দিল্লিতে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা আরও দু’দিন, বলছে মৌসম ভবন। ছবি— পিটিআই।
প্রবল ঠান্ডায় কাঁপছে গোটা উত্তর ভারত। দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, পঞ্জাবে পারদ নামছে তো নামছেই, থামার ব্যাপার নেই। কোথাও তাপমাত্রা পৌঁছেছে মাইনাসে, আবার কোথাও শূন্যের কাছাকাছি। সব মিলিয়ে উত্তরে ঠান্ডার দাপটে সবই ম্লান। তবে আশার কথাও শুনিয়েছে হাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবারের পর থেকে সামান্য হলেও মুক্তি মিলতে পারে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা থেকে। জোড়া পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জেরে কিছুটা বাড়তে পারে তাপমাত্রা।
সোমবার রাজধানী দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মঙ্গলবার তা আরও খানিক কমতে পারে, এই আশঙ্কা নিয়ে নিদ্রা গিয়েছিলেন দিল্লিবাসী। মঙ্গলবার ভোরে তাপমাত্রা মেপে দেখা গেল তা ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে পাঁচটায় দিল্লির ‘সফদরজং অবজ়ার্ভেটরি’তে তাপমাত্রা ছিল ২.৪ ডিগ্রি। লোধি রোডে ২ ডিগ্রি, দিল্লি রিজে ২.২ ডিগ্রি এবং আয়ানগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধরা পড়ে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিল্লিতে এমন ঠান্ডায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন পথবাসীরা। তাঁদের জন্য রাত্রিবাস খুলে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে সেখানে তিলধারণের জায়গা নেই। দিল্লির কাশ্মীরি গেট এলাকার একটি আশ্রয়স্থলের ম্যানেজার শৈলেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘কাশ্মীরি গেটের কাছে এই আশ্রয়স্থলে বহু মানুষ রাতে থাকছেন। কারণ বাইরে প্রবল ঠান্ডা। এই হাওয়ায় বাইরে থাকা যায় না। তাই আমাদের এখানে তিলধারণের জায়গা নেই। আমরা কাউকে ফেরাব না। যাঁরা থাকতে আসছেন, তাঁদের কম্বল, তোশক, তিন বেলার খাওয়া এবং প্রয়োজন মতো ওষুধপত্র দিচ্ছি।’’ এর পরেও বহু মানুষ আছেন, রাতে যাঁদের মাথায় ঠাঁই জোটেনি। রাতে তেমন অনেককেই পুলিশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও পথবাসীদের সহায়তায় সরকারের সঙ্গেই পথে নেমে কাজ করছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গরিব এবং প্রান্তিক মানুষের কাছে দিল্লির এই আবহাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠছে। আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও কমার পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। তা হলে কি দিল্লির তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যাবে? ঠাঁইহীন মানুষগুলির প্রশ্ন এখন সেটাই। পথকুকুরদেরও আশ্রয় দেওয়ার কাজ করছে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
এ তো গেল রাজধানীর কথা। রাজস্থানের সিকার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধরা পড়েছে মাইনাস ৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পঞ্জাবের ফরিদকোট কাঁপছে মাইনাস ১ ডিগ্রিতে। রাজস্থানের চুরুতে তাপমাত্রা পৌঁছেছে মাইনাস ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গোটা উত্তর ভারতেরই ঠান্ডায় থরহরিকম্প। ঠান্ডার দাপটে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে বাস, রেল চলাচলও। উত্তর রেলের দু’ডজনেরও বেশি দূরপাল্লার ট্রেন বিলম্বে চলছে।
এর মধ্যেই আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, জোড়া পশ্চিমি ঝঞ্ঝা আসছে। প্রথমটি বুধবার এবং দ্বিতীয় পশ্চিমি ঝঞ্ঝা আসবে আগামী ২০ জানুয়ারি। এই দু’য়ের প্রভাবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে তাপমাত্রা খানিক বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে কিছুটা হলেও ঠান্ডার কামড় থেকে নিস্তার পেতে পারেন উত্তর ভারতের বাসিন্দারা। কিন্তু তার বাকি এখনও দু’দিন। এই দু’দিনে তাপমাত্রা অবশ্য আরও নামারই বার্তা এসেছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী দু’দিন দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় হিমালয়ের বরফ ছোঁয়া উত্তর-পশ্চিম ঝঞ্ঝার জেরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস নামতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy