Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Violence

‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ হোলির পরে ‘হিংসা পে চর্চা’ সংসদে!

বিরোধীদের দাবি, দোল পর্যন্ত অপেক্ষা না-করে অবিলম্বে দিল্লির ‘হিংসা পে চর্চা’ চাই সংসদে।

দিনযাপন: হিংসাদীর্ণ রাজধানীতে আপাতত ঠাঁই ইদগার ত্রাণ শিবিরে। মঙ্গলবার মুস্তাফাবাদ এলাকায়। ছবি: পিটিআই।

দিনযাপন: হিংসাদীর্ণ রাজধানীতে আপাতত ঠাঁই ইদগার ত্রাণ শিবিরে। মঙ্গলবার মুস্তাফাবাদ এলাকায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০৫:৪৩
Share: Save:

সংসদে দিল্লির হিংসা নিয়ে চর্চায় রাজি সরকার। তবে ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ হোলি খেলার পরে।

স্পিকার ওম বিড়লা আজ দুপুরে এ কথা জানাতেই যেন বোমা ফাটল লোকসভায়। গত কালের মতোই বিরোধী বেঞ্চ থেকে স্লোগান ও চিৎকার, কাগজ কুচিকুচি করে ছুড়ে ফেলা— চলল সব কিছুই। এ দিনও কংগ্রেস সাংসদরা ধেয়ে গেলেন সরকারি বেঞ্চের দিকে। আস্তিন গোটাতে দেখা গেল বিজেপি সাংসদদেরও। চলল ধাক্কাধাক্কি। বিরোধীদের দাবি, দোল পর্যন্ত অপেক্ষা না-করে অবিলম্বে দিল্লির ‘হিংসা পে চর্চা’ চাই সংসদে। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোটা দিনের জন্য লোকসভা মুলতুবি করে দিতে বাধ্য হন স্পিকার। রাজ্যসভাও আজ সকাল থেকে দু’বার মুলতুবি হওয়ার পর গোটা দিনের জন্যই বন্ধ হয়ে যায়। সূত্রের খবর, দোলের আগে সংসদে আর কাজকর্ম হওয়ার সম্ভাবনা কম।

দিল্লির হিংসা নিয়ে গত কাল দিনভর উত্তাল ছিল লোকসভা। তার জেরে আজ সকালে স্পিকার সব দলনেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে অনুপস্থিত ছিল বিজেপি। এমনকি সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীও যাননি। ওই বৈঠকে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, ডিএমকে-র টি আর বালু, এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে প্রত্যেকেই এক সুরে দিল্লি হিংসা নিয়ে সংসদে আলোচনার জন্য অনুরোধ জানান। স্পিকার জানান, সরকার পক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

এই বৈঠকে দু’টি নির্দেশ দেন স্পিকার। এক, বিরোধী ও সরকার পক্ষের সাংসদরা ওয়েল পেরিয়ে পরস্পরের বেঞ্চের দিকে ধেয়ে যেতে পারবেন না। দুই, ছোট-বড় কোনও মাপের প্ল্যাকার্ড নিয়েই ঢোকা যাবে না লোকসভায়। যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্পিকারের তৈরি করে দেওয়া কানুন ভাঙতে দেখা গেল সাংসদদের।

স্পিকার দুপরে সভায় বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে বিজেপি সাংসদদের ও সরকার পক্ষের কথা হয়েছে। সরকার আলোচনা করতে তৈরি। গোটা দেশে সৌহার্দ্যপূর্ণ দোল খেলার পর ১১ তারিখ এই আলোচনা করা যেতে পারে।’’ এ কথা বলা মাত্র গর্জন ওঠে বিরোধী বেঞ্চ। ‘ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট’ পাশ করানো নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য মাঝপথে থমকে যায় খণ্ডযুদ্ধে। ওয়েলের কাছে স্লোগান দিতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদদের। তাঁদের দাবি, রাজধানীতে এত বড় হিংসার মতো বিষয়ে আলোচনা দোল উৎসবের জন্য ফেলে রাখা চলবে না। অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘গোটা বিশ্ব বলছে, রাজ্যসভার উচিত অবিলম্বে হিংসা নিয়ে আলোচনা করা। উপদ্রুত এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্যও এটা জরুরি। তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘রাজ্যসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে আমরা আজ জানিয়েছি, হিংসা-পীড়িত মানুষদের কিছুটা হলেও শান্তির বার্তা দিতে আমাদের আলোচনায় বসা উচিত। গোটা বিশ্ব এই হিংসার সমালোচনা করছে। আমরা সংসদে এ নিয়ে কথা না-বললে ভুল বার্তা যাবে।’’

ডেরেক জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণের জন্য তৃণমূলের তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকার তহবিল গড়া হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের পেনশন এবং বইয়ের রয়্যালটি থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। দলের সাংসদরাও টাকা দেবেন তহবিলে। সংসদের অধিবেশন শেষ হলেই তা দুর্গতদের হতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Violence BJP, Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE