বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে এ ভাবে চিতা-সাফল্য এবং জি-২০ অধিবেশন জুড়ে যাওয়ার বিষয়ে রেলকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ছবি: পিটিআই।
দ্রুতগামী ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে ঢিল-বিতর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল। তবে বুধবার বাংলার রেলপথে পা বা চাকা রাখা নতুন বন্দে ভারত ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। রেল মন্ত্রক তথা কেন্দ্রের অভিযোগ ছিল, কলকাতা-নিউ জলপাইগুড়ি রেলপথে প্রথম বন্দে ভারতের কামরায় উড়ে আসা পাথর আদতে রাজ্য সরকারের প্ররোচনা-প্রসূত। আর এখন বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, নতুন বন্দে ভারতে সিংহের জায়গা কাটছাঁট করে ধাবমান চিতাকে জায়গা করে দেওয়াটা আসলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রচারের মোহিনী রথ! বিরোধীদের অনেকেই এতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফায়দা তোলার চেষ্টা দেখতে পাচ্ছেন।
নতুন বন্দে ভারতের ইঞ্জিনের সামনে জ্বলজ্বল করছে সাম্প্রতিক কালে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া তিন কর্মকাণ্ড। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ট্রেনের গুরুত্ব বোঝাতে বছর কয়েক আগের সিংহের ছবি দেওয়া ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রতীক কিছুটা ছেঁটে খাঁজকাটা চাকার সঙ্গে এ বার জুড়ে দেওয়া হয়েছে ধাবমান চিতাকে। দেশের মাটিতে চিতা ফিরিয়ে আনার সরকারি তৎপরতার বিষয়টি সাম্প্রতিক কালে প্রচারের মাপকাঠিতে শীর্ষে আছে। বন্দে ভারতের গায়ে সেই ছুটন্ত চিতাকে দেখা যাচ্ছে জি-২০ অধিবেশনের গোলকের আধারে। চলতি বছরের জি-২০ অধিবেশনে ভারতের সভাপতিত্ব করার বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের নেতৃত্বে উঠে আসার দ্যোতক হিসেবে তুলে ধরতে প্রথম থেকেই প্রচার চালিয়েছে আসছে দিল্লি। সব বন্দে ভারতের উদ্বোধনেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফিতে কেটে আসছেন এবং দেশের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সেটাকে বড় মাপের সাফল্য হিসেবেই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে বলে বিরোধীদের দাবি। বরোধী দলগুলি কটাক্ষ করে বলছে, সেই সাফল্যের সঙ্গে এ বার দেশের বনাঞ্চলে বিলুপ্ত চিতার পুনরাবির্ভাব ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে-সাফল্য দাবি করছে, বন্দে ভারতের গায়েও তার দাগ রাখতে চাইছে রেল মন্ত্রক!
এই বিষয়ে বিতর্ক কম নেই। কারণ, ভারতে ১৯৫২ সালে যে-চিতা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তা আদতে এশীয় চিতা। আর নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যে-চিতা কুনোর অভয়ারণ্যে আনা হয়েছে, তার সঙ্গে এশীয় চিতার জিনগত সাদৃশ্য আদৌ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে এ ভাবে চিতা-সাফল্য এবং জি-২০ অধিবেশন জুড়ে যাওয়ার বিষয়ে রেলকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বিষয়টি প্রতীকী বলে মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হয়েছেন তাঁরা। আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, দেশের সব ‘সাফল্য’ই জাতীয়তা বোধের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা অর্থহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy