Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Patanjali Case

আয়ুষ না অ্যালোপ্যাথি, পছন্দ ব্যক্তিগত হওয়া উচিত! পতঞ্জলি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র

পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে চাপে পড়ে যান রামদেব। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এমনকি, শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাও চাইতে হয়েছে যোগগুরুকে।

Central Government Replies To Supreme Court On Patanjali Case

যোগগুরু রামদেব। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৩৩
Share: Save:

মানুষ কোন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করবেন, তা তাঁর নিজস্ব পছন্দ। আয়ুষ না অ্যালোপ্যাথি— চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে মানুষের পছন্দই শেষ কথা হওয়া উচিত। পাশাপাশি, যে কোনও ব্যবস্থা নিয়ে কেউ যদি কাউকে অবমাননা করেন তবে সে বিষয়ে উৎসাহ জোগানো উচিত নয়। যোগগুরু রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী মামলায় সুপ্রিম কোর্টে এমনই জানাল কেন্দ্রীয় সরকার।

পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে চাপে পড়ে যান রামদেব। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এমনকি, শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাও চাইতে হয়েছে যোগগুরুকে। শুধু তিনি একা নন, পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) তথা রামদেবের সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণও ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে রামদেবরা জানিয়েছেন, তাঁরা আদালতকে আশ্বস্ত করতে চান যে, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর করবেন না।

‘অসত্য বিজ্ঞাপন’ মামলায় বার বার সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে রামদেব এবং তাঁর সংস্থা পতঞ্জলিকে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগও উঠেছিল রামদেবদের বিরুদ্ধে। গত সপ্তাহে এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন যোগগুরু। আদালতে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি।

এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘‘সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ এ বার নরেন্দ্র মোদী সরকার আদালতে তাদের মতামত জানাল।

শীর্ষ আদালতে দেওয়া হলফনামায় কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, কোনও ‘বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন’ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব রাজ্যের। তবে কেন্দ্রীয় সরকার আইন অনুসারে সময়মতো ব্যবস্থা নিয়েছে। আয়ুষ মন্ত্রকের তরফে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটিকে বলা হয়েছিল পরীক্ষা না করা পর্যন্ত এ জাতীয় বিজ্ঞাপন প্রকাশ না করার জন্য। এমনকি, বিষয়টি রাজ্য লাইসেন্স কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, করোনিল ট্যাবলেট কেবলমাত্র কোভিড-১৯-এর সহায়ক ওষুধ হিসাবে ব্যবহার হতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার করোনা নিরাময়ের জন্য মিথ্যা দাবিগুলির বিরুদ্ধে সক্রিয় পদক্ষেপ করেছে।

২০২০ সালের ২৩ জুন প্রথম বার করোনিল কিট বাজারে এনেছিল পতঞ্জলি। ‘করোনিল’ এবং ‘শ্বাসারি বটি’ নামে দু’ধরনের ট্যাবলেট এবং ‘অণু তৈল’ নামের ২০ মিলিলিটারের একটি তেলের শিশি নিয়ে তৈরি ওই কিটের দাম রাখা হয়েছিল ৫৪৫ টাকা। চাইলে আলাদা ভাবে ট্যাবলেট এবং তেল কেনা যাবে বলেও জানানো হয়েছিল। তার পর ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২৩ লক্ষ ৫৪ হাজার করোনিল কিট বিক্রি হয়েছে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়।

এই বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। আইএমএ-র অভিযোগ ছিল, পতঞ্জলির বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এবং চিকিৎসককে অসম্মান করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও আনা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, কোভিড প্রতিরোধী না-হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই আড়াইশো কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছিল রামদেবের পতঞ্জলি। আর তার জন্য ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল আইএমএ-র।

অন্য বিষয়গুলি:

Patanjali Ramdev Supreme Court Baba Ramdev
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE