বৃহস্পতিবার রাতেও রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের (মাঝে) সঙ্গে দেখা করেন চম্পই সোরেন (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে হেমন্ত সোরেনের ইস্তফার ২৪ ঘণ্টা পরেও জোটের নেতা চম্পই সোরেনের কাছে রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের থেকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ না আসায় তৈরি হয়েছিল নানা জল্পনা। অবশেষে সেই জল্পনার ‘অবসান’ ঘটল। চম্পইকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানালেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন চম্পই। এর পরেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা আলমগির আলম জানিয়েছেন, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন চম্পই। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে বিধানসভায়। গরিষ্ঠতা প্রমাণের মতো বিধায়ক সংখ্যা হাতে রয়েছে বিজেপি-বিরোধী জোটের কাছে। তা সত্ত্বেও ‘ভয়’ যাচ্ছে না সোরেন-জোটের।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। সোরেন-জোটের প্রথম ‘ভয়’ এই সময়সীমা নিয়ে। কারণ, ১০ দিনের মধ্যে বিধায়ক ‘কেনাবেচা’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অতীতে এমন উদাহরণ বিভিন্ন রাজ্যে রয়েছে। ৮১ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় ‘জাদুসংখ্যা’ ৪১। শাসক জোটের হাতে রয়েছে ৪৮ জন বিধায়ক। জেএমএম ২৯, কংগ্রেস ১৬, আরজেডির ১ এবং সিপিআই (লিবারেশন) ১। এর মধ্যে হেমন্ত গ্রেফতার হওয়ায় বিধানসভায় ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন না। বর্তমানে চম্পইয়ের সঙ্গে রয়েছেন ৪৩ জন বিধায়ক। বাকি চার জনের দেখা পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে, বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ৩২ বিধায়ক। এঁদের মধ্যে বিজেপির ২৫, আজসুর ৩, এনসিপি (অজিত) ১ এবং নির্দল ৩ জন। অতীতে উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল, কর্নাটক কিংবা মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘বিধায়ক কেনাবেচা’ অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেএমএন নেতা চম্পই, কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা আলমগির আলম, সিপিআই (এমএল)-এর বিনোদ সিংহ এবং জেভিএম (বর্তমানে কংগ্রেস) বিধায়ক প্রদীপ যাদব রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখন কোনও আশ্বাস মেলেনি। বিধায়ক ‘কেনাবেচা’ যে হতে পারে সেই আশঙ্কা থেকেই বিজেপি-বিরোধী মহাজোটের ৩৯ জন বিধায়ককে দু’টি চার্টার্ড বিমানে কংগ্রেস শাসিত তেলঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদের কোনও রিসর্টে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাজভবন থেকে বেরোনোর সময় চম্পই বলেছিলেন, ‘‘আমরা ৪৩ জন বিধায়ক ঐক্যবদ্ধ। আমরা রাঁচীর সরকারি গেস্ট হাউসে রয়েছি।’’ কিন্তু রাঁচী থেকে তাঁদের বিমান উড়তেই পারেনি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়। এর খানিক পরেই চম্পইকে আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল।
জোটের দ্বিতীয় ‘ভয়’ হেমন্তকে নিয়ে। রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী জোটের অন্যতম কারিগর তিনি। জমি জালিয়াতি মামলায় ইডির হাতে বুধবার রাতে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। তার আগেই হেমন্ত রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে ঝাড়খণ্ডের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয়। ইডি হেমন্তকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চায়। কিন্তু আদালত এ বিষয়ে রায় স্থগিত রেখেছে। বৃহস্পতিবার রাতটা জেলেই কাটাচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। শুক্রবার সেই মামলা শুনবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। হেমন্তের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত জোট নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy