বাজেট অধিবেশনের সূচনায় সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ রামনাথ কোবিন্দের।
সংসদের যৌথ অধিবেশনে কৃষি আইনের পক্ষে জোর সওয়াল করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বাজেট অধিবেশনের সূচনায় সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে থাকল কৃষি আইন এবং কৃষকদের জন্য মোদী সরকার কী কী করেছে, তার প্রশস্তি। বলতে গেলে বিরোধীশূন্য সংসদে নিন্দা করলেন প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের আন্দোলনের।
কৃষি আইন নিয়ে যে পিছু হঠার প্রশ্নই নেই, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কৌশলে তা আরও একবার যেন বুঝিয়ে দিতে চাইল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কারণ এই ধরনের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি সরকারের ‘মুখপত্র’ হিসেবে কাজ করেন। ফলে রাষ্ট্রপতি শুক্রবার সংসদের যৌথ অধিবেশনে যা বললেন, তা আদতে সরকারেরই মনের কথা হিসাবে ধরে নিতে হবে।
শুক্রবার থেকে শুরু হল সংসদের বাজেট অধিবেশন। ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। শুক্রবার সেই অধিবেশনের সূচনায় সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতায় কৃষি আইনে নিয়ে সরব হলেন কোবিন্দ। কৃষি আইনের ফলে কৃষকদের সুবিধার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘নতুন ৩টি আইনের ফলে দেশের ১০ কোটিরও বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। কয়েকটি রাজ্য সরকারও কৃষি আইনের প্রশংসা করেছেন।’’
প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালিতে দিল্লি জুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বহু এলাকা। লালকেল্লায় ঢুকে পতাকা উত্তোলনের ছবি দেখেছিল গোটা দেশ। কৃষকদের সেই আন্দোলনের নিন্দা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকরা ট্র্যাক্টর র্যালি করেছেন। সেই আন্দোলনে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল।’’ লালকেল্লার ঘটনার উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সংবিধান, যার জন্য আমরা প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করি, আমাদের স্বাধীনতার কথা বলে। কিন্তু এটাও বলে যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিশ্চিত করা নাগরিকদের দায়িত্ব।’’
কিন্তু তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় কৃষকরা। সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে অধিকাংশ বিরোধী দল। সংসদেও নজরে পড়ল বিরোধীদের সেই ঐক্যবদ্ধ চেহারা। তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ ১৮টি বিরোধী দলই রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কট করে। সব দলেরই দাবি, ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। ফলে গোটা অধিবেশনই যে কার্যত উত্তপ্ত হতে চলেছে, সূচনালগ্নেই তার ইঙ্গিত মিলেছে।
সরকার যে কৃষকদরদী এবং কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সচেষ্ট, সে কথা বোঝাতে রাষ্ট্রপতি একাধিক কৃষি প্রকল্পের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কৃষকদের রোজগার নিশ্চিত করতে পিএম কিসান সম্মান নিধি প্রকল্প চালু করেছে সরকার। কৃষি খরচের দেড় গুণ ন্যূনতম সহাযক মূল্য (এমএসপি) দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সুফল বিকাশ যোজনার সুবিধাও পেয়েছেন কৃষকরা।’’
২০২০ সাল প্রায় পুরো বছরই করোনার প্রকোপ ছিল দেশে। রাষ্ট্রপতি মনে করেন, সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে দেশে করোনার সংক্রমণ রুখে দিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে অর্থনীতি। তাঁর কথায়, ‘‘করোনাকালে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র শিল্পে আর্থিক প্যাকেজ, গরিবকল্যাণ যোজনার মতো একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সারা বিশ্বকে পথ দেখিয়ে নজির সৃষ্টি করেছে ভারত সরকার। করোনার টিকাদান কর্মসূচিও সফল ভাবে চলছে দেশে।’’
তবে কৃষি আইনের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান-সহ প্রায় সব ক্ষেত্রে সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে এবং প্রকল্প নিয়েছে সে সবও উল্লেখ করেছেন তাঁর ভাষণে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কূটনীতিতে যে সব সাফল্য এসেছে, তা-ও দেশবাসীকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy