Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
PM Narendra Modi

শরিকদের সামলে সরকার গড়েছেন মোদী, এ বার কী? নিজেদের ভূমিকা নিয়ে নয়া কৌশল-চিন্তা বিরোধীদের

কংগ্রেসের তরফে এখন বলা হচ্ছে, সরকার গড়ার প্রয়াস নিয়ে খুব বেশি প্রকাশ্যে বলা হবে না। বরং অপেক্ষা করা হবে, আসন্ন মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, দিল্লি এবং হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায় ও প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৪ ০৭:৫৯
Share: Save:

জোট শরিকদের সঙ্গে যাবতীয় বোঝাপড়ার পরে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রক বণ্টন করে ফেলেছেন। নিজেদের কাজও শুরু করে দিয়েছেন মন্ত্রীরা। প্রশ্ন উঠছে, এ বার বিরোধীদের কী ভূমিকা হবে?

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস প্রাথমিক ভাবে সাময়িক উত্তেজনার পরিবেশে শরদ পওয়ারের মাধ্যমে টিডিপি-র চন্দ্রবাবু নায়ডু অথবা জেডিইউ-র নীতীশ কুমার শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল, কোনও ভাবে সরকার গঠনের দাবি করা যায় কি না, তা যাচাই করা। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা স্পষ্ট হতে মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝতে পারেন, জনাদেশকে মেনে নিয়ে তাঁদের বিরোধী আসনে বসা উচিত এবং যথোপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করাটাই বিচক্ষণতা হবে।

কংগ্রেসের তরফে এখন বলা হচ্ছে, সরকার গড়ার প্রয়াস নিয়ে খুব বেশি প্রকাশ্যে বলা হবে না। বরং অপেক্ষা করা হবে, আসন্ন মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, দিল্লি এবং হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। চলতি বছরের শেষে মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড ও হরিয়ানায় নির্বাচন। দিল্লিতে ভোট হওয়ার কথা আগামী বছরের শুরুতে।

কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেল গত সপ্তাহে বলেছেন, আগামী ছ’মাস থেকে এক বছরের মধ্যে দেশে অন্তর্বর্তী নির্বাচন হবে। এই সরকার পড়ে যাবে। অর্থাৎ কংগ্রেসের হিসেব, আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে কংগ্রেস তথা বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ ভাল ফল করলে মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার প্রবল চাপে পড়বে। তখনই ঝাঁপিয়ে পড়ার সেরা সময়। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে যদি মহাবিকাশ আঘাড়ী ঝড় তুলতে পারে (যার সম্ভাবনা যথেষ্ট বলেই মনে করছে কংগ্রেস, উদ্ধবপন্থী শিবসেনা, শরদ পওয়ার পন্থী এনসিপি এবং তৃণমূল), তা হলে ‘ইন্ডিয়া’ পায়ের নীচে শক্ত জমি পাবে।

চলতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহে সংসদ অধিবেশন বসলে সেখানে আস্থা ভোটে সরকার নিজেদের সংখ্যা সহজেই প্রমাণ করে ফেলবে। সংসদীয় আইন অনুযায়ী, ছ’মাসের মধ্যে আর আস্থা ভোট হবে না। ফলে অন্তত ছ’মাসের জন্য যেমন সরকারও নিশ্চিন্ত, তেমনই কংগ্রেসও মনে করছে যথেষ্ট সময় পাওয়া যাচ্ছে তৈরি হওয়ার। এর মধ্যে বিজেপির উপরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব নিয়ে মহারাষ্ট্রের অজিত পওয়ার, একনাথ শিন্দের যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তাকে আরও উস্কে দেওয়া যেতে পারে।

‘ইন্ডিয়া’র আর এক শরিক তৃণমূলের এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনার সামান্য ফারাক রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল আগেই জানিয়েছিল, তারা সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকতে চায় না, বরং ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়। যেখানে যেটুকু বিজেপি তথা এনডিএ সরকারের বিরোধিতা হচ্ছে তার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া, কৌশলে এনডিএ-র মধ্যে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা শুরু করে দিতে চায় প্রথম থেকেই। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের পরের দিনই অত্যন্ত সক্রিয়তা দেখিয়েছেন এ ব্যাপারে। এ নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র কয়েকটি শরিকের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তব্য, “মোদী তাঁর নিজের নামে ভোট করেছেন। ভোটের থিম ছিল মোদীর গ্যারান্টি। এখন দেখা যাচ্ছে, টিডিপি এবং জেডিইউ-কে সঙ্গে নিয়েও বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছচ্ছে না, প্রয়োজন হচ্ছে আরও বাইরের সমর্থনের। রাজনীতি তো আগের মতো চলবে না, এটা কোনও ভাবেই মোদীর তিন নম্বর সরকার নয়। ফলে সকলে (অন্য বিরোধীরা) যখন দিল্লিতে সরকারের মন্ত্রিসভার দিকে নজর রাখছে, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সাংসদদের পাঠিয়ে দিয়েছেন হরিয়ানায়, যেখানে কেন্দ্র বিরোধী কৃষক বিদ্রোহ চলছে।”

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, শিন্দে বা অজিতরা যাতে মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বেই বিধানসভা ভোটে লড়াই করে, তা তৃণমূলও চায়। তাতে বাইরে থেকে কৌশলগত ভাবে সমর্থন যদি করতে হয়, তা করা হবে উদ্ধবকে, এটা তৃণমূলের অবস্থান। তাঁর সঙ্গে অভিষেকের আলোচনায় বিষয়টি ওঠে বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

PM Narendra Modi BJP NDA Opposition Parties
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy