বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি।
কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল।
আনন্দ শর্মার পরে এ বার আর এক বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি দাবি তুললেন, দলের সভাপতি নির্বাচনে যাঁরা ভোট দেবেন, সেই এআইসিসি প্রতিনিধিদের তালিকা প্রকাশ করা হোক। কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের গোষ্ঠী জি-২৩-র অন্যতম সদস্য মণীশের যুক্তি, যিনি সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাঁকে তো আগে থেকে জানতে হবে, ভোটারদের তালিকায় কারা রয়েছেন। পাড়ার ক্লাবের নির্বাচনেও এটুকু স্বচ্ছতা থাকে বলে কটাক্ষ করেছেন তিওয়ারি। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন পি চিদম্বরমের পুত্র, লোকসভার সাংসদ কার্তি চিদম্বরম।
কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, গান্ধী পরিবার নিজের একান্ত অনুগত কাউকে প্রার্থী করলে এমনিতেই বিক্ষুব্ধরা তাঁর বিরুদ্ধে শশী তারুরের মতো কাউকে প্রার্থী করার পরিকল্পনা করছেন। সেই সঙ্গে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও আগেভাগে প্রশ্ন তুলে রাখছেন। এর ফলে গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন প্রার্থী জিতে গেলেও তাঁর জয় নিয়ে পরে প্রশ্ন তোলার সুযোগ খোলা থাকছে।
এর আগে সভাপতি নির্বাচনের সূচি ঠিক করতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের বিক্ষুব্ধ নেতা আনন্দ শর্মা এআইসিসি-র প্রতিনিধিদের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রায় নয় হাজার প্রতিনিধির এই তালিকা তৈরি করতে কোনও বৈঠক হয়নি, নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। শর্মার আগেই গুলাম নবি আজাদ কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়ে সভাপতি নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে তকমা দেন। গান্ধী পরিবারের কেউ সভাপতি না হলেও তাঁদের ‘প্রক্সি’-কে শীর্ষ পদে বসানো হবে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আজাদ। গত কাল আনন্দ শর্মা দিল্লিতে গুলাম নবির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। আজ তিনি শিমলায় হিমাচল প্রদেশের ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানেছিলেন না।
এ দিকে তিওয়ারি সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভের স্বর আরও বাড়ালেন। জি-২৩ গোষ্ঠীর সদস্য না হলেও কার্তি চিদম্বরম তিওয়ারিকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁর মতে, “যে কোনও নির্বাচনেই ভোটারদের নির্দিষ্ট তালিকা প্রয়োজন। সেই তালিকা তৈরির প্রক্রিয়াও সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ হওয়া দরকার। ইচ্ছে মতো তৈরি ভোটার তালিকার কোনও মূল্য নেই।’’
মণীশ তিওয়ারির দাবি অবশ্য খারিজ করে দিচ্ছেন সাংগঠনিক নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা মধুসূদন মিস্ত্রি। তাঁর যুক্তি, যাঁরা সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়ন জমা দেবেন, তাঁদের হাতে প্রতিনিধিদের তালিকা তুলে দেওয়া হবে। তাঁর বক্তব্য, কোনও দলই নিজেদের প্রতিনিধিদের তালিকা প্রকাশ করে না। রাহুল-ঘনিষ্ঠ লোকসভার সাংসদ মাণিকম টেগোরের মন্তব্য, ‘‘সভাপতি নির্বাচনে যে কোনও প্রদেশকংগ্রেস কমিটির দশ জন সদস্য কারও নাম প্রস্তাব করতে পারেন। আমার সহকর্মীরা কেন নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন?”
তিওয়ারির পাল্টা যুক্তি, কারা ভোট দেবেন, তা না জানলে কেউ কী ভাবে নির্বাচনে লড়বেন? সভাপতি নির্বাচনে লড়তে হলে তো সেই ভোটারদের মধ্যে থেকেই ১০ জনকে নাম প্রস্তাব করতে হবে। ওই ১০ জন বৈধ ভোটার কি না, সেটা জানতেও ভোটার তালিকা দরকার। তাঁর অভিযোগ, সভাপতি নির্বাচনের সূচি ঘোষণা হলেও ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সূচি ঘোষণা হয়নি।
তাঁর বক্তব্য শুনে কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তিওয়ারি নিজে সভাপতি নির্বাচনে লড়ছেন না কেন?’’ এখনও পর্যন্ত সূত্রের খবর, গান্ধী পরিবারের একান্ত অনুগত কেউ প্রার্থী হলে শশী তারুর তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে পারেন। তবে তারুর কতখানি সমর্থন পাবেন, সেটা আগে বুঝে নিতে চাইছেন। জি-২৩-র সদস্য হলেও সমর্থন বুঝে নেওয়ার বিষয়ে তারুর নিজের মতো করে এগোতে চাইছেন। তবে তারুরের লড়ার সম্ভাবনা নিয়েকেরলের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরণ বলেছেন, তারুর যোগ্য ব্যক্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy