স্ট্যালিন এবং উদয়নিধি। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে নয়া বিতর্কে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দল ডিএমকে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের পুত্র উদয়নিধি সনাতন ধর্মের আদর্শকে নিশ্চিহ্ন করার কথা বলার পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে পুরনো সহযোগী ডিএমকে-কে নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে নতুন করে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তার ইঙ্গিত সোমবার মিলেছে, দলের দুই নেতার ‘পরস্পরবিরোধী’ মন্তব্যেও।
স্ট্যালিন মন্ত্রিসভার সদস্য তথা জনপ্রিয় তামিল অভিনেতা উদয়নিধি শনিবার চেন্নাইয়ে লেখকদের একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলার এই অনুষ্ঠানে আমায় আমন্ত্রণ জানানোয় আমি উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানাই। সনাতন ধর্মের আদর্শের বিরোধিতা না বলে তাকে নিশ্চিহ্ন করার কথা বলায় অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানাই।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম কাজ হল বিরোধিতা নয়, সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলা। এই সনাতন প্রথা সামাজিক ন্যায় এবং সাম্যের বিরোধী।’’ তাঁর দাবি, কিছু জিনিস আছে, যার বিরোধিতা যথেষ্ট নয়, তা নিশ্চিহ্ন করা দরকার। যেমন করোনা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির বিরোধিতা নয়, তাদের নিশ্চিহ্ন করা দরকার, তেমনই সনাতন আদর্শকেও মুছে ফেলা দরকার।
প্রয়াত সিএন আন্নাদুরাই ১৯৪৯ সালে যে মূল আদর্শগুলিকে সামনে রেখে ডিএমকের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা হল দ্রাবিড় সংস্কৃতির রক্ষা এবং নাস্তিকতার অনুশীলন। অথচ আন্নাদুরাইয়ের উত্তরসূরি করুণানিধির জমানাতেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র শরিক হয়েছিল ডিএমকে। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে অধুনা ‘ইন্ডিয়া’র সদস্য উদয়নিধির বক্তব্যকে ‘ছাড়’ দিতে নারাজ বিজেপি এবং তার সহযোগী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। গোটা বিষয়টিকে হিন্দু ধর্মের উপরে আঘাত বলে অভিযোগ তুলে প্রচারে নেমেছে তারা। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরাসরি ইন্ডিয়া-জোটকে হিন্দু-বিরোধী বলে দাগিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে উদয়নিধির বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি, তাঁকে গ্রেফতারির দাবিও উঠেছে। যদিও উদয়নিধির দাবি, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের অন্দরে স্ট্যালিন-পুত্রকে নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ্যে এসেছে। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক তথা ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির সদস্য কেসি ভেনুগোপাল জানিয়েছেন, কংগ্রেস সব ধর্মকে সম্মান করে। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রতিটি রাজনৈতিক দলের তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে এবং কংগ্রেস সকলের বিশ্বাসকে সম্মান করে।’’ কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেন, “আমি উদয়নিধির বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।” অন্য দিকে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ছেলে প্রিয়ঙ্ক কার্যত স্ট্যালিনের মত সমর্থন করে বলেন, ‘‘যে ধর্ম সমতার অধিকার প্রচার করে না, মনুষ্যত্বের মর্যাদা নিশ্চিত করে না, আমার মতে সে ধর্ম নয়। যে ধর্ম সমান অধিকার দেয় না, তা আসলে রোগের মতোই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy