Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Kapil Sibal

নেতাহীন কংগ্রেস বিরোধী দল হিসেবে অকেজো, ফের তোপ সিব্বলের

কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি নিয়ে সরব হলেওষ গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার অভিপ্রায় তাঁর নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সিবল। 

ফের দলীয় সমস্যা নিয়ে সরব কপিল সিবল।

ফের দলীয় সমস্যা নিয়ে সরব কপিল সিবল।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ১৫:১৫
Share: Save:

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নেতাহীন দল। তাই বিজেপির প্রতিপক্ষ হিসেবে মাথা তোলার মতো অবস্থা নেই তাঁরা। মন্তব্য প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের। তবে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি নিয়ে সরব হলেওষ গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার অভিপ্রায় তাঁর নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সিবল।

সদ্যসমাপ্ত বিহার বিধানসভা এবং একাধিক রাজ্যের উপনির্বাচনে শোচনীয় ফল করেছে কংগ্রেস। তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই দলের কাছে আত্মসমীক্ষার আর্জি জানিয়ে আসছেন সিব্বল। তা নিয়ে কংগ্রেসর নেতৃত্বের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে।

কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় সিব্বল। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘১৮ মাস হয়ে গেল পূর্ণসময়ের সভাপতি নেই দলে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে কার্যকরী প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবে দল। একের পর এক জায়গায় হার হচ্ছে। অথচ তা নিয়ে আলোচনার অবকাশই নেই দলে।’’

আরও পড়ুন: পাহাড়ে রাজ্যপালের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠকে বিরোধী দলনেতা মান্নান

একাধিক রাজ্যে দলের ভরাডুবির প্রসঙ্গ টেনে সিব্বল বলেন, ‘‘গুজরাতে ৮টি আসনেই হেরেছি আমরা। অথচ ওই সবক’টি আসনই কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতাদের দখলে ছিল। সেখানে ৬৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশে বিদ্রোহীদের ছেড়ে যাওয়া ২৮টি আসনের মধ্যে মাত্র ৮টি ধরে রাখতে পেরেছি আমরা। বিজেপি-র সঙ্গে সামনাসামনি লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিরোধী দল হিসেবে কার্যকরীই নয় কংগ্রেস। কোথাও না কোথাও গলদ তো রয়েইছে। কিছু একটা তো করতেই হবে।’’

দলের নেতৃত্ব এবং পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে এর আগে অগস্ট মাসে দলের অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি সনিয়া গাঁধীকে চিঠি দেন সিব্বল, গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, শশী তারুরের মতো ২৩ জন নেতা। সেই সময় রাহুল গাঁধীর সঙ্গে তাঁদের তরজা চরমে উঠেছিল তাঁদের। শোনা যায়, দলের কিছু নেতার সঙ্গে গোপনে বিজেপির আঁতাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাহুল।

সেই নিয়ে প্রকাশ্যে রাহুলের বিরুদ্ধে সরব হন সিব্বল-সহ দলের অনেক প্রবীণ নেতাই। পরে যদিও ‘ভুল বোঝাবুঝি’ থেকে সরে আসেন তিনি। তবে তখন থেকেই রাহুলের সঙ্গে একপ্রকার দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় তাঁদের। শোনা যায়, দলের নেতৃত্ব শুধুমাত্র গাঁধী পরিবারের হাতে বেঁধে রাখায় আপত্তি রয়েছে অনেকেরই। রাহুলের নেতৃত্ব এবং দলে তাঁর প্রভাব নিয়ে কি তা হলে তাঁরও আপত্তি রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে সিব্বল জানান, দলের অনেকেই রাহুলকে নেতা মানেন। কিন্তু এখানে এক জন ব্যক্তির ভাবমূর্তির বিষয় নয়। বরং রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে দেশকে বাঁচানোর প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে।

আরও পড়ুন: রাতভর আলোচনার পর শোভন-বৈশাখী নিয়ে ফের তাল কাটল সকালের এক ফোনে​

দলে এই মুহূ্র্তে কথা বলার জায়গা নেই বলেও অভিযোগ করেন সিব্বল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আজকাল বাড়ির বাইরে পা রাখতেও ভয় পান কংগ্রেস নেতারা। হাজার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁদের? জানতে চাওয়া হয়, দলের এমন অবস্থা হল কী করে? দলের প্রতি আগের মতো আবেগ রয়েছে কি না। দলে আমার ভাবাবেগও আঘাত পেয়েছে। তেমনই আহত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস কর্মী। কিন্তু তা নিয়ে আলোচনার জায়গা নেই। আমি কাউকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি না। আজ বললেই কাল সব কিছু পাল্টে যাবে না। ২০১৪-য় হেরেছি। ২০১৯-এও হেরেছি। অভ্যন্তরীণ নির্বাচনেও এ সমস্যা মেটার নয়। মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে আমাদের। কংগ্রেসের আদর্শ তুলে ধরতে হবে।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল। তার পর ওই বছর ১০ অগস্ট দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি নিযুক্ত হন সনিয়া। তার পর বার বার নির্বাচনের কথা উঠলেও, এখনও পর্যন্ত পূর্ণ সময়ের সভাপতি নির্বাচন করে উঠতে পারেনি কংগ্রেস। আগামী বছর জানুয়ারির মধ্যেই সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্বাচন হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE