এক পুলিশকর্মীকে ঘিরে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে একদল কচিকাঁচা। বার বারই তারা বলছে, “আমাদের ছেড়ে চলে যেয়ো না, দাদা। তুমি চলে গেলে আমাদের কী হবে।” যতই তারা ওই পুলিশকর্মীকে দেখে কাঁদছিল, ততই তিনি তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কারও কারও মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে চেষ্টা করছিলেন শান্ত করার।
রোহিত যাদব। উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া জেলার মুড়েনা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় রেলপুলিশ। সম্প্রতি ঝাঁসীতে তাঁর বদলি হয়েছে। আর তাতেই ভেঙে পড়েছে কচিকাঁচারা। ২০১৮-তে উন্নাওয়ের জিআরপি থানায় প্রথম বদলি হয়েছিল তাঁর। সেই সময় তাঁকে ডিউটি করতে হত উন্নাও-রায়বরেলী প্যাসেঞ্জার ট্রেনে। সেই ট্রেন যখন কোরারী স্টেশনে থামত, গরিব পরিবারের একদল কচিকাঁচা সেই ট্রেনে ভিক্ষা করতে আসত। প্রতি দিন একই দৃশ্য দেখতেন তিনি। আর সেই দৃশ্য তাঁকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। রোহিত ঠিক করেন, ওদের জন্য কিছু একটা করতে হবে। ওদের শৈশবকে একটা অন্য খাতে বয়ে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু বিষয়টি অত সহজ ছিল না। শিশুগুলির বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। রোহিত তাঁদের বোঝান, তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্ব তিনি নিতে চান।
उन्नाव में जीआरपी सिपाही की विदाई में बच्चे रो पड़े। pic.twitter.com/BQxUApDDAP
— abhishek kumar agnihotri (@abhishe19913644) August 22, 2022
প্রথমে কয়েক জন রোহিতের ডাকে সাড়া দেয়। তাদের নিয়েই পাঠশালা শুরু করেন। এর পর এক এক করে আরও শিশু ওই পাঠশালায় পড়তে আসতে শুরু করে। রোহিতের এই চেষ্টা দেখে স্থানীয় প্রশাসনও এগিয়ে আসে। চার জনকে দিয়ে সেই পাঠাশালা শুরু হয়। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বেড়ে ৪০। বর্তমানে সেই সংখ্যা ১২৫-এ দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ থেকে গরিব শিশুদের পড়াচ্ছেন রোহিত। গরিব শিশুদের সেই ত্রাতা রোহিতের বদলি হয়েছে ঝাঁসীতে। আর তাতেই ভেঙে পড়েছে তাঁর হাতে গড়ে ওঠা সেই কচিকাঁচারা। রোহিতকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। নিজেকেও সামলাতে পারেননি রোহিত।