শাসক-বিরোধী জোটের টানাপড়েনের কারণে কার্যত বানচাল হয়ে গিয়েছে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম চার দিনের অধিবেশন। প্রতীকী ছবি।
সংসদে ধারাবাহিক ভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ওই দীর্ঘ অনুপস্থিতিকে কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের প্রশ্ন, গ্রেফতারির ভয়েই কি রাজ্য ছেড়ে দিল্লিতে পা দিতে ভয় পাচ্ছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ? অভিষেককে আক্রমণ শানানোর সঙ্গেই আজ রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি ও তাতে শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে সংসদ চত্বরে সরব হলেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা। নিয়োগ দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে সরব হন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। পাল্টা আক্রমণে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ওঁরা বোধ হয় মধ্যপ্রদেশে হওয়া ব্যপম দুর্নীতির কথা ভুলে গিয়েছেন!
শাসক-বিরোধী জোটের টানাপড়েনের কারণে কার্যত বানচাল হয়ে গিয়েছে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম চার দিনের অধিবেশন। তাই সংসদের ভিতরে রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি ও তাতে শাসক দলের ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরতে না পেরে আজ সংসদের বাইরে গান্ধী মূর্তির সামনে ‘বাংলার লজ্জা মমতা’ প্ল্যাকার্ড ও এখন পর্যন্ত দুর্নীতিতে নাম উঠে আসা তৃণমূল নেতাদের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখান রাজ্যের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়েরা। পরে সুকান্ত বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত তদন্তে জানা গিয়েছে, কয়েকশো কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। সরকার ও শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মঞ্জুরি ছাড়া এত বড় মাপের কেলেঙ্কারি হওয়া সম্ভব নয়। তারই প্রতিবাদে আজ সংসদে ও রাজ্যে শিয়ালদহ স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আগামী দিনে গোটা রাজ্য জুড়ে ওই বিক্ষোভ অবস্থান হবে।’’ বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নাকের ডগায় ওই দুর্নীতি হয়েছে। যার দায় কোনও ভাবেই এড়াতে পারেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর জবাব চান তাঁরা।
পাশাপাশি, আজ নাম না করে অভিষেককেও নিশানা করে রাজ্য বিজেপি। বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্বের পরে দ্বিতীয় পর্বেও সংসদে টানা অনুপস্থিত অভিষেক। তাঁর দিল্লি না আসা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতারা। অভিষেকের নাম না করে সুকান্তের প্রশ্ন, ‘‘কীসের ভয় পাচ্ছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ? সম্ভবত গ্রেফতার হয়ে যাবেন ওই আশঙ্কাতেই কি ওই সাংসদ দিল্লিতে আসছেন না?’’ বিজেপি নেতৃত্বের মতে, নিয়োগ দুর্নীতি-সহ অন্যান্য কেলেঙ্কারিতে আজ না হোক কাল অভিষেকের নাম উঠবেই। আর তা জেনেই কলকাতার নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে দিল্লি আসার সাহস দেখাতে পারছেন না অভিষেক। কিন্তু তিনিই যতই গা-ঢাকা দিয়ে থাকুন, অভিযোগ উঠলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ছেড়ে কথা বলবে না। অভিষেক প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘এ সব কথার জবাব দিয়ে কোনও বাড়তি গুরুত্ব দেব না।’’
তবে আজ সংসদের গান্ধী মূর্তির সামনে বিজেপির ধর্নাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। পাল্টা আক্রমণে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে যে ব্যপম কাণ্ড হয়েছিল, তাতে তো মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছিল। সেই সীমাহীন কেলেঙ্কারিকে কারও পক্ষে ছোঁয়া সম্ভব নয়। ফলে কিছু অভিযোগ তোলার আগে রাজ্য বিজেপির উচিত আয়নায় নিজেদের মুখ দেখা। তা ছাড়া রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। রায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। তা ছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই সংশ্লিষ্ট নেতাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। মন্ত্রীরাও ছাড় পাচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী আগামী শুক্রবার জেলা সভাপতি ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে দিশা এবং নির্দেশ দেবেন।’’ কলকাতার জেলা সভাপতি হিসাবে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন সুদীপও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy