‘এক পদ এক পেনশন নীতি’ ঠিকঠাক কার্যকর করার দাবিতে প্রাক্তন জওয়ান রামকিশন গ্রেবালের আত্মহত্যা এমনিতেই অস্বস্তিতে ফেলেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে। এরই মধ্যে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াতে জাতীয় স্তরে আন্দোলন আরও তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিল দলিত সংগঠনগুলি।
দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা থেকে গুজরাতে গো-রক্ষকদের হামলা— সাম্প্রতিক বিভিন্ন দলিত নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য স্তরে আন্দোলন করে যাচ্ছে একাধিক দলিত সংগঠন। সেই লড়াইকে এ বার রাজধানীর মাটিতে নিয়ে আসার প্রশ্নে একজোট হয়েছে তারা। ঠিক হয়েছে দলিত সংগঠনগুলির ডাকে আগামী ২৭ নভেম্বর দিল্লির রামলীলা ময়দানে একটি মহাসংগ্রাম জনসভার আয়োজন করা হবে। উদ্যোক্তা কমিটির আহ্বায়ক অশোক ভারতী বলেন, ‘‘দিল্লির মাটিতে দাঁড়িয়ে মোদী সরকারে বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
বছরের শুরুতে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র রোহিত ভেমুলা বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেন। নাম জড়ায় দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। কিছু দিন পরেই গুজরাতের উনায় গোরক্ষকদের নৃশংসতার শিকার হন তিন-চার জন। অভিযোগ করা হয়, এই দলিতরা চামড়ার জন্য গোহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে সঙ্ঘ ও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের নাম। উনায় নিগৃহীতদের অন্যতম রমেশভাই সারাভাইয়া আজ দিল্লির প্রেস ক্লাবে বলেন, ‘‘মৃত পশুর চামড়া ছাড়ানো আমাদের পেশা। সে দিন কাছের এক গ্রামে মৃত গরুর চামড়া ছাড়ানোর সময় গোরক্ষকরা এসে আমাদের মারধর শুরু করে।’’ রমেশের অভিযোগ, গরুর মালিকও জানিয়েছিলেন সেটি আগেই মারা গিয়েছে। কান দেয়নি গোরক্ষকরা। তাঁর মা ও ভাই জিতুকেও পেটানো হয়। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বাবা বালুভাইয়ের। রমেশের কথায়, ‘‘মারধর করার পরে আমাদের গাড়িতে তোলা হয়। পথে পুলিশই গোরক্ষকদের পরামর্শ দেয় আমাদের উনা টাউনে নিয়ে যাওয়ার।’’ রমেশ ও জিতুর অভিযোগ, উনায় প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা কোমরে দড়ি বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে চলে মারধর।’’
শুধু উনা নয়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, এমনকী দেশের রাজধানী খাস দিল্লিতেও কী ভাবে দলিতরা অত্যাচার ও অবিচারের শিকার হচ্ছেন তা-ও এ দিন প্রেস ক্লাবে তুলে ধরেন নিপীড়িতরা। দলিতদের এই প্রচার ও আগামী দিনে জাতীয় স্তরে আন্দোলনে নামার হুমকি নতুন করে রক্তচাপ বাড়াচ্ছে বিজেপির।
এক সময় বঙ্গারু লক্ষ্মণের মতো দলিত নেতা সভাপতি হয়েছেন এই দলের। গত লোকসভা ভোটে উন্নয়নের প্রশ্নেও দলিতদের একটি অংশকে কাছে টানতে পেরেছিলেন মোদী। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের ভোটের মুখে দলের সমীক্ষা বলছে, গত দু’বছরে, বিশেষ করে বিভিন্ন নিগ্রহ-নির্যাতনের ঘটনায় দলিত সমর্থনে ধস নেমেছে। ভীমরাও অম্বেডকরের জন্মদিনে ঢাকঢোল পিটিয়ে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের ক্ষমতায়নে কর্মসূচি শুরু করলেও দলিত সমাজের কাছে দলের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। যার সুযোগে উত্তরপ্রদেশে হারানো জমির দখল নিচ্ছেন মায়াবতী। যা এখন মূল চিন্তার বিষয় বিজেপির কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy