ছবি: এএফপি।
নাটকটা কবে শেষ হবে— শুধু কর্নাটক নয়, গোটা দেশই অপেক্ষায় ছিল এর। পাক্কা তিন সপ্তাহ ধরে নানা টালবাহানা, রিসর্ট রাজনীতি, মামলা, পাল্টা মামলা, আস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভায় লাগাতার বিতর্কের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আজ সন্ধেয় আস্থা ভোট হল কর্নাটক বিধানসভায়। হারলেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তাঁর পক্ষে ভোট পড়ল ৯৯টি। বিপক্ষে ১০৫টি। রাজ্যে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের ১৪ মাসের জোট সরকারের পতন বিজেপির মতে, ‘কর্মের খেলা’।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি বি এস ইয়েদুরাপ্পার দাবি, ‘‘কর্নাটকে উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু হবে এ বার।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। কাল পরিষদীয় দলের বৈঠক বসবে বিজেপির। এ বার কোন রাজ্য দখলে ঝাঁপাবে বিজেপি, শুরু হয়েছে সেই জল্পনা।
যাঁদের সমর্থন প্রত্যাহারে এই পালাবদল, কংগ্রেস ও জেডিএসের সেই বিদ্রোহী বিধায়কেরা কালই মুম্বই থেকে রাজ্যে ফিরবেন বলে একটি সূত্র জানালেও নতুন সরকারের শপথের পরেও তা হতে পারে। মুম্বইয়ে যে হোটেলে তাঁরা রয়েছেন, তার সামনে আজ এক দফা বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসের সমর্থকরা। সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া দুই নির্দল বিধায়ককে আটকে রাখার অভিযোগ নিয়ে বেঙ্গালুরুতেও ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি ও কংগ্রেসের সমর্থকদের মধ্যে। বাড়ে উত্তেজনা। বেঙ্গালুরুতে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ১৪৪ ধারা ও মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
HD Kumaraswamy walks out of the Karnataka Assembly, Congress-JD(S) government lost trust vote in the assembly, today. pic.twitter.com/QFooJqLZOR
— ANI (@ANI) July 23, 2019
ওই নির্দল দুই বিধায়ক, আর শঙ্কর এবং এইচ নাগেশ শীর্ষ আদালতে অভিযোগ এনেছিলেন, তাঁদের সমর্থন প্রত্যাহার ও কংগ্রেস-জেডিএসের ১৬ জনের ইস্তফায় সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়লেও স্পিকার কে আর রমেশ কুমার পিছিয়ে চলেছেন আস্থা ভোট। ছক কষে এটা করা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চে আজ তা নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সন্ধে ছ’টার মধ্যে আস্থা ভোট হয়ে যাবে বলে স্পিকারের তরফে জানানো হলে, সুপ্রিম কোর্ট শুনানি স্থগিত রাখে।
উল্লেখ করার মতো বিষয়, গত বৃহস্পতিবার আনা হয় আস্থা প্রস্তাব। তা নিয়ে চার দিন ধরে বিধানসভায় আলোচনা হলেও, বিরোধী বেঞ্চের এক জনও তাতে অংশ নেননি। একতরফা বলে গিয়েছেন সরকারি বেঞ্চের বিধায়কেরা। টাকা দিয়ে বিধায়ক ভাঙানোর অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তাতে অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনার হুমকি দিলেও বিতর্কে যোগ দেয়নি বিজেপি। আস্থা ভোটের জন্য রাজ্যপাল বাজুভাই বালা দু’বার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। দু’বারই তা পেরিয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ দায়ের হয়, স্পিকারের সাংবিধানিক অধিকারে অবৈধ ভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
ভোটাভুটির আগে কুমারস্বামী বলেন, ‘‘আস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশ্য ছিল না। আলোচনা চলছে বলেই ইস্তফা দিইনি। ভোট এড়াতে চাইনি।’’ গোটা পর্বে দীর্ঘ সময় লাগার জন্য কুমারস্বামী ক্ষমাও চেয়ে নেন স্পিকার ও রাজ্যবাসীর কাছে। বলেন, ‘‘রাজনীতিতে এসেছি আচমকা ও অপ্রত্যাশিত ভাবে। ২০১৮-তে বিধানসভা ভোটের পরেই রাজনীতি ছাড়তে চেয়েছিলাম।’’ রাতে রাজ্যপালের ইস্তফা দিয়ে এসে কুমারস্বামী বলেন, ‘‘এখন আমি ভারমুক্ত। সবচেয়ে সুখী মানুষ।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy