বিহারের দ্বারভাঙার এক নাবালক বাড়ির কাছ থেকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়ে যায়। পুত্রের খোঁজে থানার দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। তার মধ্যেই বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, তাদের পুত্রকে অপহরণ করা হয়েছে। চাওয়া হয় মুক্তিপণের টাকাও। ৭০ দিন পর জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফিরল সেই নাবালক!
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ৮ ফেব্রুয়ারি ওই নাবালক নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। কয়েক দিন পর ৪৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফোন আসে ওই নাবালকের বাড়িতে। পরিবারের দাবি, কথামতো পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পর আর ওই নাবালকের কোনও খোঁজ মেলেনি।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রেললাইনের ধারে গুরুতর আহত অবস্থায় একটি নাবালককে উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ মার্চ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। মৃতদেহ শনাক্ত করতে ওই অপহৃত নাবালকের পরিবারকে ডেকে পাঠায় পুলিশ। পরিবারের দাবি, মৃতদেহটি যে তাদের বাড়ির ছেলের তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। এমনকি, ডিএনএ পরীক্ষারও দাবি জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ তাতে কর্ণপাত করেনি। অভিযোগ, অপহৃত নাবালকের দেহই মিলেছে বলে পরিবারের উপর চাপ দেওয়া হয়।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই সময় দ্বারভাঙায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়েরা মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ বিক্ষোভ তুলতে এলে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট থানার এসএইচও-কে বরখাস্ত করা হয়। পরে ওই নাবালকের দেহের সৎকার করা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় পরিবারকে।
আরও পড়ুন:
তবে অপহৃত নাবালক মৃত নয়! ৭০ দিন পর বাড়ি ফিরে আসে সে। দ্বারভাঙার এক আদালতে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানায় ওই নাবালক। সে আদালতে জানায়, তাকে কী ভাবে কয়েক জন দুষ্কৃতী অপহরণ করেছিল। জোর করে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রথমে সে বুঝতে পারেনি, তাকে কোথায় ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে জানতে পারে তাকে নেপালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানকার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। এক দিন অপহরণকারীরা ভুল করে ঘরের দরজা খুলে রেখে চলে যান। সে সুযোগ নিয়েই পালায় ওই নাবালক। স্থানীয়দের সাহায্যে যোগাযোগ করে পরিবারের সঙ্গে। ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করার পরই নাবালককে ফিরিয়ে আনে তার পরিবার। ছেলে ঘরে ফেরায় খুশি পরিবার। একই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থও ফিরিয়ে দিতে চায় বলে জানায় তারা।