প্রতীকী ছবি।
পিওএস মেশিনে পুরু ধুলো জমেছে। পেটিএম বোর্ড এক দিকের দড়ি ছিঁড়ে কেতরে ঝুলছে। গ্রামবাসীরাও ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড সযত্নে রেখে দিয়েছেন লোহার ট্রাঙ্কের মধ্যে। আবার কখন দরকার হবে, বলা তো যায় না!
সহজ কথায় এটাই এখন দুগদির ‘ছবি’। দুগদি দক্ষিণ ও দুগদি পশ্চিম গ্রাম পঞ্চায়েত, সরকারি খাতায় যার উল্লেখ, ‘ক্যাশলেস পঞ্চায়েত’ হিসেবেই। নভেম্বরের ৮ তারিখে নোট বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিকে গ্রামে গ্রামে ‘ক্যাশলেস’ ব্যবস্থা দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের ভোর ভোর ঘুম থেকে তুলে জানতে চাইতেন কাজের অগ্রগতি। প্রথম যে দিন ঘুমচোখে ফোন তুলে ভরাট গলার আওয়াজ শুনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, ‘‘ক্যা দাস, ক্যাশলেস কিতনা দূর?’’—সেদিন সাংবাদিকদের তা জানিয়েও দিয়েছিলেন আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী।
এর পর মাস পেরোতে না পেরোতেই, গত ডিসেম্বরে ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার চন্দ্রপুরা ব্লকের এই দুই পঞ্চায়েত এলাকাকে ‘ক্যাশলেস’ ঘোষণা করে মোদীর ‘বাহবা’ কুড়িয়েছিলেন রঘুবর। আর রঘুবর দাসের পিঠ চাপড়ানি পেয়ে ধন্য হয়েছিলেন জেলা প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের কর্তারা। দুই
পঞ্চায়েত এক লক্ষ টাকা করে পুরস্কারও পেয়েছিল।
নোট বাতিলের মাস খানেকের মধ্যে প্রশাসনিক উদ্যোগে ওই এলাকার বাসিন্দাদের হাতে চলে এসেছিল ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড। সেলুন থেকে শুরু করে মুদির দোকান, চিকেন শপ থেকে পাইস হোটেল, উদ্বোধনের দিন সব জায়গাতেই ঝুলেছিল ক্যাশলেস লেনদেনের বোর্ড। প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রামবাসীরা শুরু করেছিলেন অনলাইন লেনদেনও। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বহু জায়গাতেই বোর্ড উধাও।
কেন পাল্টি খেল দেশের দ্বিতীয় (প্রথম ক্যাশলেস পঞ্চায়েত ঘোষণা করে মহারাষ্ট্র) ‘ক্যাশলেস’ দুই পঞ্চায়েত?
এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রশাসনের উদ্যোগে হঠাৎই ভাঁটা পড়ল। সেই সঙ্গে দুর্বল নেট সংযোগ ও নগদ টাকার যথেষ্ট জোগান ‘ক্যাশলেস’ লেনদেনে তেমন ভাবে আর অভ্যস্ত হতে দিল কই! জেলা প্রশাসন কিছু তরুণ-তরুণীকে নিয়ে তৈরি করেছিল ‘ডিজিটাল বাহিনী’। সেই বাহিনী ঘরে ঘরে গিয়ে স্মার্ট ফোন ব্যবহার থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড ব্যবহারও শেখাবে। এখন অদৃশ্য তাঁরাও।
বোকারোর জেলাশাসক রাই মহিমাপত রায় সেদিনও ছিলেন, আজও আছেন। সাফাই দিলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের বেশির ভাগ লেনদেনই কিন্তু অনলাইনে হচ্ছে। আমরা যতটা পারছি সাধারণ মানুষকে অনলাইনে লেনদেন করার ব্যাপারে উৎসাহিত করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy