অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে আক্রমণ বিজেপির। ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালই দিল্লিতে আবগারি দুর্নীতির ‘কিংপিন’ বলে দাবি করল বিজেপি।
দিল্লিতে মদের দোকানের লাইসেন্স বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমে সিবিআই উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার বাড়িতে শুক্রবার সকাল থেকে ১৪ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছিল। আজ সিবিআই এই মামলায় আট জন অভিযুক্তের নামে ‘লুকআউট সার্কুলার’ জারি করেছে যাতে তাঁরা বিদেশে পালাতে না পারেন। তবে মণীশ সিসৌদিয়ার নামে কোনও ‘লুকআউট সার্কুলার’ জারি হয়নি।
দিল্লিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি আদেশ গুপ্ত রবিবার অভিযোগ করেছেন, ‘‘অরবিন্দ কেজরীওয়ালই এই দুর্নীতির কিংপিন।’’ সিসৌদিয়া শনিবারই অভিযোগ তুলেছিলেন, ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর প্রধান চ্যালেঞ্জার হয়ে উঠছেন কেজরীওয়ালই। সেই কারণেই সিবিআইকে মাঠে নামানো হয়েছে। আম আদমি পার্টির নেতাদের দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাঁদের দলের উত্থান বলেই তাঁদের দুর্নীতিতে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে পাল্টা দাবি তুলেছেন, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যখন মোদী সরকার ওষুধ, অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিত করছিল, তখন কেজরীওয়াল আবগারি নীতি তৈরি করছিলেন। ভাটিয়ার অভিযোগ, ‘‘এই আবগারি দুর্নীতির শিকড় কেজরীওয়ালের চৌকাঠে পৌঁছেছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। কেজরীওয়ালের দিকে হাতকড়া দ্রুত এগিয়ে আসছে।’’
বিজেপি ও আম আদমি পার্টির এই কলহের মধ্যে কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপিও আবগারি দুর্নীতির সুফল কুড়িয়েছে। দুর্নীতির জন্য উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সিসৌদিয়াকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছে কংগ্রেস। দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অনিল চৌধরির অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশের একটি কালো তালিকা-ভুক্ত সংস্থাকে দিল্লিতে মদ বেচার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনকে বিজেপি জানিয়েছে, ওই সংস্থাটি বিজেপিকে ২০২০-তে ২ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছিল। সিবিআইয়ের তদন্তে এই সংস্থার নাম নেই।
সিবিআইয়ের এফআইআর-এ মণীশ সিসৌদিয়ার নাম অভিযুক্তের তালিকায় প্রথমে রয়েছে। এফআইআর অনুযায়ী, সিসৌদিয়া নিয়ম ভেঙে আবগারি নীতিতে একাধিক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেন। ফলে দিল্লি সরকারের ১৪৪ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়। সিবিআই সূত্রের খবর, এই ঘটনায় ইডি-ও আর্থিক নয়ছয়ের দিকটি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামবে।
সিসৌদিয়া জানিয়েছেন, সিবিআই তাঁর বাড়িতে ১৪ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েও কিছু পায়নি। ব্যক্তিগত কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। তাঁর নামে ‘লুকআউট সার্কুলার’ জারি বলে কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ‘‘তল্লাশিতে কিছুই না পেয়ে এখন ‘লুকআউট সার্কুলার’ জারি করা হয়েছে। এটা কী ধরনের গিমিক মোদীজি? আমি তো ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াচ্ছি। কোথায় যেতে হবে বলুন।’’
সিসৌদিয়ার দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির আবগারি দুর্নীতি নিয়ে মাথাব্যথা থাকলে আগে বিজেপি শাসিত গুজরাতে তদন্ত হত। সেখানে প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি টাকার আবগারি শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ বিষাক্ত মদ খেয়ে মারা যাচ্ছেন। দিল্লির দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তাঁর যুক্তি, প্রথমে বিজেপি বলেছিল ৮ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। এখন বলা হচ্ছে ১৪৪ কোটি টাকার দুর্নীতি। স্বচ্ছতার সঙ্গেই আবগারি নীতির রূপায়ণ হয়েছিল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি আদেশ গুপ্তের পাল্টা প্রশ্ন, আবগারি নীতিতে কোনও সমস্যা না থাকলে তা প্রত্যাহার করা হল কেন?
সিবিআই সূত্রের দাবি, অভিযুক্তের বিদেশে পালানোর ঝুঁকি থাকলে ‘লুকআউট সার্কুলার’ জারি হয়। এ ক্ষেত্রে এক জন একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার সিইও। পাঁচ জন বিভিন্ন পানীয় সংস্থার কর্তা। বাকি দু’জনের মধ্যে এক জন টাকা লেনদেন ও অন্য জন ‘মিডলম্যান’-এর কাজ করছিলেন। এঁদের মধ্যে দু’জন ইতিমধ্যেই বিদেশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy