ফাইল চিত্র।
ভারতের আমজনতা কবে করোনার প্রতিষেধক পাবেন, তার নিশ্চয়তা নেই। এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে ব্রাজিল বিবৃতি দিল, করোনার ২০ লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক নিয়ে যেতে ভারতে তারা বিমান পাঠাচ্ছে। সেই প্রতিষেধক নাকি ১৬ তারিখে ব্রাজিলে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, এখনই অন্যান্য দেশে প্রতিষেধক পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই।
এ কথা ঠিক, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রাজিলকে প্রতিষেধক দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জ়াইর বোলসোনারো সম্প্রতি মোদীকে দ্রুত প্রতিষেধক পাঠানোর আর্জি জানান। কিন্তু এ বার ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এদুয়ার্দো পাজ়ুয়েলো জানিয়েই দিয়েছেন, অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ‘কোভিশিল্ড’ প্রতিষেধকের ২০ লক্ষ ডোজ় তাঁদের সরবরাহ করবে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকারও দাবি, এই মাসেই তাদের প্রতিষেধক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সিরাম। যদিও পুণের সংস্থাটি এ নিয়ে মুখ খোলেনি।
সিরামের সিইও আদার পুনাওয়ালা এর আগে বলেছিলেন, মার্চ নাগাদ তাঁরা বিদেশে প্রতিষেধক পাঠাতে পারবেন। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, ভারত কোন দেশকে কবে প্রতিষেধক পাঠাতে পারবে, তা এত তাড়াতাড়ি বলা সম্ভব নয়। ব্রাজিলের বিমান পাঠানোর প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানায়, ব্রাজিল বিমান পাঠালেও দিল্লি এখনই (প্রতিষেধক) দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: অ্যাপ নির্ভর ঋণে প্রতারণা, অবৈধ বহু অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে সরাল গুগ্ল
শেষজ্ঞদের মতে, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং ‘গাভি’ প্রতিষেধক জোটের কাছ থেকে ১৫ কোটি ডলার সাহায্য পেয়েছে সিরাম। সেই মোতাবেক অনুন্নত দেশগুলিকে প্রতিষেধক সরবরাহের বিষয়ে তারা চুক্তিবদ্ধ। তা ছাড়া, অক্সফোর্ডের প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা হয়েছে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। ভারতে ছাড়পত্র পাওয়ার সময়ে সেই তথ্যই ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছিল সিরাম। ফলে যখনই হোক, ব্রাজিলে প্রতিষেধক হয়তো যাবে। আবার ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ নিয়ে বিতর্কের আবহে জানা গিয়েছিল, এই প্রতিষেধক সরবরাহের জন্য ব্রাজিলের একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বায়োটেকের। কিন্তু সব মিলিয়ে বিদেশে প্রতিষেধক সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘এই সরকার চার ঘণ্টার নোটিসে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিল। ফলে পরিকল্পনার দিক থেকে তাদের কাছ থেকে আর কী-ই বা প্রত্যাশা করা যায়!’’
আরও পড়ুন: পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি ব্যবসায়ী খুন দিল্লিতে, ধরা পড়ল সিসিটিভিতে
মানবদেহে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষ না-হওয়া সত্ত্বেও কোভ্যাক্সিন ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে গোড়া থেকেই। আজ খোলা চিঠি দিয়ে কোভ্যাক্সিনের পক্ষে সওয়াল করেছেন এক দল চিকিৎসক, চিকিৎসা-কর্তা ও বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, ভারতের বিজ্ঞানী মহলকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যেই নানা ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা হচ্ছে। ৪৯ জনের সই করা সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও সেটি টুইটারে আপলোড করে। তাঁদের মতে, এ দেশে কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা সংক্রান্ত চূড়ান্ত তথ্য এখনও পাওয়া না-গেলেও সেটি নিরাপদ এবং জোরদার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়েছে। অবশ্য কোভিশিল্ডের হয়েও সওয়াল করেন এই বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের উদ্ধৃত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ফের জানায়, ছাড়পত্র পাওয়া দু’টি প্রতিষেধকই নিরাপদ। বিরোধীদের বক্তব্য, স্বাক্ষরকারীদের যে বিজেপিই মাঠে নামিয়েছে, তা স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy