Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Union Budget 2024-25

‘বন্ধু’দের জন্য বাজেট করবে কেন্দ্র: কংগ্রেস

কংগ্রেসের সদর কার্যালয় থেকে বিজেপি জমানায় দেশের আর্থিক বেহাল পরিস্থিতির তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে ধরে এনডিএ সরকারকে আক্রমণ শানালেন দলের সমাজমাধ্যম ও ডিজিটাল সেলের চেয়ারম্যান সুপ্রিয়া শ্রীনতে।

নির্মলা সীতারামন।

নির্মলা সীতারামন। —ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৩
Share: Save:

আর চার দিন পরেই সংসদে বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর আজ কংগ্রেসের সদর কার্যালয় থেকে বিজেপি জমানায় দেশের আর্থিক বেহাল পরিস্থিতির তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে ধরে এনডিএ সরকারকে আক্রমণ শানালেন দলের সমাজমাধ্যম ও ডিজিটাল সেলের চেয়ারম্যান সুপ্রিয়া শ্রীনতে। তাঁর বক্তব্য, ‘মুষ্টিমেয় পুঁজিপতি বন্ধু’কে আরও ধনী করতে গিয়ে বেকারত্ব, ক্রবর্ধমান আর্থিক অসাম্য, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমে আসার মতো উদ্বেগজনক বিষয়গুলির দিকে ফিরেও তাকায়নি নরেন্দ্র মোদী সরকার। আসন্ন বাজেটে সাধারণ মানুষ, নারী, যুব সম্প্রদায় ও মধ্যবিত্তের জন্য কিছুই থাকবে না বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গত দশ বছরে মোদী সরকার যে ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু পুঁজিপতির একচেটিয়া বাণিজ্যের সুবিধা তৈরি করতে বাজেট বানিয়েছে, এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না।’’

শ্রীনতে আজ বলেন, ‘‘আগামী ২৩ জুলাই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর সপ্তম বাজেট পেশ করবেন। বাজেট প্রস্তুত করার আগে তিনি কিছু শিল্পপতি, ব্যাঙ্ক কর্তা এবং কৃষি সংস্থার সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু যে সব পরিবার দিনে তিন বেলা খেতে পায় না, তাদের সঙ্গে কি দেখা করেছেন তিনি? মূল্যবৃদ্ধিতে হিমশিম খাওয়া নারীদের সঙ্গে কি কথা বলেছেন? সেই সব কৃষকদের সমস্যার কথা জানতে চেয়েছেন, যাঁরা তাঁদের শস্যের সঠিক মূল্য পাওয়ার জন্য লড়াই করে চলেছেন? প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় নাজেহাল যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন অর্থমন্ত্রী? আসল ভারতের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে কি? এটা স্পষ্ট, তাঁর দেখা হয়নি। এই বাজেট তৈরি হচ্ছে কিছু বন্ধু পুঁজিপতিকে আরও বড়লোক করার জন্য।’’

কংগ্রেস নেত্রী সরব হয়েছেন বেকারত্ব, আর্থিক অসাম্য এবং মূল্যবৃদ্ধির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘চাকরির জন্য গুজরাতে রেলিং ভেঙে পড়া, মুম্বইয়ের সামান্য অর্থের কাজের জন্য লাখ লাখ লোকের জমায়েতই প্রমাণ করে দেয় অভূতপূর্ব এক বেকারত্ব দেখছে ভারত। সরকারের দুর্বল অর্থনৈতিক পরিচালন ব্যবস্থা, নোটবাতিল, আধাখেঁচড়া জিএসটি চালু করে দেওয়া, কোভিড মোকাবিলায় অপারদর্শিতার মতো কারণে ১১.৩ লক্ষ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রে ১.৬ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। মোদী জমানায় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় ২.৭ লক্ষ কর্মীর চাকরি গিয়েছে। গত দশ বছরে চুক্তিবদ্ধ কর্মীর সংখ্যা ১৯ শতাংশ থেকে লাফ দিয়ে ৪৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে।’’ অসাম্যের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘ব্রিটিশ শাসনের থেকেও এখন অনেক বেশি আর্থিক অসাম্য দেশে। প্রবল ধনীদের সঙ্গে বাকি দেশবাসীর ফারাকটা আরও চওড়া হচ্ছে। দেশের ৪০ শতাংশ সম্পদ এখন ১ শতাংশ মানুষের হাতে। সাধারণ মানুষ নাজেহাল হচ্ছেন জিনিসের দামে। জুন মাসেই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছুঁয়েছে ৯.৫৫ শতাংশ। আনাজের দাম বেড়েছে বিপুল। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এ ব্যাপারে সতর্ক করলেও কর্ণপাত করেনি সরকার।’’

শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মোদী সরকারের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, কেন্দ্র ক্রমাগত এই দুই অত্যাবশ্যক ক্ষেত্রে খরচ কমিয়ে চলেছে। ইউপিএ-র দশ বছরে গড়ে জিডিপি-র ০.৬১ শতাংশ খরচ করা হত শিক্ষাখাতে। কিন্তু মোদী জমানায় তা নেমে এসেছে ০.৪৪ শতাংশে। কংগ্রেসের দাবি, একই হাল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও। গোটা বাজেটের ২.৪ শতাংশ বরাদ্দ ছিল ২০১৯-এর আর্থিক বছরে। এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১.৯ শতাংশে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE