সুস্থতার হারের মতোই আশা জাগাচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশে করোনার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যায় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি হলেও, আক্রান্তের সংখ্যা পার করল সাড়ে ৭০ লক্ষের গণ্ডি। সেই সঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে মহারাষ্ট্রকে পিছনে ঠেলে শীর্ষে উঠে এল কেরল। উৎসবের মরসুমে এই দুই পরিসংখ্যান আশঙ্কা জাগালেও স্বস্তির দিচ্ছে সুস্থতা এবং সংক্রমণের হার।
রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে মোট ৭০ লক্ষ ৫৩ হাজার ৮০৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন সাড়ে ৬০ লক্ষেরও বেশি রোগী। এই মুহূর্তে দেশে ৮ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৯৬ জন সক্রিয় রোগী রয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হলেও তা থেকে সেরে উঠেছেন ৬০ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯৭৬ জন।
সুস্থতার হারে এ দিন রেকর্ড বৃদ্ধি লক্ষ করা গিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, এ দিন সকালে তা দাঁড়িয়েছে ৮৬.১৭ শতাংশে। করোনা-সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে যা সর্বোচ্চ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
সুস্থতার হারের মতোই আশা জাগাচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। এ দিন তা ৬.৯০ শতাংশ। প্রতি দিন যত জনের কোভিড-টেস্ট হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এই হার যত নিম্নমুখী হবে, ততটাই স্বস্তিদায়ক। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশ জুড়ে ১০ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫৪৪ জনের কোভিড-টেস্ট হয়েছে। তার মধ্যে ৭৪ হাজার ৩৮৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: পুজোর পরে সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা, কোভিড-শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ
আরও পড়ুন: তাড়াহুড়ো নয় কোভ্যাক্সিনে
দেশের করোনা-আক্রান্তের সংখ্যায় গত কয়েক দিন ধরেই দৈনিক ৭০ হাজারের বেশি আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। অন্য দিকে, বিশ্বের করোনা-মানচিত্রে নজর ঘোরালে দেখা যাবে, আমেরিকা বা ব্রাজিলের মতো দেশে প্রতি দিন আক্রান্তের সংখ্যা ভারতের থেকে তুলনামূলক ভাবে কম। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬০০ জন। অন্য দিকে, আক্রান্তের নিরিখে বিশ্ব-তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ওই একই সময়ে ব্রাজিলে ১৪ হাজার ৯৪০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও ওই আমেরিকা ও ব্রাজিলে আক্রান্তের মোট সংখ্যা যথাক্রমে ৭৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৩৩ এবং ৫০ লক্ষ ৭০ হাজার ৮২৮। তবে মৃতের সংখ্যায় ভারতকে পিঠনে ফেলে দিয়েছে আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৩৭০ জন কোভিড-রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, ভারতে মৃতের মোট সংখ্যা ১ লক্ষ ৮ হাজার ৩৩৮। মৃতের সংখ্যার নিরিখে ভারতকে ছাপিয়ে গিয়েছে ব্রাজিলও। ওই দেশে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৬৩৯ জন আক্রান্ত মারা গিয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ দেশে সংক্রমিতদের তালিকায় বরাবরই শীর্ষে ছিল মহারাষ্ট্র। তবে এই প্রথম মহারাষ্ট্রকে টপকে এক নম্বরে উঠে এসেছে কেরল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী, কেরলে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৭৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। অন্য দিকে, মহারাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজার ৪১৬। তবে মোট আক্রান্তের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত শীর্ষ মহারাষ্ট্র। ওই রাজ্যে তা পৌঁছেছে ১৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৪৩৪-এ। মৃত্যু হয়েছে মোট ৪০ হাজার ৪০ জনের। মহারাষ্ট্র এবং কেরল ছাড়া কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এ দিন টুইটারে স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে, ‘ওই পাঁচ রাজ্যে দেশের ৬১ শতাংশ সংক্রিয় কোভিড-রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, সুস্থ হয়ে ওঠার রোগীর অর্ধেকের বেশিও (৫৪.৩ শতাংশ) ওই পাঁচ রাজ্যেরই।’
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কেরলে প্রায় তিন লক্ষের কাছাকাছি কোভিডে আক্রান্ত হলেও অন্ধ্রপ্রদেশ বা কর্নাটকে সংক্রমিত হয়েছেন সাত লক্ষেরও বেশি। অন্য দিকে তামিলনাড়ুতে সাড়ে ছ’লক্ষ দিল্লিতে তিন লক্ষের বেশি আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
পশ্চিমবঙ্গেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাটা প্রায় ৩ লক্ষের কাছাকাছি। সেই সঙ্গে এ রাজ্য়ে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি কোভিড-রোগীর। দেশের করোনা-মানচিত্রে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে উত্তরপ্রদেশও। ওই রাজ্যে সাড়ে চার লক্ষের কাছাকাছি কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। অন্য দিকে, ওড়িশা বা তেলঙ্গানায় তা ছাড়িয়েছে দু’লক্ষের গণ্ডি।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy