প্রতারণার মামলায় এখনই এফআইআর রুজু করা যাবে না শেয়ার বাজার নিয়ামক সংস্থা ‘সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া’ (সেবি)-র প্রাক্তন প্রধান মাধবী পুরী বুচের বিরুদ্ধে। শেয়ার বাজারে প্রতারণা এবং নিয়ম ভাঙার অভিযোগে মাধবী এবং আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজুর নির্দেশ দিয়েছিল মুম্বইয়ের বিশেষ দুর্নীতি বিরোধী ব্যুরো আদালত। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয় বম্বে হাই কোর্টে। সোমবার হাই কোর্ট মুম্বইয়ের দুর্নীতি বিরোধী ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছে, নিম্ন আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এখনই কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না।
সোমবার সকালে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং আইনজীবী অমিত দেশাই জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টির শুনানির জন্য আবেদন করেন হাই কোর্টের বিচারপতি শিবকুমার দিগের বেঞ্চে। তাঁরা সেবি এবং বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের হয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দুই আইনজীবী হাই কোর্টে জানান, নিম্ন আদালত অভিযুক্ত কোনও পক্ষকে নোটিস না-পাঠিয়েই নির্দেশ দিয়েছে। তাই ওই নির্দেশ আইনত গ্রহণযোগ্য নয় বলে হাই কোর্টে দাবি করেন তাঁরা। তখন বিচারপতি জানান, মঙ্গলবার তিনি এই মামলাটি শুনবেন। তত ক্ষণ পর্যন্ত নিম্ন আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে মুম্বইয়ের দুর্নীতি বিরোধী ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
স্বপন শ্রীবাস্তব নামে এক মামলাকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার নিম্ন আদালত ওই নির্দেশ দেয়। সেবির প্রাক্তন প্রধান ছাড়াও সংস্থার আরও তিন সদস্য অশ্বিনী ভাটিয়া, অনন্ত নারায়ণ, কমলেশ চন্দ্র, বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই)-এর সিইও সুন্দররমন রামমূর্তি এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রমোদ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দেওয়া হয়। মুম্বইয়ের বিশেষ দুর্নীতি বিরোধী ব্যুরো আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে রবিবারই প্রতিক্রিয়া দেয় সেবি। বিবৃতিতে সেবি দাবি করে, অভিযোগকারী অস্থিরচিত্ত। মামলা করা তাঁর অভ্যাস। অভিযোগকারীর পুরনো বেশ কিছু মামলা আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মামলা করার জন্য জরিমানাও হয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, এর আগে আমেরিকার পেশাদার তথ্যানুসন্ধান সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে মাধবী ও তাঁর স্বামী ধবল বুচের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠে আসে। ওই রিপোর্টে বলা হয়, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র পর্ষদ সদস্য ও চেয়ারপার্সন হওয়ার পরেও নিজের উপদেষ্টা সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রিতে মাধবী নিজের অংশীদারিত্ব বহাল রেখেছিলেন। রিপোর্টে দাবি, ওই ভারতীয় উপদেষ্টা সংস্থাটি বিভিন্ন দেশীয় শিল্পকে পরামর্শ দিয়ে আয় করে। অংশীদার হিসেবে সেই আয়ের শরিক হন মাধবী ও তাঁর স্বামী ধবল। সেই সঙ্গে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের দাবি, যে বিদেশি ও অখ্যাত লগ্নিকারী সংস্থার মাধ্যমে আদানি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত সংস্থাগুলিতে পুঁজি ঢেলে তাদের শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়ানো হয়েছিল, তাতে বুচ দম্পতির লগ্নি ছিল।