ফাইল চিত্র।
এনডিএ সরকারের নীতীশ কুমার তখন রেলমন্ত্রী। লালুপ্রসাদ-রাবড়ী তখন বিহারের শেষ কথা। বিহারের দুই ভূমিপুত্র নীতীশ-লালুর অহি-নকুল সম্পর্ক দু’দশক পরেও যে মসৃণ হয়েছে তা নয়। তারই মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার লালুপ্রসাদের উত্তরসূরি তেজস্বীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন নীতীশ কুমার। বিজেপি শিবিরের দাবি, দুই প্রজন্মের দুই নেতা, বিহারের রাজনীতিতে যারা চাচা-ভাতিজা নামে পরিচিত সেই তেজস্বী ও নীতীশের আজকের এই জোট প্রকৃতপক্ষে স্বার্থের সংযোগ ছাড়া কিছু নয়। এই সদ্ভাব কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে তা নিয়ে কটাক্ষ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
তবু আপাতত মহারাষ্ট্রে তিক্ত অভিজ্ঞতার পরে নীতীশ-তেজস্বীর ‘অনিশ্চিত’ রসায়নেই আস্থা রাখতে চাইছে কোণঠাসা হয়ে যাওয়া কংগ্রেস। ২০২৪ সালের ভোটের আগে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির একচেটিয়া দাপট না কমাতে পারলে লোকসভায় বিরোধীদের আসন বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। মহারাষ্ট্রে সরকার পড়ে যাওয়ার পরে বিহারে হঠাৎই বিজেপিকে হটিয়ে সরকার গড়ার সুযোগ আসায় স্বভাবতই উজ্জীবিত কংগ্রেস নেতৃত্ব। দল মনে করছে, বিহারে সরকার গঠন নিঃসন্দেহে সামগ্রিক ভাবে দলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে। কংগ্রেস শিবির ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে বিহারে তাদের লক্ষ্যই হবে নীতীশ ও তেজস্বী-এই দুই প্রজন্মের মধ্যে সেতু অক্ষত রাখতে অতন্দ্র পাহারা দেওয়া।
বিহার কাণ্ডে আচমকা পট পরিবর্তনের পরে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ‘দুশমন’-এর সঙ্গে যে দোস্তি হয়েছে তার মেয়াদ কত দিন! বিশেষত অতীতে এক বার নীতীশ আরজেডি-র সঙ্গে মহাজোট করে হাত পুড়িয়েছেন। ২০১৫ সালে সরকার গঠনের কুড়ি মাস পরেই আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে ওঠা একের পর এক দুর্নীতির নজির দেখিয়ে সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নীতীশ। হাত ধরেন বিজেপির। যদিওসূত্রের দাবি, বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর এক মাসের মধ্যেই তিনি যে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁত করে স্বস্তিতে নেই তা কার্যত মেনে নিয়ে লালু-ঘরণী রাবড়ীর কাছে জোট ভাঙার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে নিজেকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অনেকাংশেই সক্ষম হয়েছেন তেজস্বী। বিহারে তেজস্বীর নেতৃত্বে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে পরিণত হয়েছে আরজেডি।
ঘনিষ্ঠ শিবিরে নীতীশও স্বীকার করে নিয়েছেন তেজস্বী আগের চেয়ে অনেক পরিণত হয়ে উঠেছেন। তরুণ নেতাদের মধ্যে তিনি যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিবান। সে কারণেই এ যাত্রায় তেজস্বীকে মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর দেওয়ার বিষয়ে ভাবছেন নীতীশ। অন্য দিকে চাচা নীতীশকে এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে তেজস্বীকেও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এ ধরনের ভয়হীন সিদ্ধান্ত নীতীশ কুমারই নিতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy