স্ত্রীকে ধর্ষণ, শিশুপুত্রকে অপহরণ— এমনই নানা গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। অথচ সব অভিযোগই নাকি ‘মিথ্যা’। তা সত্ত্বেও স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে রোজই পুলিশি হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। এ বার এমনই পাল্টা অভিযোগ এনে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন চেন্নাইয়ের যুবক প্রসন্ন শঙ্কর।
প্রসন্ন ‘রিপলিং’ নামে সিঙ্গাপুরের বহু বিলিয়ন ডলারের একটি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা। স্ত্রী দিব্যার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং ছেলের হেফাজতের মামলা চলছে তাঁর। সেই আবহেই বিচ্ছিন্না স্ত্রীর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। প্রসন্নের দাবি, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর দায়ের করা অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগের তদন্তের নামে তাঁকে হেনস্থা করছে চেন্নাই পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আদায়েরও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রসন্নের কথায়, চেন্নাই পুলিশের থেকে রীতিমতো ‘পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে’ তাঁকে। অন্য দিকে, কোনও এফআইআর ছাড়াই তাঁর ফোনের টাওয়ারের অবস্থান, গাড়ি, ইউপিআই এবং আইপি অ্যাড্রেসের উপর নজর রাখছে পুলিশ। হেনস্থা এমনই চরমে পৌঁছেছে তিনি কাজেও মন দিতে পারছেন না বলে দাবি।
আরও পড়ুন:
প্রসন্নের দাবি, একটি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী। বিষয়টি জানতে পেরেই প্রসন্ন বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটেন। স্ত্রীকে কত খোরপোশ দেওয়া হবে, দু’জনে মিলে তা নিয়ে আলোচনাও করেন। তবে অভিযোগ, টাকার অঙ্কে সন্তুষ্ট হননি দিব্যা। তখনই তিনি প্রসন্নের বিরুদ্ধে একটি ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন বলে দাবি যুবকের। প্রসন্ন বলেন, ‘‘ও বলতে থাকে আমি ওকে মারধর করেছি। পরে আরও এক ধাপ উপরে গিয়ে অভিযোগ তোলে, এক মাস আগে আমি ওকে ধর্ষণ করেছি, তার নগ্ন ভিডিয়ো প্রচার করেছি, ইত্যাদি। সিঙ্গাপুর পুলিশ তদন্তের পর এই অভিযোগগুলিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু চেন্নাই পুলিশ হেনস্থা করেই যাচ্ছে।’’ প্রসন্নের অভিযোগ, স্ত্রী তাঁদের ন’বছর বয়সি ছেলেকে ‘অপহরণ’ করে আমেরিকায় নিয়ে গিয়েছেন, যার ফলে তাঁকে বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে শিশু অপহরণের মামলা করতে হয়েছে। অথচ মার্কিন আদালতে ছেলের হেফাজত নিয়ে দম্পতির মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি বা মউ স্বাক্ষর হয়েছিল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, স্ত্রীকে এককালীন ন’কোটি টাকা ছাড়াও প্রতি মাসে প্রায় ৪.৩ লক্ষ টাকা দিতে হত শঙ্করকে। অথচ সেই চুক্তি মানেননি দিব্যা, এমনটাই দাবি করেছেন শঙ্কর। তার পরেই সমাজমাধ্যমে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ওই যুবক।
উল্লেখ্য, এর আগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমনই নানা অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেছিলেন বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অতুল সুভাষ। ওই ঘটনায় সারা দেশে আলোড়ন পড়ে যায়। গত ৯ ডিসেম্বর আত্মহত্যা করেছিলেন অতুল। প্রায় দেড় ঘণ্টার ভিডিয়ো ছাড়াও ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট রেখে গিয়েছিলেন তিনি, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ ছিল। অতুলের ‘সুইসাইড নোট’ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। অতুলের পরিবারের অভিযোগ, টাকা আদায় করতে নানা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে অতুলকে ফাঁসানো হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হন নিকিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। সেই আবহে চেন্নাইয়ের যুবকের খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক।