Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Adhir Ranjan Chowdhury

Adhir Ranjan Chowdhury: অধীরকে কি সরাচ্ছে কংগ্রেস? তৃণমূল-সখ্য বাড়াতে লোকসভায় অন্য দলনেতা? জল্পনা তুঙ্গে

নীলবাড়ির লড়াইয়ে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতার প্রতি কোনও কড়া মনোভাব দেখাননি। কিন্তু অধীর তীব্র ভাষায় লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন।

অধীররঞ্জন চৌধুরী।

অধীররঞ্জন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ১৭:২২
Share: Save:

অধীররঞ্জন চৌধুরীকে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারেন সনিয়া গাঁধী, বড়সড় জল্পনা চলছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে। দু’সপ্তাহের মধ্যে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, তার আগেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সনিয়া গাঁধী। তবে বহরমপুরের সাংসদ অধীরের প্রতি কোনও বড় অসন্তোষ নয়, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূলের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়তেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত অধীরকে সরানো হতে পারে বলে বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর।

নয়ের দশকে মমতা কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গড়ার পরও তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলার নির্বাচনে একাধিক বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে কংগ্রেস। কিন্তু ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে কংগ্রেস মমতা মন্ত্রিসভা ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর থেকে দু’দলের রাস্তা আলাদা হয়ে যায়। এর পর থেকে বাংলায় মাটি হারাতে হারাতে নীলবাড়ির লড়াইয়ে একেবারে শূন্যে নেমে এসেছে কংগ্রেস। এর দায় অধীরের উপরই দিচ্ছেন দলের অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতার প্রতি যথেষ্ট নরম ছিলেন। মমতাকে আক্রমণ করার বদলে বিজেপি-কে হারানোর উপরই জোর দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ঠিক উল্টো রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায় অধীরকে। লাগাতার তৃণমূল নেত্রীকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে গিয়েছেন তিনি, যা কি না জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গে সেতুবন্ধনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের এখনও অনেকটা দেরি। কিন্তু সেই নির্বাচনকে মাথায় রেখে এখন থেকেই হিসেবনিকেশ কষতে শুরু করেছে সব রাজনৈতিক দল। বিজেপি-কে রুখতে বিরোধী জোটের জন্য এখন থেকেই সওয়াল করছেন অনেকে। বাংলার ভোটে বিজেপি-কে ধরাশায়ী করার পর দেশের বিজেপি-বিরোধী শক্তি এবং মুখ হিসেবে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারও কারও মতে, বাংলায় বিজেপি-কে পরাজিত করার পর বিজেপি বিরোধী জোটের এক নম্বর মুখ হিসেবে উঠে আসছেন মমতা । এমন পরিস্থিতিতে মমতার সঙ্গে অধীরের সঙ্ঘাত যাতে সম্ভাব্য আগামী সমীকরণে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, তার জন্যই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে আপাতত আঞ্চলিক রাজনীতিতেই বেঁধে রাখা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে দাবি করছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলি। তাদের যুক্তি, রাফাল কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ থেকে শুরু করে করোনা বিপর্যয়, বাদল অধিবেশনে একাধিক ইস্যু নিয়ে লোকসভায় বিজেপি-কে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা নিয়ে নামছে বিরোধী শিবির। অন্য দিকে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সঙ্ঘাতকে দিল্লিতে টেনে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক তৃণমূল। এ ব্যাপারে বিরোধী দলগুলিকে পাশে পেলে সুবিধা হবে তাদের। তাই সব দিক বিচার বিবেচনা করেই দু’তরফেই তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে খবর।

এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হলে অধীর বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই আমাদের।’’ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তা দলের হাইকম্যান্ডই নেবে। তবে দলে এক ব্যক্তি, এক পদের নিয়ম কার্যকর রয়েছে। তাই যে কোনও নেতাকেই দু’টি পদে থাকলে একটি পদ ছাড়তেই হবে।’’

এ ব্যাপারে তাদের কিছু জানা নেই এবং বলারও নেই বলে জানিয়েছে তৃণমূল। দলের এক মুখপাত্রের কথায়, বাদল অধিবেশনে কী কী বিষয় নিয়ে নামা হবে, কোন দলের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক রেখে চলা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দলের বৈঠকেই যা ঠিক হওয়ার হবে।

তবে দিল্লির রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর, ধনখড়ের অপসারণ চেয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করতে চলেছেন তাঁরা। তবে তাতে কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান দলের নেতারা। তাই কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গেও কথাবার্তা চালানে হচ্ছে, যাতে সংসদে অধিবেশন চলাকালীন সকলে মিলে কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টি করা যায়। ’২৪-এর নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেসও তাঁদের মন জয় করার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ।

অধীরকে সরানো হলে, কাকে লোকসভার দলনেতা করা হবে, এখনও পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, দলীয় নেতৃত্বের একাংশ রাহুল গাঁধীকেই লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের মতো অভিজ্ঞ নেতারা আবার তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশী তারুর এবং আনন্দপুর সাহিবের সাংসদ মণীশ তিওয়ারিকের মধ্যে একজনকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে দেখতে চান বলে দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। তার সপক্ষে দলের একাংশের যুক্তি, তারুর বা মণীশ বিরোধী দলনেতা হলে কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে রাহুলের প্রত্যাবর্তন সহজ হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy