—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিজেপি এক দিকে সংগঠনে ফাঁকফোকর মেরামত করতে চাইছে। অন্য দিকে চাইছে বিরোধীরা একজোট হলে তার মোকাবিলায় এনডিএ-র আয়তনও বাড়াতে। সে জন্য নিজেদের মধ্যে যুযুধান দুই পক্ষের সঙ্গে হাত মেলাতেও পিছপা হচ্ছেন না বিজেপি নেতারা।
চলতি মাসের ১৭ ও ১৮ তারিখ বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলির বৈঠক। ১৮ তারিখই এনডিএ-র বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার আগে রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগ পাসোয়ানের এনডিএ-তে যোগ দেওয়া কার্যত নিশ্চিত। এ নিয়ে চিরাগের কাকা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পশুপতি পরসের আপত্তি থাকলেও দুই পক্ষের মধ্যে মিটমাট করিয়ে দিতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। এনডিএ-তে যোগ দিয়ে চিরাগও চাইছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী হতে।
বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী দু’তিনদিনের মধ্যে না হলে, ১৮ জুলাই এনডিএ-র বৈঠকের পরে মন্ত্রিসভার রদবদল হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৩ ও ১৪ জুলাই ফ্রান্স সফরে থাকবেন। মন্ত্রিসভার রদবদলের আগেই চিরাগের মতো নতুন শরিকদের এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার বিষয়ে ফয়সালা হয়ে যাবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিহারের মতো দক্ষিণ ভারতে শক্তি বাড়াতে, সেখানকার রাজ্যগুলির জনপ্রতিনিধিদের মন্ত্রিসভার রদবদলে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিজেপির সভাপতি জে পি নড্ডা আজ হায়দরাবাদে দক্ষিণের রাজ্যগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে চলতি বছরের শেষে তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচন। সে দিকে, লক্ষ্য রেখে তেলঙ্গানা বিজেপির সদর দফতরে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এল সন্তোষ, দক্ষিণের রাজ্যগুলির বিজেপি সভাপতি, দলীয় সাংসদ, বিধায়কেরা বৈঠকে যোগ দেন। বিজেপি সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে লোকসভা ভোটের রণকৌশল হিসেবে বুথ স্তরে মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট, প্রতিটি রাজ্যের জন্য পৃথক কৌশল, মোদী সরকারের প্রকল্প নিয়ে সরাসরি মানুষের কাছে যাওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ তৈরি করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ভারত থেকেও নতুন দলকে এনডিএ-তে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে পদ্মশিবির।
এনডিএ-র সম্প্রসারণ নিয়ে আজ পটনায় লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর নেতা চিরাগের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। তার আগে চিরাগ এনডিএ-তে যোগ দেওয়া নিয়ে তাঁর দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দল আনুষ্ঠানিক ভাবে চিরাগের উপরেই সিদ্ধান্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। আলোচনা হয়েছে জোট নিয়ে। খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হবে। উল্টো দিকে, নিত্যানন্দ রামবিলাসের বাড়িকে নিজের দ্বিতীয় বাড়ি আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘‘বিজেপি ও রামবিলাস পাসোয়ান একই মূল্যবোধ নিয়ে চলতেন।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, নীতীশ কুমার আরজেডি, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর পরে বিজেপি বিহারে বাকি দলগুলিকে নিজেদের দিকে টানতে চাইছে। রামবিলাসের মৃত্যুর পরে তাঁর দল দু’টুকরো হয়ে গিয়েছিল। রামবিলাসের ভাই পশুপতি রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি তৈরি করে আগেই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। অন্য দিকে, চিরাগ এনডিএ-তে তাঁর দল লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর নাম ঢুকিয়ে তিনিও মন্ত্রী হতে চাইছেন। অথচ কাকা, ভাইপো এত দিন বলেছেন, এক জন অন্য জনের সঙ্গে এক জোটে থাকবেন না। চিরাগ বিজেপির সঙ্গে জোট করার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেও জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর প্রয়াত বাবার লোকসভা কেন্দ্র হাজিপুর থেকে তাঁর দলই লোকসভা ভোটে লড়বে। এখন হাজিপুরের সাংসদ পশুপতি।
চিরাগ তিন বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। তখন নীতীশ ও বিজেপির একসঙ্গে ছিল। নীতীশ বিজেপির সঙ্গত্যাগের পরে সম্প্রতি বিহারের তিনটি বিধানসভার উপনির্বাচনে রামবিলাস-পুত্র বিজেপির হয়ে জোরদার প্রচার করেছেন। তার মধ্যে বিজেপি দু’টো আসনে জিতেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy