Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
BJP

ছ’মাসে অন্তত ছ’বার বদল, তবু টিকা নীতি নিয়ে প্রশ্ন করলেই তেড়ে আসছে বিজেপি

গত সপ্তাহে অধীর চৌধুরী পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে টিকাকরণ নীতি আলোচনা করতে চেয়ে বিজেপি-র বাধার মুখে পড়েছিলেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

ছয় মাসে অন্তত ছ’বার পাল্টেছে দেশের টিকা নীতি। তার কারণ জানতে চেয়ে বিরোধীরা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তাদের প্রশ্ন করা মাত্রই প্রথমে শুরু হল বাদানুবাদ, এমনকি, পরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন বিজেপি সাংসদেরা। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, এখন প্রশ্ন করার সময় নয়। ঠিক একই ভাবে গত সপ্তাহে অধীর চৌধুরী পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে টিকাকরণ নীতি আলোচনা করতে চেয়ে বিজেপি-র বাধার মুখে পড়েছিলেন। যা দেখে বিরোধীদের বক্তব্য, সরকার নিজের মর্জিতে চলবে, কিন্তু কোনও প্রশ্ন করা চলবে না।

আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে টিকাকরণ নীতি নিয়ে নজিরবিহীন অশান্তি হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, টিকা গবেষণা ও করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স। বিরোধী সাংসদেরা বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে সরকারের টিকাকরণ নীতি ও তাতে ঘন ঘন পরিবর্তনের কারণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন। কেন একটি টিকার ক্ষেত্রে দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান আচমকা বাড়ানো হল তা জানতে চাওয়া হয়। সূত্রের মতে, এখন এ সব নিয়ে প্রশ্ন করলে টিকাকরণ কর্মসূচি ব্যাহত হতে পারে— ওই যুক্তিতে আপত্তি জানান বিজেপি সাংসদেরা। তাঁদের দাবি, স্বাস্থ্যকর্তাদের কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। কমিটির চেয়ারম্যান জয়রাম রমেশ সেই দাবি মানতে না চাইলে বৈঠক বাতিলের দাবিতে ভোটাভুটি করার জন্য সওয়াল করেন এক বিজেপি সাংসদ।

ক্ষুব্ধ জয়রাম জানান, শাসক শিবিরের সাংসদদের দাবি-দাওয়া যদি বৈঠকের কার্যবিবরণীতে নথিবদ্ধ করা হয়, তা হলে এটিই চেয়ারম্যান হিসাবে তাঁর শেষ বৈঠক হবে। তাতেও বিজেপি সাংসদেরা অনড় থাকেন ও পরে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান।

টিকাকরণের সংখ্যা নিয়েও বিতর্ক অব্যাহত। যেখানে অন্যান্য দিন ত্রিশ লক্ষের আশপাশে টিকাকরণ হয়, সেখানে গত ২১ জুন, যোগ দিবসের দিনে কী ভাবে ৮৪ লক্ষ ব্যক্তির টিকাকরণ হল, সরকারের কাছে এখন সেই প্রশ্নের জবাব চাইছেন বিরোধীরা। আজ রাহুল গাঁধী টুইট করে বলেন, ‘যত দিন বেশি সংখ্যায় টিকাকরণ না হবে ততদিন আমাদের দেশ সুরক্ষিত নয়। আফশোসের
বিষয় হল সরকার টিকাকরণ কর্মসূচিকে নিজের প্রচারের ‘ইভেন্ট’ করে তুলেছেন।’ পরিকল্পিত ভাবে
যোগ দিবসে রেকর্ড করার উদ্দেশ্যে অন্য দিন কম টিকা দিয়েছে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি, এই অভিযোগে আজ সরব হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। মধ্যপ্রদেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশে ২০ জুন-৬৯২ জনকে টিকা, ২১ জুন ১৬,৯১,৯৬৭ জনকে আবার ২২ জুন, ৪৮২৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষেধক জমা করে এক দিনে দিয়ে দাও। তারপরে ফের পরের দিন কম। এটাই হল রেকর্ড প্রতিষেধক দেওয়ার কৌশল।’’ তাঁর বক্তব্য, দেশের জনসংখ্যার ৩.৬ শতাংশ প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ পেয়েছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় আনতে ফি দিন ৮০-৯০ লক্ষ করে টিকা দিতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী টিকাকরণকে প্রচারের ‘ইভেন্ট’ ছাড়া কিছু ভাবতে পারছেন না।

পাল্টা জবাবে আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ২১ জুন বিশেষ দিন ছিল। তাই ৮৪ লক্ষ টিকাকরণ হয়েছে। তার পরের দু’দিন যথাক্রমমে ৫২ লক্ষ ও ৫৮.৩৪ লক্ষ টিকাকরণ হয়েছে। রাজ্যগুলি এগিয়ে এলে ওই সংখ্যা আরও বাড়ানো সম্ভব।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Opposition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE