ছদ্মবেশে পুলিশ কমিশনার।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে পুলিশকে। গুরুত্ব দিয়ে শুনে গ্রহণ করতে হবে তাঁদের অভিযোগ। প্রতি থানায় এই মর্মে নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছিল দিন কয়েক আগে। কার্যক্ষেত্রে এই নির্দেশ যথাযথ ভাবে মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতেই বুধবার রাতে পিম্পরি চিঞ্চওয়াড়ের থানায় থানায় টহল দিয়েছিলেন ‘জ়ামালখান কামালখান পাঠান’। মুখে উর্দু। পরনে কুর্তা-পাজামা, ফেজ টুপি। গোটা তিনেক থানা ঘুরেই কর্মীদের হালচাল বুঝে নিয়েছিলেন জ়ামাল ওরফে পুণের পিম্পরি চিঞ্চচওয়াড়ের পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ প্রকাশ। সঙ্গে ছিলেন আবার তাঁর ‘বেগম’, সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রেরণা কাট্টে।
ছদ্মবেশে, সিনেমার কায়দায় বুধবার তিন থানা পরিদর্শন সেরে কৃষ্ণ প্রকাশ জানিয়েছেন, হিঞ্জওয়াড়ি, ওয়াকাড় এই দুই থানার পুলিশ কর্মীরা চটপটে হলেও কর্তব্যে গাফিলতি দেখা গিয়েছে পিম্পরি থানায়।
একটি সূত্রের খবর, উর্দুতে সড়গড় কৃষ্ণ প্রকাশ বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রথমে যান হিঞ্জওয়াড়িতে। নকল দাড়ি আর কমলা চুলের পুলিশকর্তা তখন পাক্কা পাঠান। সঙ্গে বেগম ‘প্রেরণা’। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, রাতে নমাজ পড়ে ফেরার সময়ে বাবধন এলাকায় তাঁর স্ত্রীকে হেনস্থা করে দুষ্কৃতীরা। তিনি বাধা দিলে মারধর করে তাঁকেও। সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় বাহিনী পাঠায় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। দেখা যায়, সেখানে গভীর রাতে নিয়ম ভেঙে বাজি ফাটাচ্ছে কিছু তরুণ। পুলিশকর্মীরা ফিরে সেই খবর দিতেই নিজের পরিচয় জানান কৃষ্ণ প্রকাশ। তাঁদের কাজের প্রশংসা করে রওনা হন দ্বিতীয় থানায়।
পরের গন্তব্য ছিল ওয়াকাড়। রাত তখন দেড়টা। থানায় ঢুকে কর্তব্যরত অফিসারকে কৃষ্ণ জানান, বাইক নিয়ে এসে তাঁর স্ত্রীর হার ছিনতাই করেছে এক দল তরুণ। সঙ্গে সঙ্গে বিশদে সেই অভিযোগ শোনেন ওই অফিসার। এবং রাতের টহলে যাওয়া সাব-ইনস্পেকটরকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর পর পুলিশ পাহারায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেন ছদ্মবেশী কমিশনারকে। সেই সময়েই নিজের পরিচয় জানান কৃষ্ণ প্রকাশ। পরীক্ষায় ‘পাশ’ করে যাওয়ায় সাধুবাদ জানান কর্মীদের।
এর পরে ছিল পিম্পরি। সেখানে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে এই পুলিশকর্তা জানান, হাসপাতালে এক কোভিড রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ হাজার টাকা ভাড়া চাইছে অ্যাম্বুল্যান্স। শুনে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে তাঁকে থানায় যেতে বলা হয়। রাত আড়াইটে নাগাদ একটি গাড়ি নিয়ে থানায় পৌঁছয় ‘দম্পতি’। সেখানে তাঁরা অভিযোগ করেন, কোভিড রেগীদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়ার নাম করে ডাকাতি হচ্ছে। ডিউটি অফিসার সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেন, এটা দেখা তাঁদের কাজ নয়। যেতে হবে সন্ত তুকারামনগর পুলিশ চৌকিতে। কৃষ্ণ প্রকাশ বলেন, তিনি শুনেছেন থানায় থানায় নির্দেশিকা এসেছে স্বাস্থ্য পরিষেবার নামে টাকা লুট হচ্ছে দেখলে অভিযোগ নিতে হবে পুলিশকে। তাতেও কর্ণপাত করেননি ওই অফিসার। তখনই নিজের নাম-পরিচয় জানিয়ে অফিসারকে সাসপেন্ড করেন কৃষ্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy