আদানি কাণ্ডের প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের বিক্ষোভ। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সংসদে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগে নোটিস দিল কংগ্রেস। বাজেট অধিবেশনের প্রথমার্ধে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “আমি বুঝতে পারি না নেহরুর পরিবারের উত্তরপুরুষেরা কেন তাঁর পদবি ব্যবহার করেন না?” কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপাল রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে নোটিস পাঠিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, মোদী রাজ্যসভায় নেহরু পরিবার, বিশেষত লোকসভার সাংসদ সনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সম্পর্কে ‘কটাক্ষের সুরে অমর্যাদাপূর্ণ, অপমানজনক ও মানহানিকর’ মন্তব্য করেছেন।
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনার সময়েই রাহুল গান্ধী লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী ও শিল্পপতি গৌতম আদানির মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিজেপি সাংসদেরা তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছিলেন। সংসদের নিয়মরক্ষা বা ‘প্রিভিলেজ’ কমিটিতে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজেরও দাবি তুলেছিলেন। যুক্তি ছিল, রাহুল প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘অসংসদীয়, বিভ্রান্তিকর’ কথা বলে দোষারোপ করেছেন। এখন আবার নিশিকান্ত দাবি তুলেছেন, বিদেশে গিয়ে দেশ ও সংসদ সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করার যে অভিযোগ রাহুলের বিরুদ্ধে উঠেছে, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হোক। সূত্রের খবর, রাহুলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ জমা পড়েছে তা খতিয়ে দেখতে এই মাসেই বৈঠকে বসবে ‘প্রিভিলেজ’ কমিটি এবং তাঁকে ডাকা হবে। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের রজনী পাটিল, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংহদের মতো বিরোধী সাংসদদের বিরুদ্ধেও নিয়মরক্ষা কমিটিতে অভিযোগ জমা পড়েছে। এ বার খোদ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ তুলে কংগ্রেস পাল্টা জবাব দিল।
বেণুগোপাল রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে লিখেছেন, নেহরুর পদবি কেন গান্ধীরা ব্যবহার করেন না, প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যই অযৌক্তিক। প্রধানমন্ত্রী জানেন, বাবার পদবি মেয়েরা বিয়ের পরে ব্যবহার করেন না। তা সত্ত্বেও তিনি কটাক্ষ করেছেন। এই মন্তব্যের সুরটাই ছিল নিন্দা করার। মোদী স্পষ্টতই সনিয়া, রাহুলের সাংসদ হিসেবে মর্যাদাহানি করেছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগে প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানিয়েছেন বেণুগোপাল।
কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, সংসদের বাইরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে (ইডি, সিবিআই) যেমন এক দিকে নিজেদের ‘শরিক’ করে নিয়েছে মোদী সরকার, অন্য দিকে সংসদের ভিতরে বিরোধীদের কোণঠাসা করার অস্ত্র হিসাবে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিসকে ব্যবহার করছে কেন্দ্র। বিজেপির কোনও সাংসদ বা মন্ত্রী সংসদীয় প্রথা বা আইন বহির্ভূত কাজ করলে তাদের কোনও ভাবেই নোটিস দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে তা চাপানো হচ্ছে বিরোধীদের উপরে।
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রুদ্ধদ্বার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের ‘তথ্য সুরক্ষা বিল’ সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন চেন্নাইয়ের একটি সভায়। নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। তবে বিরোধী সাংসদেরা ওয়েলে নামলে কিংবা তাঁরা একই বিষয়ে আলোচনার জন্য একাধিক নোটিস জমা দিলে অথবা অধিবেশনের ভিতরে ছবি তুললে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দেওয়াহয়ে থাকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy