ছবি: রয়টার্স
টিকার অভাব নেই, কিন্তু ভয়ে এগিয়ে আসছেন না গ্রহীতারা। ইউরোপের উল্টো ছবি ভারতে। কারণ, অনেকেই মনে করছেন, ভারত বায়োটেকের করোনা টিকা তৃতীয় দফার ট্রায়াল ঠিক মতো শেষ করেনি। প্রকাশ্যে আসেনি সাফল্যের তথ্য। তাই ভয়, টিকা নিলে যদি কিছু হয়!
ভারতে প্রাথমিক ভাবে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়ার কথা ঘোষিত হয়েছে। দুটি টিকা পেয়েছে অনুমোদন। সিরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। দুটি টিকাই দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনেকেই ভারত বায়োটেকের টিকাকে ভরসা করতে পারছেন না। ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স অব পটনা-র চিকিৎসক বিনোদ কুমার জানিয়েছেন, ৪০ শতাংশ চিকিৎসক চাইছেন, অপেক্ষা করতে। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের (স্বাস্থ্যকর্মীদের) উপর করোনার টিকার ট্রায়াল চালানোর তো কোনও মানে হয় না, যখন ভারতে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা এমনিতেই কম।’’ ঝুঁকির কথাই বলতে চেয়েছেন চিকিৎসক।
জুলাইয়ের মধ্যে ভারতে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দিতে গেলে যে গতিতে টিকাকরণ হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না। সোমবারের হিসাব অনুসারে, এখনও পর্যন্ত ২০ লক্ষ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে লক্ষ্যমাত্রার ৭৫ শতাংশ মানুষ টিকা নিয়েছেন ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিহারে টিকাপ্রাপ্তের শতাংশ ৫১.৬। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজস্থানে লক্ষ্যমাত্রার ৫৫ শতাংশকে টিকা দেওয়া গিয়েছে। দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুতে ৫৪শতাংশ। তামিলনাড়ুতে কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডের হিসাব করলে দেখা যাবে, কোভ্যাক্সিনে নথিভুক্তের ২৩ শতাংশ টিকা নিয়েছেন, সিরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে সেই শতাংশের হিসাব ৫৬।
সরকারের পক্ষ থেকে দুটি টিকাই নিরাপদ বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত বায়োটেকের তৃতীয় দফার ট্রায়াল হয়নি বলে অনেকেই মনে করছেন, এটি একরকম ট্রায়ালের মতোই প্রয়োগ করা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের শরীরে। তবে পৃথিবীর সর্বত্র এমন ভয় কাজ করছে, তা কিন্তু নয়। ভারত ছাড়া জাপান, চিন ও ব্রাজিলে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কিন্তু আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলিতে ছবিটা উল্টো। সেখানে টিকা নেওয়ার লোক আছে, কিন্তু পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ নেই। সেই কারণেই ভারতের থেকে টিকা কিনতে চেয়েছে ব্রিটেন, বেলজিয়াম সৌদি আরব।
নয়াদিল্লির এমসের চিকিৎসক সংগঠনের সদস্য আদর্শপ্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের মতো একাধিক প্রতিষ্ঠান কোভ্যাক্সিন প্রয়োগের বিষয়ে নিশ্চিন্ত নয়। সরকারের উচিত তথ্যপ্রমাণ নিয়ে প্রকাশ্যে আসা। সাধারণ মানুষের মনে ভরসা তৈরি করা যে এই টিকাও গ্রহণযোগ্য।’’
যে টিকাকে ঘিরে সন্দেহ, সেই ভারত বায়োটেকের প্রধান কৃষ্ণা এলা জানিয়েছিলেন, সংস্থা ২০০ শতাংশ স্বচ্ছ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়েছে। ১৬টি নিরাপদ টিকা তৈরির ইতিহাস রয়েছে সংস্থার। তাই একে সন্দেহ করার মানে হয় না। একই সুরে টিকা নেওয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। কোভ্যাক্সিন নিয়ে গুজব উড়িয়ে দিয়েছে তিনিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy