—ফাইল চিত্র।
করোনার আক্রমণ ঠেকানোর জন্যই প্রতিষেধকের আয়োজন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, টিকার প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরে যিনি বা যাঁরা সংক্রমণের কবলে পড়ছেন, তাঁদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ় কতটা দেরিতে নেওয়া যুক্তিযুক্ত ও কার্যকর? প্রথম দফার টিকা নিয়েও এক প্রৌঢ় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে ওঠার পরে তাঁর প্রশ্ন, 'দ্বিতীয় টিকা কবে পাব?' আবার অনেকের প্রশ্ন, টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার আগেই কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁর আর প্রতিষেধক নেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে কি?
রাজ্য জুড়ে টিকার আকালের মধ্যেই এই ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, টিকার প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরে কারও করোনা হলে সেই সংক্রমণ তাঁর শরীরে বুস্টার ডোজ়ের মতো কাজ করে। "প্রথম ডোজ়ের পরে করোনা হয়েছে, এমন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠার পরে দেরি করে দ্বিতীয় ডোজ় নিলে তাঁর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। কিন্তু টিকা পাওয়ার ব্যাপারে মানুষের সংশয় কাটছে না," বলেন দীপ্যমানবাবু।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের বক্তব্য, কারও করোনা হলে তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি বা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। প্রামাণ্য তথ্য না-থাকলেও বিভিন্ন গবেষণাপত্রে দেখা যাচ্ছে, মোটামুটি তিন থেকে ছ’মাস পর্যন্ত ওই অ্যান্টিবডি থেকে যায়। ‘‘সে-দিক থেকে দেখলে যাঁদের করোনা হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য যদি ছ’মাস দেরি করা যায়, তা হলে যাঁরা এখনও প্রতিষেধক পাননি এবং যাঁদের করোনা হয়নি, তাঁরা সহজে টিকা পাবেন। তাই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে দেরির সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য।" আবার রাজ্যে প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা প্রয়োগ-পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক বলেন, "কোরিয়া, রাশিয়া, জাপান, আমেরিকা থেকে পাওয়া গবেষণালব্ধ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা করোনা থেকে সেরে উঠছেন, তাঁদের শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ৬-৮ মাস পর্যন্ত থাকছে। তার পরে সেটি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তাই প্রতিষেধক নিতেই হবে।" এই তথ্য সামনে রেখে জাতীয় পরামর্শদাতা কমিটিও সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার ছ’মাস পরে টিকা নিতে বলেছে বলেই মনে করেন শুভ্রজ্যোতিবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy