছেন, বিষয়টি এমন নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে গত কয়েক দিনে বেশ কিছু মৃত্যু হয়েছিল, যেগুলি করোনায় মৃত্যু বলে এত দিন নিশ্চিত করেনি ওই দুই রাজ্য। আজ তা করা হয়েছে। এতগুলি মৃত্যুর তথ্য একসঙ্গে আসার ফলেই মৃতের সংখ্যা এত বেড়েছে।’’
মৃত ২০০৩ জনের মধ্যে ১৪০৮ জন মহারাষ্ট্রের ও ৪৩৭ জন দিল্লির বাসিন্দা। তার পরেই তামিলনাড়ু, ৪৯ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, দেশে সুস্থতার হার বেড়ে ৫২.৭৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এখন ১,৫৫,২২৭, সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১,৮৬,৯৩৪।
আরও পড়ুন: এক বস্তিতেই আক্রান্ত ১৬ জন, তা-ও ফেরেনি হুঁশ
তবে এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই যে, গত টানা ছ’দিন ধরে দেশে নতুন করে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের উপরে রয়েছে। যে গতিতে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে, তাতে উদ্বিগ্ন জার্মান সরকার আজ তাদের নাগরিকদের বলেছে, কেউ বর্তমানে ভারতে থাকলে তাঁরা যেন দেশে ফেরার কথা বিবেচনা করেন। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের আজ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত কাল তাঁর পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছিল। আজ ফের পরীক্ষা হয় তাঁর। সারা দেশে ৯৬০টি আইসোলেশন কোচ মোতায়েন করেছে রেল। যার মধ্যে ৫০৩টি পাঠানো হয়েছে দিল্লির ৯টি স্টেশনে। এ ছাড়া ২৪২টি স্কুলের প্রেক্ষাগৃহেও কোভিড রোগীদের রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। ৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে আজ বৈঠক করেছেন উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া সেই বৈঠকে ছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘দয়া করে অন্য রোগীদেরও ট্রিটমেন্ট দিন’, আর্জি মমতা
দিল্লি সরকার যদিও আজ ফের সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে। কোভিড হাসপাতালের দুরবস্থার ভিডিয়ো তুলে সমাজমাধ্যমে শেয়ার করায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। করোনা রোগীদের চিকিৎসা ও মৃতদের সৎকারে অব্যবস্থার অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন সেই বেঞ্চ আজ বলেছে, ‘‘চিকিৎসক ও নার্সেরা এই যুদ্ধের সেনা। আপনারা তাঁদের ঠিকমতো না-রাখলে যুদ্ধে জিতবেন কী করে? আপনারা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করছেন। এটা তো দূতকেই গুলি করে দেওয়া। ওঁদের হেনস্থা করা বন্ধ করুন।’’ চিকিৎসাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা সমস্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। নির্দেশ পালন করা হয়েছে কি না, শুক্রবার হলফনামা দিয়ে তা জানাতে হবে দিল্লি সরকারকে।
এ দিনই দিল্লিতে কোভিড পরীক্ষার খরচে লাগাম পরিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর বেঁধে দেওয়া ৪৫০০ টাকার ঊর্ধ্বসীমা মেনেই এত দিন পরীক্ষা হচ্ছিল দিল্লিতে। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক টুইট করে জানিয়েছে, কোভিড পরীক্ষার জন্য রাজধানীতে আর ২৪০০ টাকার বেশি নেওয়া যাবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দেওয়ার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করিয়ে ফলাফল যাতে পাওয়া যায়, তার জন্য আগামিকাল থেকে দিল্লিতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা হবে। এই কিট পাওয়ার ক্ষেত্রে দিল্লিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে ১৬৯টি পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এ দিকে, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে কেরল সরকার বলেছে, বিদেশ থেকে রাজ্যে ফিরতে হলে বিমানে ওঠার আগে করোনা পরীক্ষা করাতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy