এসজিপিসি-র বক্তব্য, শুধুমাত্র রাজনীতির জন্যই মোদী সরকার এই বাল দিবসের আয়োজন করেছে। ফাইল চিত্র।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ দিল্লির মেজর ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে ‘বীর বাল দিবস’ অনুষ্ঠানে শামিল হয়ে শিখ আবেগের জোয়ারে ঢেউ তুলতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সেই ঢেউয়ে লেগে রইল বিতর্কের ছিটেও।
শ্রী গুরু গোবিন্দ সিংহের সন্তান বাবা জোরাওয়ার সিংহ ও বাবা ফতে সিংহের মহাপরাক্রমকে স্মরণ করেই এই বিশেষ দিবস পালিত হচ্ছে দেশ জুড়ে। নরেন্দ্র মোদী এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে টুইটে লেখেন, “বীর বাল দিবস উপলক্ষে আমরা সাহেবজাদা ও মাতা গুজরিজির সাহসকে স্মরণ করি। আমরা স্মরণ করি গুরু গোবিন্দ সিংহের সাহসকেও। এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেবেশিখ গুরুদের আত্মবলিদানএবং দেশের সম্মান রক্ষায় তাঁদের অবদানের কাহিনি।”
এই বছরের গোড়ায় পঞ্জাব নির্বাচনের দিনক্ষণ স্থির হয়ে যাওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহের পুত্র বা ‘সাহিবজ়াদে’-দের সাহসকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর ২৬ ডিসেম্বর ‘বীর বাল দিবস’ হিসেবে পালিত হবে। এই ঘোষণার ঠিক আগে, পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটের মুখে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার পরেও পঞ্জাবে ভোটের জন্য প্রথম বার প্রচারে গিয়ে কৃষক বিক্ষোভের মুখে গাড়ি ঘুরিয়ে দিল্লি ফিরতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। এই আবহেই জন্ম নিয়েছিল বীর বাল দিবসের ধারণা।
কিন্তু এই উদ্যাপনকে ঘিরে বিতর্ক রয়েই গিয়েছে। এই অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে, অর্থাৎ রবিবার শিরোমণি গুরদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি) প্রধান হরজিন্দর সিংহ ধামি শিখ সম্প্রদায়কে ডাক দিয়েছিলেন, এই দিনটিকে বাল দিবস হিসাবে পালন না করে ‘সাহিবজ়াদে শাহদাত দিবস’ হিসাবে তুলে ধরতে। তাঁর কথায়, সাহিবজ়াদে-দের শহিদ দিবসকে ‘বাল দিবস’ হিসাবে তুলে ধরার যে কৌশলকেন্দ্র নিয়েছে তা ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। তা বলিদানকে খাটো করে দেখানোর চক্রান্ত। ধামি বলেন, ‘‘সরকার যদি প্রকৃত অর্থেই সাহিবজ়াদে’দের সম্মান জানাতে চায়, তাকে শহিদ দিবস হিসাবে পালন করতে সমস্যা কী?’’
এসজিপিসি-র বক্তব্য, শুধুমাত্র রাজনীতির জন্যই মোদী সরকার এই বাল দিবসের আয়োজন করেছে। তারা নাম পরিবর্তনের দাবি নিয়ে সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছে, কিন্তু অভিযোগ, তাতে কর্ণপাতকরেনি কেন্দ্র।
রাজনীতিবিদরা বলছেন, নরেন্দ্র মোদী এই ঘোষণা করে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করেছেন। এক দিকে, তিনি শিখদের ভাবাবেগ ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন। অন্য দিকে, উস্কে দিতে চেয়েছেন ধর্মীয় ‘সংঘাতের স্মৃতি’। কারণ, সাহিবজ়াদে হিসেবে অভিহিত শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহের চার ছেলেই মুঘলদের হাতে নিহত হন।
এ বার এই দিনটিকেই ‘বীর বাল দিবস’ হিসেবে পালনের কথা ঘোষণা করে মোদী মুঘলদের ইসলাম ধর্ম চাপিয়ে দেওয়ার ইতিহাস প্রতিবছর স্মরণ করিয়ে দেওয়ারব্যবস্থা করলেন বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা। অন্য দিকে, পঞ্জাব আপের হাতে চলে যাওয়ায়, সেই রাজ্যেও বিজেপির শক্তি পুনরুদ্ধারেরপ্রশ্ন রয়েছে।
এর আগে অকালি দলের সঙ্গে জোটই পঞ্জাবে বিজেপির প্রধান শক্তি ছিল। কিন্তু তিন কৃষি আইনের বিরোধিতা করে অকালিরা এনডিএ ত্যাগ করায় ধাক্কা খাওয়া বিজেপি চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে শিখ আবেগে ঢেউ তুলতে চাইছে। এতে হিতে বিপরীত হবে কি না, সেই প্রশ্নও কিন্তু উঠে পড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy