বছর এক, শুরু অনেক।
সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এই ‘স্লোগান’ নিয়ে দিল্লির গন্ডি পেরিয়ে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়তে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীরা যাই বলুক, এক বছরে শুরু হওয়া পদক্ষেপগুলি দেশজুড়ে মেলে ধরার বড়সড় প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্র।
চিন সফরে যাওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছেন, শুধু দিল্লিতে বসে সরকারের এক বছর উদযাপনে তিনি বিশ্বাসী নন। দিল্লিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন কিংবা এক
দিনের অনুষ্ঠানে যা প্রভাব পড়বে, গোটা দেশে তা ছড়িয়ে দিলে তার প্রভাব ঢের বেশি। তাই চিরাচরিত ছন্দ ভেঙে মোদী নিজেও দিল্লির বাইরে কোনও একটি গ্রামে যেতে চান। আপাতত সে জন্য উত্তরপ্রদেশে মথুরার কাছে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের গ্রাম নাঙ্গলা চন্দ্রভানকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ২৫ মে সেখানে জনসভাও করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। চিন সফরের শেষে এটি চূড়ান্ত হবে। সরকারের সব মন্ত্রী-সহ দলের মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক সকলকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ নির্বাচনী কেন্দ্র ও রাজ্যে টানা এক সপ্তাহ জুড়ে উদ্যাপন করতে হবে এক বছরের সাফল্য।
এ মাসের ২৬ থেকে ৩১ পর্যন্ত জনকল্যাণ পর্ব পালন হবে। পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জনসভা, ৫০০ সাংবাদিক সম্মেলন, প্রদর্শনী, জনকল্যাণ মেলা— সর্বত্রই তুলে ধরা হবে মোদী সরকারের এক বছরের প্রকল্পগুলি। বিরোধীদের প্রচারকে টক্কর দিতে বিজেপির প্রচারের হাতিয়ার হবে, এই সরকার একমাত্র গরিবেরই সরকার। যাবতীয় প্রকল্প শুধুমাত্র গরিবের জন্যই। এরই অঙ্গ হিসেবে স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে সামনে রেখে আসরে নামানো হচ্ছে তারকাদেরও। এ সব শুনে অবশ্য রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘তাহলে আমাদের পর্যবেক্ষণই তো ঠিক! নরেন্দ্র মোদী ভোটের আগেও জনসভা করতেন, এখনও সেই মঞ্চেই আছেন। আদতে সরকারের কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। যা হচ্ছে সবই দেখনদারি!’’
বিজেপি জানে, বিরোধীরা এই প্রচার চালাবেই। আজ গোটা দেশ থেকে আসা দলের মুখপাত্রদের দিল্লিতে এনে তাঁদের কাছে সরকারের এক বছরের সাফল্য তুলে ধরেন অমিত শাহ, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, নিতিন গডকড়ীরা। তাঁদের কাছেও মোদীর বার্তা পৌঁছে দিয়ে নেতারা জানান, দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দিতে হবে সরকারের সাফল্য। দলের সংগঠনের মাধ্যমে নতুন দশ কোটি সদস্যের কাছে যেতে হবে দলের কর্মীদের। মোদী সরকারের সাফল্য পৌঁছে দেওয়ার সেটাই একমাত্র পথ।
কিন্তু কংগ্রেসও চুপ করে বসে নেই। সরকারের এক বছরে পাল্টা পুস্তিকা প্রকাশ করতে পারে তারাও। সরকারের ব্যর্থতা ও জন-বিরোধী নীতির খতিয়ান তুলে ধরে। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের মতে, যে সব বিল পাশ করানো নিয়ে মোদী সরকার নিজেদের সাফল্য দেখাচ্ছে, সে সবই ইউপিএ জমানায় আনা। তখন বিজেপিই বিরোধিতা করেছিল। এখন সেগুলি পাশ করিয়ে কৃতিত্ব নিতে চাইছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমার ফলে তেলের দাম কমেছে। না হলে কৃষক এখনও আত্মহত্যা করছেন, সামাজিক প্রকল্পে বরাদ্দ ছাঁটাই হয়েছে, গৃহঋণে সুদ কমেনি, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ
কমেনি, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকেও নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘অচ্ছে দিন একমাত্র প্রধানমন্ত্রীরই এসেছে। বারো মাসে তেরো বার বিদেশ সফরের ঘটা দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy