Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi

‘এক দেশ এক ভোট’ বিতর্কে সুর চড়ালেন রাহুল-কেজরীওয়াল

‘এক দেশ, এক ভোট’ (ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন) নীতি রূপায়ণের কমিটিতে কারা কারা থাকছেন, শনিবার সেই নামের তালিকা প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।

Rahul Gandhi.

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৬
Share: Save:

‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে বিতর্কের আবহেই বিরোধিতায় সরব হল কংগ্রেস। রবিবার রাহুল ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর ধারণাকে দেশের ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন। ‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত সমস্ত দিক পর্যালোচনা করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার রাতে এই কমিটির সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। রবিবার এই বিষয়ে প্রথম বার মুখ খুললেন রাহুল গান্ধী। আজ সার্বিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় সুর চড়িয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। মোদী সরকারকে বিষয়টি নিয়ে বিদ্ধ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়ালও।

এরই মধ্যে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের আগে ‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে গটিত কমিটির ব্যাপারে আলোচনা করতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বাসভবনে বৈঠকে বসবেন বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের সদসীয় দলের নেতারা।

রবিবার দুপুরে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে রাহুল সংবিধানের লাইন উদ্ধৃত করে লেখেন, “ইন্ডিয়া অর্থাৎ ভারত হচ্ছে রাজ্যগুলির সমষ্টি।” তার পরই ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর ধারণাকে আক্রমণ করে রাহুল লেখেন, “এই ধারণা ভারতের যুক্তরাষ্ট্র এবং রাজ্যগুলির উপরে আঘাত।”

‘এক দেশ, এক ভোট’ (ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন) নীতি রূপায়ণের কমিটিতে কারা কারা থাকছেন, শনিবার সেই নামের তালিকা প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। আগেই জানা গিয়েছিল, কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ ছাড়া, আরও সাত জন সদস্যকে নিয়ে কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, গুলাম নবি আজাদ, এনকে সিংহ, সুভাষ সি কাশ্যপ, হরিশ সালভে এবং সঞ্জয় কোঠারিকে। অর্থাৎ, কোবিন্দকে নিয়ে মোট আট জন সদস্য থাকার কথা ছিল ‘এক দেশ এক ভোট’ রূপায়ণ কমিটিতে। শনিবার রাতে এই কমিটিতে থাকতে পারবেন না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহকে চিঠি দেন অধীর। এই কমিটি গঠনকে কেন্দ্রের ‘চোখে ধুলো দেওয়ার’ চেষ্টা বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। আজ কেজরীওয়ালের বক্তব্য, “বিজেপি একটা নতুন চমকদার বিষয় ‘এক দেশ এক ভোট’ আমদানি করেছে। নির্বাচন একটা হোক বা দশটা বা বারোটা, আমরা কি পাব? আমরা চাই ‘এক দেশ এক শিক্ষা’। প্রত্যেকে যেন একই রকম শিক্ষা পায়। আমরা ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ চাই না।”

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের কথায়, “মোদী চাইছেন গণতান্ত্রিক ভারতকে ধীর ধীরে স্বৈরতন্ত্রে পরিণত করতে। ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত কমিটি গঠন দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। এটা করতে ভারতীয় সংবিধানে অন্তত পাঁচটি সংশোধন করতে হবে। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের বিশাল বদল করতে হবে।” যে প্রশ্নগুলি খড়্গে তুলেছেন, তার মধ্যে একটি হল, জাতীয় এবং রাজ্যস্তরে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই এই বিশাল পরিবর্তন কি একতরফা ভাবে করা যায়? রাজ্যগুলি এবং তাদের নির্বাচিত সরকারের মত ছাড়াই কি তা করা সম্ভব? এই বিষয়টি এর আগে খতিয়ে দেখে তিনটি কমিটি নাকচ করে দিয়েছিল। এখন দেখতে হবে চতুর্থ কমিটি যে তৈরি করা হল, আগে থেকেই তার উপর কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া রয়েছে কিনা।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, “এক দেশ এক নির্বাচনের বিষয়টি রাজনৈতিক-আইনি বিষয়। বেশিটাই রাজনৈতিক। সমস্ত রাজনৈতিক দলের এই বিষয়ে সঙ্গে রাখার প্রশ্ন রয়েছে। ৮ সদস্যের কমিটি গঠনের সময় তা করা হয়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress AAP Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE