সনিয়া গান্ধী এবং নিশিকান্ত দুবে। — ফাইল চিত্র।
গত বছর গা জোয়ারি করে দেওঘর বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে সপুত্র ঢুকে পড়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করেছিলেন। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার সেই বিতর্কিত বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বুধবার লোকসভায় কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে সমাজবাদী পার্টির এক সাংসদের কলার চেপে ধরার অভিযোগ তুললেন।
বুধবার লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনার সময় নিশিকান্ত অভিযোগ করেন, ২০১২-র ডিসেম্বরে লোকসভায় ১১৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল (সরকারি চাকরিতে তফসিলি জাতি-জনজাতিদের পদোন্নতি সংক্রান্ত) নিয়ে বিতর্কের সময় হট্টগোল বেধেছিল। সে সময় ক্ষমতাসীন ইউপিএর চেয়ারপার্সন সনিয়া সমাজবাদী সাংসদ যশবীর সিংহের কলার চেপে ধরেছিলেন। নিশিকান্ত বলেন, ‘‘সে দিন যশবীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণস্বামীর হাত থেকে বিলের প্রতিলিপি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই সনিয়া তাঁর কলার চেপে ধরেছিলেন। তাঁর দলের আরও কয়েক জন সাংসদ যশবীরকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেন।’’
সনিয়ার ওই আচরণের বিরুদ্ধে তিনি সে দিন রুখে দাঁড়িয়েছিলেন দাবি করে নিশিকান্ত বলেন, ‘‘আমি সনিয়াকে বলেছিলাম, ‘আপনি স্বেচ্ছাচারী শাসক নন, এখানকার রানি নন’। পরে সমাজবাদী পার্টির প্রধান প্রয়াত মুলায়ম সিংহ যাদব আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘বিজেপির সাংসদেরা পাশে না দাঁড়ালে যশবীর রক্ষা পেত না। সনিয়া এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে সমাজবাদী সাংসদকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন।’’ নিশিকান্তের এই অভিযোগের পরেই লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদেরা প্রতিবাদ জানান।
ঝাড়খণ্ডের ‘বাহুবলী’ বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তবুও গত মাসে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় ‘ইন্ডিয়া’র আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপর বিজেপির তরফে বিতর্কের সূচনা করেছিলেন তিনি। ২০২২ সেপ্টেম্বরে নিশিকান্ত-সহ ন’জন বিজেপি সাংসদ জোর করে দেওঘর বিমানবন্দরের ‘এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল’-এ ঢুকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে রাতে চার্টার্ড বিমানের উড়ানের অনুমতি দিতে বাধ্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। বিমানবন্দরের ডিএসপি সুমন আমনের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।
২০০৯ থেকে টানা তিনটি লোকসভা ভোটে গোড্ডা থেকে নির্বাচিত নিশিকান্ত তাঁর নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত যে নথিগুলি পেশ করেছিলেন, তার প্রতিলিপি এবং এ সংক্রান্ত নথি টুইটারে পোস্ট করে গত মার্চ মাসে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র অভিযোগ করেছিলেন, ওই বিজেপি সাংসদের পিএইডি এবং এমবিএ ডিগ্রি জাল! প্রকাশ্যে বিতর্কিত মন্তব্যেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে নিশিকান্তের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ায় বিজেপির একটি সভায় তিনি শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের অনুরোধ বিজেপি প্রার্থী চোর-ডাকাত বা দুষ্ট লোক হলেও তাঁকে সমর্থন করুন।’’ বাদল অধিবেশন পর্বে লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল এবং সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাটের বিরুদ্ধে চিনা সংস্থার থেকে মদত নেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি। বিরোধীদের আপত্তির জেরে সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয় সেই মন্তব্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy