—প্রতীকী ছবি।
সারা জীবন সোনার দোকানের বিক্রেতা হয়ে থাকার মোটেই ইচ্ছা ছিল না ২৭ বছরের রাহুল জয়ন্তীলাল মেহতার। নতুন জীবন, দুনিয়াদারি ও বিলাসিতার গভীর লোভ তার চোখে, উপায় তো কিছু ঠাউরাতে হবে! তা নিজের উপায় নিজেই খুঁজে নিয়েছিল সে, তবে কথায় বলে, পুলিশে ছুঁলে আঠেরো ঘা! প্রায় ১.০৫ কোটি টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি করার অভিযোগে সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের ঠাণেতে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই যুবককে। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, ঠাণের মীরা রোডে নিজের প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই পুলিশের জালে পড়েছে সে।
ঠাণের তালাও পালি এলাকার ওই সোনার দোকানের মালিক রাহুলকে স্বচ্ছন্দে ‘সেলসম্যান অব দ্য ইয়ার’ আখ্যা দিতে পারতেন। এত সুমিষ্ট তাঁর ব্যবহার, এত নিখুঁত তার কাজ। সেলস-এর দায়িত্বে ছিল সে। কিন্তু বিধি বাম, তার হাতসাফাইও যে নিখুঁত— কাজের ফাঁকে প্রতিদিন একটু একটু করে গয়না সরাত সে। গত নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল তার এই হাতসাফাই। পুলিশ জানিয়েছে, নভেম্বর থেকে মার্চ এই ৫ মাসে প্রায় ৭০টি অলঙ্কার চুরি করেছিল রাহুল। যার ওজন মোট ১.৫৯ কিলোগ্রাম, মূল্য ১.০৫ কোটি টাকার কাছাকাছি। এখনও পর্যন্ত ৯০০ গ্রাম গয়না উদ্ধার করা গিয়েছে, যার ওজন ৬২.১০ লক্ষ টাকা।
নিজের নতুন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ, তথা অর্থ সংস্থান হতেই গত ৮ মার্চ থেকে গা ঢাকা দেয় রাহুল। প্রথমে দোকানের মালিক ভেবেছিলেন অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে। এ দিকে, সে গায়েব হওয়ার দিন কয়েক পড়েই হিসেবের গরমিল থেকে ধরা পড়ে চুরি । তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে অবশেষে ২৫ মার্চ পুলিশে অভিযোগ করেন দোকানের মালিক।
অন্য দিকে, চুরির পাশাপাশি এক দ্বৈত জীবনও কাটাচ্ছিল রাহুল। এক তরুণীর সঙ্গে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। চাকরি ছেড়ে ফেরার হওয়ার পাশাপাশি, বাড়ি থেকেও গা ঢাকা দেয়। স্বামীর সঙ্গে কিছুতেই যোগাযোগ করতে না পেরে গত ১৫ মার্চ পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর স্ত্রী।
একই লোকের নামে দু’জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়ে ঘোরতর তদন্তে নামে পুলিশ। তার পরেই ধরা পড়ে ওই যুবক। পুলিশের কাছে খবর ছিল, ঠাণের মীরা রোডে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসবে সে। সেই মতো সাদা পোশাকের পুলিশ অপেক্ষা করছিল এলাকায়। রাহুল এলাকায় পা রাখতেই গ্রেফতার করা হয় তাকে।
তদন্ত জানা গিয়েছে, গয়না নিয়ে প্রথমে সে মুম্বই গিয়েছিল। সেখান থেকে ইন্দোর, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে সে। বিপুল বিলাসিতায় জীবন কাটায়। পাঁচ তারা হোটেল, বিভিন্ন রেস্তরাঁ ইত্যাদিতে টাকা খরচ করে। তার পরে সম্ভবত প্রেমিকার টানেই ফিরে
আসে ঠাণে। ওই তরুণীও এই চুরির সঙ্গে যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
একা একা বিলাসী জীবন কাটাতে মন চায়নি রাহুলের, প্রেমিকাকেও সওগাত দিতে চেয়েছিল। প্রেমের টানেই এখন সে গরাদের ও পারে।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy