প্রতীকী ছবি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গোটা বিশ্ব জুড়ে যে সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে, তার সবচেয়ে বেশি কুপ্রভাব পড়ছে মহিলা ও শিশুদের উপরে। যার জেরে আধুনিক দাসত্ব এবং মানব পাচারের ঝুঁকি বাড়ছে। দিন কয়েক আগে এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ এবং ‘অ্যান্টি স্লেভারি ইন্টারন্যাশনাল’। সেখানে বলা হয়েছে, জলবায়ুর এই বিশাল পরিবর্তনের জেরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মহিলা ও শিশুদের জন্য বিপদ বাড়ছে ভারতেও।
আগামী মাসে জলবায়ু নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা ব্রিটেনের গ্লাসগোতে। তার ঠিক আগে এই রিপোর্ট তুলে ধরে সম্ভাব্য বিপদের জন্য সতর্ক করা হয়েছে রাষ্ট্রনেতাদের। রিপোর্টটিতে উদাহরণ হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার সুনামি, ঘানার খরার পাশাপাশি আয়লা ও আমপানের মতো ঘূর্ণিঝড়ের জেরে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের ভয়াবহ ক্ষতির কথাও খুব স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টে আধুনিক দাসত্বের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক, নাবালিকা বিবাহ, মানব পাচারের মতো বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে কোনও একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাস্তুতন্ত্র পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে গেলে, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে অন্য কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে বেরোচ্ছেন। আর সেই সুযোগই নিচ্ছে অসাধু দালালেরা। যার ফলে পাচার ভীষণ ভাবে বাড়ছে। মহিলাদের কখনও যৌনপেশা বাছতে বাধ্য করা হচ্ছে, কখনও খুবই অল্প অর্থের বিনিময়ে তাঁদের দিয়ে শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে। একই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে শিশুরাও।
উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়েছে সুনামি, আয়লা, আমপানের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো হয়েছে, ২০০৪ সালের সুনামির পরে ইন্দোনেশিয়ায় কী ভাবে মানব পাচার বেড়ে গিয়েছিল। ২০০৯-এর আয়লা এবং ২০২০ সালের আমপানের পরে সুন্দরবন ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষদের দুর্দশার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। একই ভাবে উত্তর ঘানার আক্রা এলাকায় খরার জন্য কী ভাবে সেখানকার মহিলাদের পেটের দায়ে অন্য শহরে গিয়ে যৌনপেশা বেছে নিতে হয়েছে, সে কথাও লেখা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
কিছু দিন আগে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ভয়াবহ আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের একটি রিপোর্টও। সেখানে বলা হয়েছে, চরম আবহাওয়ার জন্য শুধু মাত্র গত বছরই ভিটে ছাড়া হতে হয়েছে গোটা বিশ্বের ৫.৫ কোটি মানুষকে। যা সর্বকালীন রেকর্ড। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে ৪০.৩ কোটি মানুষ দাসত্বের মধ্যে রয়েছেন। এখনই সতর্ক না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে অন্তত ২১.৬ কোটি মানুষকে ঘরছাড়া হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy