Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Haryana

‘...খুনও করতে পারব না!’ করণী সেনা-প্রধানের মন্তব্যে বিতর্ক

কিছু দিন আগেই ওষুধ কিনতে বেরিয়ে ২৭ বছর বয়সি মুসলিম যুবক আসিফ ও তাঁর তুতো ভাই রশিদ গণপিটুনির শিকার হন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
গুরুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২১ ০৬:৪৩
Share: Save:

‘‘আমরা মুসলমানদের খুনও করতে পারব না!’’ এমনই চাঞ্চল্যকর বক্তব্য উঠে এসেছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার এক মহাপঞ্চায়েতে করণী সেনা প্রধান সূরজপাল অমুর বক্তৃতায়। সেই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমেও।

কিছু দিন আগেই ওষুধ কিনতে বেরিয়ে ২৭ বছর বয়সি মুসলিম যুবক আসিফ ও তাঁর তুতো ভাই রশিদ গণপিটুনির শিকার হন। রশিদ পালিয়ে বাঁচলেও প্রবল মারধরের জেরে মৃত্যু হয় আসিফের। রশিদ পরে জানান, তাঁদের জয় শ্রীরাম বলতে জোর করা হয়। এমনকি মুসলিমদের খুন করার কথাও বলানোর চেষ্টা করা হয়। আসিফের পরিবার গণপিটুনির অভিযোগ জানালেও পুলিশের বক্তব্য, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই খুন করা হয় আসিফকে। ১৪ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। এদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত পটওয়ারি, আডবাণী-সহ পাঁচ জনের বিজেপি কিংবা আরএসএস যোগ রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই অবশ্য পলাতক পটওয়ারি, আডবাণী, নাথুরা।

সেই অভিযুক্তদের নির্দোষ ঘোষণা করে মুক্তির দাবি জানাতে ৩০ মে ইন্দ্রি গ্রামের সঙ্গম স্কুলে বেলা ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়। কোভিডের বিধিনিষেধের মধ্যেও মনোহরলাল খট্টরের রাজ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়। হরিয়ানার পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত ছিলেন দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানেরও বহু মানুষ। প্রশ্ন উঠছে, অতিমারি মোকাবিলায় যেখানে ১৪৪ ধারা কার্যকর রয়েছে, সেখানে ওই বিপুল জমায়েতের অনুমতি কী ভাবে দিল প্রশাসন? যদি ধরেও নেওয়া যায়, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এই বিপুল জমায়েতের আয়োজন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রেও খট্টর প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

মহাপঞ্চায়েত থেকে করণী সেনা প্রধান ঘোষণা করেন, আসিফের হত্যায় ধৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এই দাবি নিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে গঠন করা হয় ১০১ জনের কমিটিও। সভায় অমু বলেন, ‘‘পটওয়ারি কিংবা আডবাণী নয়, নিজের কার্য়কলাপের জেরেই খুন হয়েছে আসিফ।’’ প্রসঙ্গত, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন করণী সেনার কার্যকলাপ বহু রাজ্যেই প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ। এই সংগঠনটি আবার নিজেদের বিজেপি এব‌ং সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি করে। এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য শোনা গিয়েছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বক্তৃতায়। ওই দিন সভায় ছিলেন আর এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ভারতমাতা বাহিনীর প্রধান দীনেশ ঠাকুর। তিনিও অভিযুক্তদের মুক্তির দাবি জানান।

হরিয়ানার মুসলিম রক্ষা দলের (এমআরএল) সভাপতি তারেক আলি মিও গত মঙ্গলবার ওই মহাপঞ্চায়েতের আয়োজক এবং বক্তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। তারেকের অভিযোগ, মহাপঞ্চায়েতে আইনভঙ্গ, বিদ্বেষ তৈরি, দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। এফআইআরে রয়েছে ইন্দ্রি গ্রামের সরপঞ্চ, করণী সেনা প্রধান-সহ অনেকের নাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োর ভিত্তিতে ওই মহাপঞ্চায়েতের আয়োজক ও বক্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন আসিফের তুতো ভাই ইশা খানও।

তারেকের কথায়, ‘‘এ ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির অন্তরায়।’’ এর পাশাপাশি আসিফ খুনে পলাতক অভিযুক্তদেরও অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারেক।

অন্য বিষয়গুলি:

Haryana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy