দুই শিবিরেই ‘অ্যালার্জি’!
কংগ্রেস ও তৃণমূল, দুই দলই ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে সরব। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এ নিয়ে বাকি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে এগোতে চাইলেও সেই তালিকায় কংগ্রেস নেই। আবার ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগের জবাবে নির্বাচন কমিশনের বিবৃতিকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস বলছে, রাহুল গান্ধী ঠিক এই অভিযোগই তুলেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের বিবৃতিতেও তৃণমূল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেই। উল্টে দুই দলই কে আগে সরব হয়েছে, তা নিয়ে কৃতিত্ব দাবি করছে।
তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, পশ্চিমবঙ্গের বহু ভোটারের সচিত্র পরিচয়পত্রের নম্বর ও হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের ভোটরদের সচিত্র পরিচয়পত্রের নম্বর এক। এর জবাবে নির্বাচন কমিশন রবিবার জানিয়েছিল, একই নম্বরের বিভিন্ন রাজ্যে পরিচয়পত্র থাকতে পারে। কিন্তু তার অর্থ ভুয়ো ভোটার নয়।
আজ তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে বিষয়টি তোলা হবে। তৃণমূল আপ, আরজেডি, এসপি-র মতো অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে সমন্বয় করবে। তার মধ্যে কংগ্রেস নেই। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের দাবি, ‘‘তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ২৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে সরব হন।’’ অথচ তৃণমূল আজ যেখানে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, সেই কনস্টিটিউশন ক্লাবেই এর আগে রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্রের সুপ্রিয়া সুলে, সঞ্জয় রাউতকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি মহারাষ্ট্রে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তোলেন।
তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকের পরে কংগ্রেস বিবৃতি দিয়ে বলেছে, একাধিক ভোটারের একই নম্বরের ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় নির্বাচন কমিশন বলেছে, আলাদা রাজ্যের আলাদা ভোটারের ক্ষেত্রে এমন হতে পারে। সবাই জানে, এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে কাজ করতে গেলে তাঁর একই সংখ্যার ভোটার আইডি কার্ড থাকা উচিত। কিন্তু একই রাজ্যের একই কেন্দ্রে একই নম্বরের আইডি কার্ড নিয়ে নির্বাচন কমিশন নীরব। তৃণমূল যে এই প্রশ্ন তুলেছিল, তা উল্লেখ না করে কংগ্রেস মনে করিয়ে দিয়েছে, রাহুল এ বিষয়ে লোকসভার সরব হয়েছিলেন। তারপরে তিনি মহারাষ্ট্রের ভোটে কারচুপি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন।
অন্য দিকে তৃণমূলের দাবি, কংগ্রেস মহরাষ্ট্রের ভোটের পরে সরব হয়েছিল। তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গের ভোটের আগেই সক্রিয়। ডেরেক ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘‘কোনও দল ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া দেয়। আর আমরা ঘটনা ঘটার আগেই আসরে নেমে পড়ি। এটাই তফাৎ।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)