ছবি: পিটিআই।
চিন থেকে আসা অ্যান্টিবডি কিট রাজ্যগুলিকে পাঠানো শুরু করল কেন্দ্র। করোনা-প্রতিরোধের লক্ষ্যে তৈরি জাতীয় টাস্ক ফোর্সের পরামর্শ মেনে যে রাজ্যগুলিতে রোগী তথা হটস্পটের সংখ্যা বেশি, কিট পাঠানোর প্রশ্নে সেই রাজ্যগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় কতটা লাভ, তা নিয়ে চর্চা ছিলই। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়েছে, নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ খুঁজতে প্রথাগত যে ‘রিয়েল টাইম পিসিআর কিট’ ব্যবহার হয়ে থাকে, তার কোনও বিকল্প নেই। সংক্রমিতকে চিহ্নিত করতে এখনও মূলত পিসিআর পরীক্ষার ফলের উপরেই সরকার নির্ভরশীল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, ‘‘অ্যান্টিবডি পরীক্ষা কোনও ভাবেই পিসিআর পরীক্ষার বিকল্প হতে পারে না। কারণ অ্যান্টিবডি পরীক্ষার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কারও শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশের পরে গড়ে সাত দিনের মাথায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তাই জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাত দিন পরেই অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা উচিত। তা না-হলে বিভ্রান্তিকর ফলাফলের আশঙ্কা থেকে যায়।’’
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, মূলত হটস্পট এলাকাগুলিতে বা কোনও জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, তা দেখার জন্য অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা যেতে পারে। হটস্পট হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে, এমন এলাকাতেও ওই পরীক্ষা করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, হটস্পটের ‘কন্টেনমেন্ট’ এলাকাগুলিতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা হচ্ছে। সেখানে কারও করোনার উপসর্গ পাওয়া গেলে কত দিন ধরে ওই উপসর্গ রয়েছে, তা জেনে নিয়ে পিসিআর বা অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করানো হবে। সমীক্ষকেরা যদি দেখেন, কারও এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপসর্গ রয়েছে, সে ক্ষেত্রে তাঁরা অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাতে পারেন। কারণ, অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ফল দ্রুত জানা যায়। সেই অনুযায়ী প্রশাসনও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
দেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নীতি
হবে দু’টি পরীক্ষা
• রিয়্যাল টাইম পিসিআর (আরটি-পিসিআর) টেস্ট
• পয়েন্ট-অব-কেয়ার মলিকিউলার ডায়াগনিস্টিক অ্যাসেজ
এই দুই পরীক্ষা হবে যাঁদের
• উপসর্গ রয়েছে এমন সব ব্যক্তি
• উপসর্গ রয়েছে এমন সব ব্যক্তি, কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে এমন কারও সংস্পর্শে এসেছেন যাঁরা
• উপসর্গ রয়েছে এমন সব স্বাস্থ্যকর্মী
• সব সারি (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) রোগীর (জ্বর ও কাশি কিংবা/এবং শ্বাসকষ্ট)
• নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর প্রত্যক্ষ
বা পরোক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন, উপসর্গহীন
কিন্তু ঝুঁকি বেশি এমন সব ব্যক্তি, সংস্পর্শে আসার ৫ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে এক বার
লব আগরওয়াল জানান, উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাত দিনের মধ্যে যদি পরীক্ষা করাতে হয়, তা হলে পিসিআর পরীক্ষাই করানো উচিত। শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টকে আরও অন্তত সাত দিন নিভৃতবাসের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অ্যান্টিবডি না-মিললেও ঝুঁকি না-নিয়ে এক সপ্তাহ গৃহবন্দি থাকার কথা বলা হয়েছে। অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ফলাফল আইসিএমআর-কে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত সিলমোহর, সোমবার থেকে দেশে কী কী কাজ শুরু হচ্ছে দেখে নিন
বাংলার ছবি
স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের অন্তত ২২টি জেলায় গত ১৪ দিনে নতুন সংক্রমণের খবর নেই। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেরই নদিয়ায় ১৪ দিন পরে সংক্রমণ ফিরে এসেছে।
আজ বিকেল পর্যন্ত চব্বিশ ঘটনায় ৯৯১ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশে মোট সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪,৭৯২। ওই ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৪৩ জন। ফলে মোট মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৪৮৮। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, দেশের অন্তত ২২টি জেলায় গত ১৪ দিনে নতুন সংক্রমণের খবর নেই। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেরই নদিয়া, বিহারের পটনা এবং হরিয়ানার পানিপথে ১৪ দিনের পরেও সংক্রমণ ফিরে এসেছে। যুগ্মসচিবের কথায়, ‘‘সামান্য ঢিলে দিলেই মুশকিল।’’ তবে পুদুচেরি ও কর্নাটকের দু'টি জেলায় গত ২৮ দিনে নতুন সংক্রমণের খবর নেই।
আরও পড়ুন: পুণের শুটিং দল ঠাঁই পেল জম্মুর পরিবারে
কেন্দ্রের দাবি, ভারতে করোনার মোট সংক্রমণের নিরিখে মৃত্যুর হার মাত্র ৩.৩%, যা উন্নত বহু দেশের চেয়ে ভাল। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মৃতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশেরই বয়স ষাট বা ষাটের বেশি। এই বর্ষীয়ান নাগরিকদের মধ্যে ৮৩% করোনার আগে থেকেই নানা ‘ক্রনিক’ রোগে ভুগছিলেন। তাই প্রবীণদের এই সময়ে সাবধান হতে বলেছে কেন্দ্র।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy