ফাইল চিত্র।
বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের আচমকা সিদ্ধান্ত একাধিক সম্ভাবনার জন্ম দিল ভোটমুখী পঞ্জাবে। কেন্দ্রের প্রথমে করতারপুর করিডর খুলে দেওয়া ও তার পরে গুরু নানক জয়ন্তীতে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণায় নতুন করে পঞ্জাবের ভোটের লড়াইয়ে ফিরে এল বিজেপি। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ আজ কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পরে নরেন্দ্র মোদীর দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সব মিলিয়ে গত কাল পর্যন্ত যে বিজেপি ভোটের লড়াইয়ে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিল, আজ তারাই পঞ্জাবে ক্ষমতা দখলের প্রশ্নে আশাবাদী।
গত বছর তিনটি কৃষি বিল আসার পরেই সেগুলিকে তাঁদের স্বার্থের পরিপন্থী বলে প্রথম সরব হয়েছিলেন পঞ্জাবের কৃষকেরা। সেই আন্দোলন হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। নয়া বিলকে প্রথমে সমর্থন করেও পঞ্জাবে দলের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কায় এনডিএ থেকে বেরিয়ে যায় শিরোমণি অকালি দল। পঞ্জাব-হরিয়ানায় কার্যত একঘরে হয়ে পড়েন বিজেপি নেতারা। এক বছর ধরে কৃষকেরা দিল্লির সীমানা অবরোধে অনড় থাকায় সমস্যা বাড়তে থাকে বিজেপির অন্দরমহলে। সম্প্রতি বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা যায়, কৃষি আইন ও তাকে ঘিরে আন্দোলনের ফলে পঞ্জাবে লড়াই করার পরিস্থিতিতেই নেই বিজেপি। আরও দেখা যায়, ওই আন্দোলনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে জাঠ অধ্যুষিত কৃষিবহুল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। এমনকি সে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখাও সমস্যার হতে পারে। পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝে আজ কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন মোদী।
রাজনীতির অনেকের মতে, করতারপুর করিডর খোলা ও কৃষি আইন প্রত্যাহারের সর্বাধিক সুফল কুড়োতে পারে বিজেপি-অমরেন্দ্র জোট। মোদী শিবির ওই দুই সিদ্ধান্তে বার্তা দিতে চেয়েছে, তারা পঞ্জাবের মানুষের পাশে আছে। এ দিকে কংগ্রেস মনে করছে, কৃষি আইনের প্রতিবাদে অকালির এনডিএ ছাড়ার সিদ্ধান্তের প্রভাবও ভোটবাক্সে পড়বে। অকালি শিবির যদিও জানিয়েছে, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোটে লড়ার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের পরে বিজেপি-অমরেন্দ্র জোটের সঙ্গে অকালির হাত মেলানোর সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। কংগ্রেসকে রুখতে অকালিকে বাইরে থেকে সমর্থনও দিতে পারে বিজেপি-অমরেন্দ্র জোট। তবে অমরেন্দ্র একা কতটা ভোট টানবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিজেপির অন্দরমহলে। এখনও ভাল করে নিজের দল গুছিয়ে উঠতে পারেননি ‘ক্যাপ্টেন’।
আজকের পরে পঞ্জাবের রাজনীতিতে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে কংগ্রেস। কৃষি আইন প্রত্যাহারকে নিজেদের জয় বলে প্রচারের চেষ্টা শুরু করেছেন পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী যদিও বলেছেন, ‘‘এত দেরিতে কিছু হবে না। আরও আগেই কৃষি আইন প্রত্যাহার করা উচিত ছিল।’’ ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তার দাবি তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিংহ সিধু। নিহত কৃষকদের জন্য স্মারক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পরেও আসন্ন ভোটের প্রচারে কৃষক অসন্তোষকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে ঝড় তোলার যে পরিকল্পনা কংগ্রেস নিয়েছিল, তা ভেস্তে গিয়েছে বলে মেনেই নিচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। উপরন্তু আম আদমি পার্টি পঞ্জাবের ভোটে লড়ে বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপিকে আরও সুবিধা করে দেবে বলেই কংগ্রেসের আশঙ্কা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy