আয়কর হানায় উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়। পঞ্চম দিনেও শেষ হয়নি তার গুনতি। রবিবার রাঁচীতে। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ধীরজ সাহুর বাড়ি, তাঁর পরিবারের সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত মদ কোম্পানি (বলদেও সাহু অ্যান্ড গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেড) এবং তাঁদের একাধিক অফিসে আয়কর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৯০ কোটিরও বেশি টাকা আয়কর বিভাগ উদ্ধার করেছে বলে জানা গিয়েছে। দেশে আয়কর হানায় এত বিপুল পরিমাণ অর্থ আগে কখনও উদ্ধার হয়নি বলেই সূত্রের খবর। আর এই বিষয়টি নিয়েই কংগ্রেসকে আক্রমণের ধার বাড়িয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের পাশাপাশি ওড়িশার বিজেডি নেতৃত্বকেও নিশানা করতে ছাড়েনি তারা।
এই আয়কর হানার দু’দিন পরেই বিষয়টি নিয়ে এক্স-হ্যান্ডলে মুখ খুলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে আক্রমণ শানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সুরেই বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপির নানা স্তরের নেতারা কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। নড্ডা এক্স-হ্যান্ডলে কংগ্রেস সাংসদের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘আপনাকে এবং আপনার নেতা রাহুল গান্ধী— উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে। এ’টি নতুন ভারত। এখানে রাজপরিবারের নামে জনগণকে শোষিত হতে দেওয়া হবে না।’’ একই সঙ্গে নড্ডা লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেস যদি দুর্নীতির গ্যারান্টি হয়, তবে মোদীজি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার গ্যারান্টি।’’
দলের রাজ্যসভার সাংসদের বাড়ি-অফিস থেকে এই বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধারের ঘটনায় তুমুল অস্বস্তিতে কংগ্রেস। দলের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ধীরজ সাহুর থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছেন। পাশাপাশি দলের তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, এত পরিমাণ টাকা জমা করার বিষয়টি ওই সাংসদকেই ব্যাখ্যা করতে হবে। ইতিমধ্যেই তাঁর কাছে জবাবদিহি চেয়েছে দল। কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে এক্স-হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘কংগ্রেস কোনও ভাবেই সাংসদ ধীরজ সাহুর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নয়। এক মাত্র তিনিই ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং তাঁর ব্যাখ্যা করা উচিত, কী ভাবে এই বিপুল পরিমাণ নগদ আয়কর কর্তৃপক্ষ তাঁর সম্পত্তি থেকে উদ্ধার করল।’ একই সুরে আর এক কংগ্রেস নেতা সুবোধ কান্ত সহায় বলেন, “আমরা বহু বছর ধরেই শুনে আসছি, ওঁরা মদের ব্যবসা চালান এবং বস্তা বস্তা টাকা উপায় করেন। কিন্তু তার পরেও ধীরজ সাহুর বাড়ি-অফিস থেকে যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। ধীরাজ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের এর উত্তর দিতে হবে।’’
ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেতা অবিনাশ পাণ্ডে রবিবার জানিয়েছেন, সাংসদ ধীরজ সাহুর কাছে বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তাঁকে জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, গোটা বিষয়টিই ধীরজ এবং তাঁর পরিবারের ব্যক্তিগত বিষয়। এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও রকম সম্পর্ক নেই।
কংগ্রেস বিষয়টি থেকে দূরত্ব বাড়ালেও ছাড়তে নারাজ বিজেপি। দলের এক নেতা শেহজাদ পুনাওয়ালা এ দিন ধীরজের একটি পুরনো টুইট তুলে ধরেন, যেখানে ধীরজ নোটবাতিলের সমালোচনা করেছেন। অমিত শাহ বলেছেন, “আমি বুঝি, কংগ্রেস কেন চুপ করে আছে। কারণ দুর্নীতি তাদের স্বভাবে রয়েছে। কিন্তু জেডিইউ, আরজেডি, ডিএমকে, এসপি, সকলেই চুপ। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানো নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রচার কেন চালানো হচ্ছে, তা বোঝাই যাচ্ছে।”
বিজেপি বিষয়টি নিয়ে ওড়িশার শাসক বিজেডি এবং মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককেও আক্রমণ করতে ছাড়েনি। তাদের অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসন ব্যর্থ বলেই এই বিপুল পরিমাণ টাকা জড়ো করতে পেরেছেন ধীরজ সাহু এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে বিজেডির দাবি, বিজেপি অকারণে তাদের দোষারোপ করছে। এমনিতে বিজেপির সঙ্গে বিজেডির যথেষ্ট সখ্য রয়েছে। সংসদের ভিতরে-বাইরেও বিজেডি বিজেপি-বিরোধী কোনও পদক্ষেপ করে মোদী সরকারকে সমস্যায় ফেলে না। কিন্তু এই অভিযোগ দু’দলের মধ্যে রাজ্যস্তরে কিছুটা দূরত্ব বাড়াবে বলেই মনে করছেন অনেকে। সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy