ছবি: রয়টার্স।
ক্ষোভ ছিল তীব্র। মঙ্গলবার যেন তাতে ঘি পড়ল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বয়ানে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এ দিন স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, জামিয়া-কাণ্ডে যে ১০ জন গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই বহিরাগত এবং কেউই ছাত্র নন। ঝামেলা পাকানোর পিছনেও অবদান মূলত বহিরাগতদের। যা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খানের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে ক্যাম্পাসের মধ্যে লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করা পড়ুয়াদেরও পুলিশ ছাড় দিল না কেন? কোন নিয়মে কর্তৃপক্ষকে কিছু না জানিয়ে তারা ঢুকল?’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন তাঁরা।
সন্ধ্যেয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অবশ্য দাবি, পুলিশের দিকে পাথর উড়ে আসছিল ক্যাম্পাসের মধ্যে থেকেও। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘প্রতিবাদ যদি হিংসার চেহারা নেয়, তখন পুলিশ চুপ থাকতে পারে? সে ক্ষেত্রে কর্তব্যের গাফিলতির অভিযোগ উঠবে না?’’ সেইসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, দেশের তিনশোর বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র চারটিতে হিংসাত্মক বিক্ষোভকে বড় করে দেখানো হচ্ছে। ওয়াসিম বলছেন, ‘‘যদি জামিয়ার কোনও পড়ুয়া হিংসাত্মক আন্দোলনে শামিল হয়ে থাকে, আমরা তার সাজা পাওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু ক্যাম্পাসে ঢুকে লাঠি চালানোর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিলে পুলিশ তাঁদের সঙ্গে পেত এবং পড়ুয়াদের ভিড় থেকে বহিরাগতদের আলাদা করা সহজ হত।’’
আরও পড়ুন: জামিয়া-কাণ্ডে ক্ষুব্ধ কাশ্মীরও
দু’মাস আগে পড়ুয়ারা উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখার সময়ে যে দিল্লি পুলিশকে ডেকেও পাওয়া যায়নি, তারা হঠাৎ আগ্রাসী ভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ল কেন, সেই প্রশ্নও তুলছেন তিনি। অনেক অধ্যাপকের অভিযোগ, জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কিংবা আশপাশের তল্লাটে যে কোনও গোলমালের দায় বর্তায় এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে।
তাঁদের প্রশ্ন, ক্যাম্পাসের বাইরে ৩০-৩৫ হাজার লোকের জমায়েতে হঠাৎ হিংসার দায় জামিয়ার পড়ুয়ারা বহন করবেন কেন? আর এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘এ কি দেশের মাটিতে মোদী সরকারের সার্জিকাল স্ট্রাইক।’’
রাতে আবার দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, জামিয়া এলাকায় হিংসার ঘটনার জন্য ছ’জনের নামে এফআইআর করেছে তারা। ওই ৬ জনের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক আসিফ খান, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা আশু খান, মুস্তাফা, হায়দর, ছাত্র সংগঠন অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইসা)-এর সদস্য চন্দন কুমার, এসআইও সদস্য আসিফ তানহা এবং সিওয়াইএসএস সদস্য কাসিম উসমানি। এর পর আইসা-র তরফে জানানো হয়, ওই ছাত্ররা সকলেই জামিয়া মিলিয়ার এবং স্রেফ আন্দোলন দমিয়ে দিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে এফআই আর করা হয়েছে এবং সংগঠনের নেতা আজাজ দাবি করেন, এই তিন জনের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এ দিন এ দাবিও করা হয়েছে, যে তিন জন গুলি খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি বলে অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে এক জনের ক্ষত গুলির নয়। তা হয়েছে অন্য কিছু থেকে। আর বাকি দু’জনের ক্ষত পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রকের তরফে এ দিন বলা হয়, জামিয়ার ওই এলাকা থেকে কার্তুজের ফাঁকা খোল পাওয়া গেলেও পুলিশ গুলি চালায়নি। তবে ওই খোল কোথা থেকে এল, তার তদন্ত হচ্ছে। এক পড়ুয়ার কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ লাইব্রেরির বদ্ধ হলের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে তাক করে গুলি ছুড়েছিল। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহমুদ বলছেন, পুলিশের মারে কোনও পড়ুয়ার দু’হাত ভেঙেছে, কারও পা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy