Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
LAC

প্যাংগংয়ে চিনা সেনার বিপুল সমাবেশ, তবে ভারতই সুবিধাজনক অবস্থানে

সেনা সূত্রের খবর, ৩০ অগস্টের পর থেকে প্যাংগং লেকের দক্ষিণে সবক'টি উঁচু এলাকাই ভারতীয় ফৌজের ঘাঁটি।

দক্ষিণ প্যাংগংয়ে ভারতীয় সেনার অবস্থান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

দক্ষিণ প্যাংগংয়ে ভারতীয় সেনার অবস্থান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
লেহ্ শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:৫৭
Share: Save:

ড্রাগনের নিঃশ্বাস দক্ষিণ প্যাংগংয়ে! শনিবার রাতে চুপিসাড়ে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতে পিছু হটতে হলেও হার মানতে রাজি নয় চিন। গত কয়েক দিনে ওই এলাকায় লাল ফৌজের বিপুল সমাবেশে নতুন অশান্তির ইঙ্গিত দেখছেন সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশ। যদিও প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে অধিকাংশ উঁচু গিরিশিরাই এই মুহূর্তে ভারতীয় সেনার দখলে। তাই অবস্থানগত দিক থেকে পিপলস লিবারেশন আর্মি কিছুটা বেকায়দায় বলেই মনে করছেন তাঁরা।

সেনাবাহিনীর একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিনে চুশুলের অদূরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চিনা ফৌজ মোতায়েন হয়েছে। টাইপ-১৫ হাল্কা ট্যাঙ্ক, মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চারের পাশাপাশি দুর্গম এলাকায় দ্রুত সেনা চলাচলের জন্য ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল রয়েছে সেখানে। এমনকি, চিন নিয়ন্ত্রিত মলডোতে ভারী কামান-সহ চিনা গোলন্দাজ-বাহিনীর উপস্থিতিও জানা গিয়েছে।

ভারতীয় সেনার তরফে সম্ভাব্য চিনা হামলার জবাবে মোতায়েন করা হয়েছে টি-৯০ এবং টি-৭২এম১ ট্যাঙ্ক। পাশাপাশি, কামান, ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র-সহ আনুষঙ্গিক অস্ত্রশস্ত্র ও পর্যাপ্ত বাহিনীও চুশুল, থাকুং ও আশপাশের এলাকায় মজুত রয়েছে। লাদাখ সফরে গিয়ে সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে শুক্রবার বলেছেন, ‘‘যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ভারতীয় সেনা প্রস্তুত।’’

আরও পড়ুন: ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে’, বলছেন সেনাপ্রধান

সেনা সূত্রের খবর, ৩০ অগস্টের পর থেকে প্যাংগং লেকের দক্ষিণে সবক'টি উঁচু এলাকাই এখন ভারতীয় ফৌজের ঘাঁটি। থাকুং সেনাঘাঁটির অদূরে হেলমেট এলাকা থেকে রেচিন লা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা থেকে চিনা ফৌজের গতিবিধির উপর নজর রাখছে সেনা। সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কালা টপ, মুকপরী এবং রেজাংলাতেও ভারতীয় সেনা ঘাঁটি গেড়েছে। ফলে প্যাংগংয়ের দক্ষিণে স্পাংগুর হ্রদ লাগোয়া উপত্যকায় মোতায়েন চিনা বাহিনীও চলে এসেছে ‘নাগালে’।

বেজিংয়ের দাবি, এলএসি অতিক্রম করে ভারতীয় সেনা প্যাংগংয়ের দক্ষিণে উঁচু এলাকাগুলি কব্জা করেছে। যদিও নয়াদিল্লি নির্ধারিত মানচিত্র বলেছে, সীমান্ত লঙ্ঘন করা হয়নি। তবে অতীতে কখনোই কালা টপ বা হেলমেটের মতো ‘স্ট্র্যাটেজিক্যাল পয়েন্টে’ ভারতীয় উপস্থিতি দেখা যায়নি। পরিস্থিতির ‘গুরুত্ব’ আঁচ করে চিন তাই ওই দুই পাহাড় লাগোয়া নীচু অঞ্চলে ট্যাঙ্ক বাহিনী মোতায়েন করেছে। অধিকৃত তিব্বতের নাগরি-গুনসা এবং শিনজিংয়া স্বশাসিত অঞ্চলের হোটান এয়ারবেসে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পিপলস লিবারেশন এয়ারফোর্সের ফাইটার জেট স্কোয়াড্রন।

আরও পড়ুন: ২০২১-এর মাঝামাঝির আগে ব্যাপক হারে কোভিড টিকা আসার সম্ভাবনা কম: হু

আকাশে চিনের মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনাও। বিমান ও হেলিকপ্টারের পাশাপাশি ড্রোন ও রাডারের মাধ্যমে নজরদারিও চলছে বলে সেনা সূত্রের খবর। লাদাখের পাশাপাশি, ইস্টার্ন সেক্টরে, অরুণাচল প্রদেশে চিনা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলাতেও সক্রিয়তা চলছে পুরোদমে। বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আর কে এস ভদৌরিয়া বৃহস্পতিবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিতে গিয়ে ‘প্রস্তুতি’ খতিয়ে দেখেছেন। জেনারেল নরবণে অবশ্য এদিন চিনা তৎপরতাকে প্রকাশ্যে তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি। ‘‘এলএসি-তে কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে’’-- বলে বক্তব্যে ইতি টেনেছেন তিনি। পাশাপাশি, আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনেরও আশা প্রকাশ করেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy