Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

রাজ্য নেতৃত্বের সমন্বয়ে জোর, মোদীর মুখে আবার বঙ্গ, চান মজবুত এবং শক্তিশালী সংগঠন

দিল্লিতে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা-সহ মোট চার রাজ্যে দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রশ্নে দলকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন মোদী।

 দিল্লিতে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

দিল্লিতে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৬
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ দিল্লিতে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা-সহ মোট চার রাজ্যে দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রশ্নে দলকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন মোদী। পাশাপাশি, রাজ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়ের উপরে জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

যদিও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হওয়ার অনেক আগেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ শিবিরের দাবি, জাতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা আগামিকাল রাতেই কলকাতা পৌঁছবেন, পরশু কৃষ্ণনগরে তাঁর কর্মসূচি। সেই প্রস্তুতির জন্য শুভেন্দু তাড়াতাড়ি চলে যান এবং তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েই বেরোন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশের প্রশ্ন, তাই বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হওয়ার আগে চলে যাওয়া কি খুব জরুরি ছিল? রাতেও তো ফেরা যেত। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কী কারণে উনি আগে বেরিয়ে গিয়েছেন, তা জানি না। সম্ভবত কলকাতায় কারও সঙ্গে দেখা করার ছিল।”

প্রতিকূলতার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ‘যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন’, কাল তার স্বতঃপ্রণোদিত প্রশংসা শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর গলায়। আজ বৈঠকের শেষ প্রহরে প্রধানমন্ত্রী বাংলার নাম করে বুঝিয়ে দেন, রাজ্যে দলের সম্প্রসারণের দিকে নজর রাখছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে বড় রাজ্যগুলিতে ভাল ফল করতে

চাইছে, তার অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘অতীতে পশ্চিমবঙ্গে দলের ভোট ছিল ১০ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্যে দলের ভোট প্রাপ্তির হার প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পায়। আজ শীর্ষ বিজেপি নেতাদের বক্তব্যে যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের নাম একাধিক বার উঠে এসেছে, তা থেকেই স্পষ্ট, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গ জয়ের প্রশ্নে সঙ্কল্পবদ্ধ।’’

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্রমশ জমি দখল করে এগোচ্ছে বলে দাবি করেন ‌অমিত শাহ। আজ বৈঠকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে জে পি নড্ডার মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে শাহ বলেন, নড্ডার অন্যতম সাফল্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় উল্লেখজনক ভাল ফল। দল ৩ থেকে বাড়িয়ে ৭৭টি আসন জিতে নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও তেলঙ্গানায় রাজ্যে দলের সব থেকে বেশি রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে।

কী ভাবে রাজ্যে মানুষ শাসক দলের বিপক্ষে সরব হয়েছে, তা-ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন সুকান্ত। সূত্রের মতে, তিনি বলেন, আগে আবাস যোজনা বা শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে বিরোধী দল হিসেবে তাঁরা সরকার ও শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হতেন। কিন্তু এখন মানুষ নিজেরাই রাজ্য সরকারের কাছে হিসাব চাইছেন।

আজ বৈঠকের শেষে সুকান্তের দাবি, আসন্ন লোকসভায় ২০১৯ সালের থেকেও ভাল ফল করে ২৫টি আসন জিতবে বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, পশ্চিমবঙ্গে জনভিত্তি আগের থেকে বাড়লেও, মূলত তা বেড়েছে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার কারণে। রাজ্যে গত এগারো বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। ওই এক দশকে দুর্নীতির নানা ঘটনায় মানুষ বিরক্ত। কিন্তু সেই বিরোধী ভোট বিজেপির পক্ষে টেনে আনাই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। সেই কারণে রাজ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করে তোলার উপরে জোর দিতে চাইছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই কর্মসমিতির বৈঠকের পর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের ওই রাজ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রাতেই কলকাতা পৌঁছনোর কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতির। আগামিকাল রাতে কলকাতায় পৌঁছবেন নড্ডাও। সূত্রের মতে, বাজেট অধিবেশনের আগে আরও অন্তত দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সফরে যাবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi BJP West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy