Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
BJP

BJP: দল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন দলিত নেতাদের একাংশ! ‘ওবিসি’ মোদীও এখন হাতিয়ার বিজেপি-র

 বিজেপি মতে, ওবিসি ভোটে ভাঙন রুখতে আগামী দিনের প্রচারে উত্তরপ্রদেশের মানুষকে নিজের ওবিসি পরিচয় স্মরণ করিয়ে দিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রীও

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৯
Share: Save:

ভোটের মুখে ওবিসি ও দলিত নেতাদের একাংশ দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় প্রমাদ গুনেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পাল্টা চালে তাই জাতপাতের রাজনীতিরই কৌশল নিচ্ছেন তাঁরা। দলের প্রধান লক্ষ্য, যাদবদের বাদ দিয়ে যে ৩০-৩২ শতাংশ ওবিসি ভোট রয়েছে, তা নিশ্চিত করা। আর সেই কাজে বিজেপির প্রধান বাজি সেই নরেন্দ্র মোদীই।

গুজরাতে জাতপাতের নিরিখে মোদী সম্প্রদায় হল ওবিসি শ্রেণির, পেশায় তেলি। এ বারের ভোটে প্রধানমন্ত্রীর সেই পরিচয়কে সামনে রেখেই নতুন করে ওবিসি সমাজের জনসমর্থন কুড়োনোর পরিকল্পনা নিয়েছে দল। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, “রাজনীতিতে আসা-যাওয়া লেগেই থাকে। কিন্তু আমাদের কাছে দেশের সব থেকে বড় ওবিসি নেতা রয়েছেন, যিনি পদমর্যাদায় দেশের প্রধানমন্ত্রী। এই মুহূর্তে দেশে ওঁর থেকে বড় ওবিসি নেতা আর কে আছেন?” বিজেপি সূত্রের মতে, ওবিসি ভোটে ভাঙন রুখতে আগামী দিনের প্রচারে উত্তরপ্রদেশের মানুষকে নিজের ওবিসি পরিচয় স্মরণ করিয়ে দিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রীও। এই রাজ্যের প্রায় ৩৯-৪০ শতাংশ ভোট ওবিসি শ্রেণির। তাঁদের মধ্যে ৭ শতাংশ যাদব। যাদবেরা প্রথাগত ভাবে সমাজবাদী পার্টির ভোটার। বাকি ৩০-৩২ শতাংশ ওবিসি ভোটকে গত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই পাখির চোখ করে রেখেছে বিজেপি। গত দুই লোকসভা কিংবা পাঁচ বছর আগেকার বিধানসভা ভোটের সময়ে ওবিসি ও তফসিলি জাতি-জনজাতির ছোট ছোট গোষ্ঠীগুলিকে (রাজ্যের মোট ভোটের প্রায় ২০ শতাংশ) জাতপাতের চেনা ছক ভেঙে বৃহত্তর হিন্দুত্বের ছাতার তলায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন অমিত শাহেরা। যার ফলে চিরাচরিত ভোট হারায় এসপি-বিএসপির মতো দলগুলি।

কিন্তু এ বারের ছবি ভিন্ন। যোগী আদিত্যনাথের শাসনে মুখ ঘুরিয়েছে ওবিসি সমাজ। ভোটের ঠিক আগে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন একাধিক ওবিসি নেতা-মন্ত্রী। অনেকেই মনে করছেন, ওই দলত্যাগের ফলে আসন্ন ভোটে বিজেপির ওবিসি ও দলিত ভোটব্যাঙ্কে বড় মাপের ভাঙন ধরার আশঙ্কা রয়েছে। তাই অন্য কেউ নন, রাজ্যের ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে কেবল ‘ওবিসি নেতা’ নরেন্দ্র মোদীকে দেখে ভোট দেন, প্রচারে এমনই সুর বাঁধার কৌশল নিয়েছে দল।

বিজেপির অন্য নেতাদেরও ওবিসি মুখ হিসাবে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ওবিসি-দের উন্নয়নে মোদী সরকার গত সাত বছরে কী ধরনের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে প্রচারে তুলে ধরতে বলা হয়েছে। দলের লক্ষ্যই হল, গত পাঁচ বছরে ঠাকুর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কারণে যে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ক মুখ ফিরিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখকে সামনে রেখে ভোটবাক্সে তাঁদের আস্থা ফিরে পাওয়া।

আজ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার দু’পাশে বসে সাংবাদিক বৈঠক করেন আপনা দল (সোনেলাল)-এর অনুপ্রিয়া পটেল এবং নিষাদ পার্টির সঞ্জয় নিষাদ। বিজেপির পাশে থাকার বার্তা দিয়ে দুই শরিক দলই জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গত সাত বছরে ওবিসি সমাজের উন্নয়নে যে ধারাবাহিক পদক্ষেপ করেছেন, তার জন্য ওবিসি সমাজ তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। তাই দুই দল একযোগে বিজেপির শরিক হিসাবে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে লড়বে।

আপনা দলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল বলেন, মোদী সরকার ডাক্তারিতে ওবিসি সমাজের জন্য আলাদা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের একাধিক নেতাকে। রাজ্যের হাতে ওবিসি তালিকা তৈরির ক্ষমতা দিতে সংবিধান সংশোধনেরও নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকার। তবে এখনও যে ওবিসি-দের জন্য আলাদা কেন্দ্রীয় মন্ত্রক তৈরি হয়নি, তা আজ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অনুপ্রিয়া। অন্য দিকে নিষাদ পার্টির সঞ্জয় নিষাদ জানিয়েছেন, রাজ্যে মৎস্যজীবীদের জন্য আলাদা দফতর ও তাঁদের উন্নয়ন সংক্রান্ত একাধিক ঘোষণা এখনও খাতায়-কলমে রয়ে গিয়েছে। তবে তাঁর আশা, বিধানসভা নির্বাচনে জিতে এলে শরিক দলের ওই দাবি পূরণ করবে বিজেপি।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE