—ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর ছ’দিন কেটে গিয়েছে। তার পরেও মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী কারা হবেন, তা ঘোষণা করতে পারল না বিজেপি। তেলঙ্গানায় মুখ্যমন্ত্রী পদে বৃহস্পতিবারই শপথ নিয়েছেন কংগ্রেসের রেবন্ত রেড্ডি। শুক্রবার মিজ়োরামেও শপথ নিয়ে ফেলেছেন জ়োরাম পিপলস্ মুভমেন্ট (জ়েডপিএম) নেতা লালডুহোমা। কিন্তু তিন রাজ্যে বিরাট জয়ের পরেও কেন মুখ্যমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করতে পারছে না বিজেপি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী সোমবার মধ্যপ্রদেশে পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকল বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, ওই দিনেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের উপস্থিতিতে। ঘটনাচক্রে, দিন দুয়েকের মধ্যেই যে তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা হতে পারে, শুক্রবারই সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি নেতা।
বিজেপি সূত্রে খবর, কোন রাজ্যে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা ঠিক করে দলের সংসদীয় বোর্ড। সেই বোর্ডে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু সদ্য ভোটে জেতা তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে এত সংখ্যক দাবিদার রয়েছেন যে, সংসদীয় বোর্ড এখনও সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে অহেতুক তাড়াহুড়ো না করে সব দিক বিচার করেই মুখ্যমন্ত্রীদের বাছতে চাইছে দল। যাতে লোকসভা ভোটের আগে দলে কোনও অসন্তোষ না থাকে। বিধানসভা ভোটে দল যে দাপট দেখিয়েছে, তা যাতে আসন্ন লোকসভাতেও বজায় থাকে, সেটা নিশ্চিত করাই এখন মূল মন্ত্র। তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েই চলতে চাইছেন। মধ্যপ্রদেশে, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার প্রশ্নে শুক্রবার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ করেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তিন রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভাল ভাবে খতিয়ে দেখতেই পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই খবর দলীয় সূত্রে।
রাজস্থানের যে পর্যবেক্ষক দলটি গিয়েছে, সেই দলে রয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিনোদ তাওয়ারে এবং সরোজ পাণ্ডে। ছত্তীসগঢ়ে যাওয়া দলটিতে রয়েছেন অর্জুন মুণ্ডা, সর্বানন্দ সোনোয়াল, দুষ্মন্ত গৌতম। আর মধ্যপ্রদেশে যে দলটি গিয়েছে, তাতে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, কে লক্ষ্মণ এবং আশা লকড়া রয়েছেন। আশা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষকও। বিজেপি জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ মধ্যপ্রদেশের ভোপালে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে পরিষদীয় দলের বৈঠক রয়েছে। তার তত্ত্বাবধানে থাকবেন খট্টর, লকড়ারা। দলীয় সূত্রে দাবি, মধ্যপ্রদেশে সাত জন বিজেপি নেতা এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। চার বারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান আবার কুর্সিতে বসতে পারেন কি না, তা ওই বৈঠকের পরেই ঠিক হয়ে যেতে পারে।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা মুরলিধর রাও শুক্রবার দাবি করেছেন, দু’দিনের মধ্যেই তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করতে পারে দল। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যবেক্ষক দল নিয়োগ করেছেন তিন রাজ্যে। তারা সংশ্লিষ্ট রাজ্যে যাবেন। সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। কথা বলবেন বিধায়কদের সঙ্গে। দু’দিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করবে তারা।’’
বৃহস্পতিবারই সন্ধ্যায় বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার দিল্লির বাসভবনে গিয়েছিলেন বসুন্ধরা রাজে। সঙ্গে ছিলেন পুত্র দুষ্মন্তও। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, মরুরাজ্যে দল নতুন কাউকে চাইছে। কিন্তু দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া বসুন্ধরা এ বারও কুর্সির দাবি ছাড়তে নারাজ। সমস্যা হল, বসুন্ধরা তাঁর অনুগামী জনা কুড়ি বিধায়ককে নিয়ে যদি বিদ্রোহ করে বসেন, তা হলে রাজস্থানে সরকার ধরে রাখা মুশকিল হয়ে পড়বে। এই বিষয়টিও এড়িয়ে যেতে পারছেন না কেন্দ্রীয় নেতারা। সূত্রের আরও দাবি, বিষয়টি দেখার জন্য রাজনাথকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, বসুন্ধরা লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ। রাজনাথও তা-ই। তাই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপরেই বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুষ্মন্তকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়ার মতো মধ্যপন্থার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও দাবি করেছে বিজেপি সূত্র।
দলীয় সূত্রে খবর, ছত্তীসগঢ়ে জনজাতি সমাজ বিজেপিকে ঢেলে ভোট দেওয়ায় জনজাতিভুক্ত নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর পক্ষপাতী বিজেপি নেতৃত্ব। দল যদি শেষ পর্যন্ত কোনও মহিলা জনজাতি নেত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেয়, সে ক্ষেত্রে দৌড়ে লতা উসেন্ডি, গোমতী সাই ও রেণুকা সিংহ এগিয়ে রয়েছেন বলেই দাবি বিজেপি সূত্রের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy