হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিজেপির কাছে হারের জেরে ‘একলা চলো’ নীতি থেকে সরার বার্তা দিল কংগ্রেস। আগামী লোকসভা ভোটে বিভিন্ন রাজ্যে সহযোগী দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতার লক্ষ্যে মঙ্গলবার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে দলের তরফে।
প্রাক্তন লোকসভা সাংসদ মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটিতে রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং এআইসিসির প্রাক্তন মুখপাত্র মোহন প্রকাশ রয়েছেন বলে কংগ্রেসের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ‘ইন্ডিয়া’র নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের দিনই এই পদক্ষেপ করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধী ছোট আঞ্চলিক দল, কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হওয়া দল এমনকি, বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদেরও মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভায় এক ছটাক ‘জায়গা’ দিতে চায়নি কংগ্রেস। ভোটপণ্ডিতদের একাংশের মতে, ফলাফলে সেই ‘প্রভাব’ পড়েছে। অনেক আসনেই ভোট কাটাকাটিতে বাজিমাত করেছে বিজেপি। বস্তুত, জোট রাজনীতিতে কংগ্রেসের ‘দাদাগিরির দিন শেষ’ বলেই হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যের ভোট বার্তা দিয়েছে। যে বার্তা বলছে, অন্তত হিন্দি বলয়ে ধর্ম ও জাতপাতভিত্তিক রাজনীতির আখড়ায় বিজেপির মোকাবিলা করা একার শক্তিতে কংগ্রেসের পক্ষে সম্ভব নয়। গত ৩ ডিসেম্বর গণনার দিনেই মমতা এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব কংগ্রেসের এই ‘দাদাগিরি’ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন।
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, ভোটগণনার প্রাথমিক প্রবণতায় বিপর্যয়ের আভাস পেয়েই ‘সহযোগী’ দলগুলির নেতাদের ফোন করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে। আগামী ৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে নিজের বাংলোয় ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডাকার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু মমতা, অখিলেশ, নীতীশ কুমারেরা তাতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন:
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, তিন রাজ্যে কংগ্রেসের হারের পর লোকসভা ভোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষিতে ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত আঞ্চলিক দলগুলি ‘সুবিধাজনক’ অবস্থানে রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ, বাংলায় মমতা, বিহারে লালুপ্রসাদ যাদব, নীতীশ, ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেন, তামিলনাড়ুতে এমকে স্ট্যালিনকে সুযোগ এনে দিয়েছে কংগ্রেসকে ‘চাপে’ রাখার। তৃণমূলের তরফে আগেই ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, লোকসভা ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ প্রার্থী দেওয়ার আলোচনা শুরু করার। কিন্তু সে সময় বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি কংগ্রেস।