Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সরকার বাঁচাতে ডবল অভিযান

হই-হই কাণ্ড। সাত-তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত হল, বদলে ফেলা হবে হোটেল। হলও তাই। কিন্তু ‘বিপদ’ তাতেও কাটছে না। দেবেন্দ্র ফডণবীস ও অজিত পওয়ারের হাতে সংখ্যা দেখা যাচ্ছে না, তবু বিজেপি বুক বাজিয়ে বলছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের কাছেই।

রবিবার রাতে মুম্বইয়ে দেবেন্দ্র ফডণবীসের সঙ্গে বৈঠক করতে নিজের বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন অজিত পওয়ার। পিটিআই

রবিবার রাতে মুম্বইয়ে দেবেন্দ্র ফডণবীসের সঙ্গে বৈঠক করতে নিজের বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন অজিত পওয়ার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

‘মাতোশ্রী’ থেকে বেরিয়ে মুম্বইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে গিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। উদ্দেশ্য শরদ পওয়ারের দলের বিধায়কদের একজোট থাকার বার্তা দেওয়া। পওয়ার-উদ্ধব বেরিয়েছেন, এনসিপি-র বিধায়কদের পিছনে ঘুরঘুর করতে দেখা গেল কিছু অচেনা মুখকে। হাতেনাতে ধরে ফেললেন এনসিপি নেতারা। পরিচয়পত্র

পরীক্ষা করে দেখা গেল, সাদা পোশাকের গোয়েন্দা!

হই-হই কাণ্ড। সাত-তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত হল, বদলে ফেলা হবে হোটেল। হলও তাই। কিন্তু ‘বিপদ’ তাতেও কাটছে না। দেবেন্দ্র ফডণবীস ও অজিত পওয়ারের হাতে সংখ্যা দেখা যাচ্ছে না, তবু বিজেপি বুক বাজিয়ে বলছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের কাছেই। রাজ্যের ২৮৮ আসনে গরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১৪৫ জনের সমর্থন। কিন্তু বিজেপি বলছে, খুব কম হলেও দেড়শো জনের সমর্থন আছে। ১৭৫-ও হতে পারে।

কিন্তু কী ভাবে?

বিজেপির কাছে ১০৫ বিধায়ক। নির্দল নিয়ে ১২০ পেরোনোর কথা নয়। আর অজিত পওয়ার শপথ নিলেও এনসিপির ৫৪ জনের মধ্যে ৫০ জনের মতো এখন শরদ পওয়ারের কাছেই। ফলে বিধায়ক ধরতে না কি চারদিকে জাল বিছিয়ে দিয়েছে বিজেপি। শুধু এনসিপি নয়, কংগ্রেস-শিবসেনার বিধায়কদেরও ভাঙানোর চেষ্টা হচ্ছে। চলছে ‘অপারেশন পদ্ম’। আর শিবসেনার জন্য আরও একটি ‘অপারেশন’ না কি শুরু করেছে বিজেপি। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন শিব’। হিন্দুত্বের নামে ভাঙানোর চেষ্টা হচ্ছে উদ্ধবের দলের বিধায়কদের। কংগ্রেস-সেনা-এনসিপি শিবির বলছে, ৮০ থেকে ১০০ কোটি টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে বিধায়কদের। সঙ্গে মন্ত্রক, কর্পোরেশন, নির্বাচনী কেন্দ্রে বড় বড় প্রকল্পের লোভ।

কংগ্রেসের নেতা অশোক চহ্বাণ প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘বিজেপি পুরোদস্তুর ‘অপারেশন পদ্ম’ শুরু করে দিয়েছে। তিন দলের বিধায়কদেরই ভাঙানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ দিল্লিতে সীতারাম ইয়েচুরিও বলেন, ‘‘যত বেশি সময় দেওয়া হবে, তত বাড়বে ঘোড়া কেনাবেচার সুযোগ।’’ কংগ্রেস-এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, দল ভাঙার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদেরই। যেমন নারায়ণ রাণে, গণেশ নায়েক। নারায়ণ রাণে তো ক’দিন আগেই খোলাখুলিই বলেছেন, যে কোনও মূল্যে সরকার গড়ার নির্দেশ এসেছে তাঁর কাছে। কারা দল ভেঙে আসতে পারেন, তার তালিকা নাকি আগেই তৈরি হয়েছে।

এনসিপি শিবির আবার বলছে, শুধু বিজেপি নয়, খোদ অজিত পওয়ার ও তাঁর ছেলে পার্থও আসরে। দলের এক নেতা জানান, ‘‘আপাত ভাবে মনে হতে পারে, শরদ পওয়ারের কাছেই রয়েছেন এনসিপির সিংহ ভাগ বিধায়ক। কিন্তু এঁদের মধ্যে অনেকে আছেন, যাঁরা আসলে অজিত দাদার হয়ে কাজ করছেন। বিধানসভায় গরিষ্ঠতা প্রমাণের সময়েই স্পষ্ট হবে, কে কোন দিকে। অন্তত ৩০ জনের মতো এনসিপি বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে অজিত পওয়ারের।’’

বিজেপি সাংসদ সঞ্জয় কাকড়ে আজ সকালেই শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন। মিনিট পনেরো একান্ত বৈঠক করেছেন। বেরিয়ে এসে কাকড়ে বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলাম।’’ কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কিসের ব্যক্তিগত কাজ? দিল্লি থেকে মুম্বই পৌঁছে গিয়েছেন বিজেপির ‘অঘোষিত’ কোষাধ্যক্ষ ও নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। আজ তাঁরা বৈঠকও করেছেন। পরে বিজেপিকেও প্রশ্ন করা হয় ‘অপারেশন পদ্ম’ নিয়ে। দলের নেতা আশিস শেলার বলেন, ‘‘কোনও অপারেশন নেই। একটাই অপারেশন— দেবেন্দ্র-অজিতের স্থায়ী সরকার করা।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE