আপের বিরুদ্ধে বিজেপির কাউন্সিলরকে টোপ দিয়ে ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগ। — ফাইল ছবি।
দিল্লি পুরসভায় দীর্ঘ দিন পর বিরোধী আসনে বসবে বিজেপি। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে আম আদমি পার্টি (আপ) পুরবোর্ডে শপথ নেওয়ার আগেই তাদের বিরুদ্ধে ঘর ভাঙানোর অভিযোগ তুলল বিজেপি। বিজেপির দাবি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ঘনিষ্ঠ এক মহিলা তাঁদের দলের কাউন্সিলরকে ফোন করে বাড়তি অনুদানের টোপ দিয়েছেন। তথ্যপ্রমাণ নিয়ে দুর্নীতি দমন শাখা (এসিবি)-র দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছে মোদী-অমিত শাহের দল। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে আপের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের অর্থের টোপ দেওয়ার অভিযোগ আপের। ১০জন আপ কাউন্সিলরকে ‘কিনতে’ ১০০ কোটি টাকা নিয়ে নেমেছে বিজেপি, দাবি আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহের।
केजरीवाल की एजेंट शिखा गर्ग भाजपा की पार्षद को प्रलोभन दे रही हैं जिसका सबूत अब सबके सामने आ चुका है-श्री @HarishKhuranna
— BJP Delhi (@BJP4Delhi) December 10, 2022
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে মহাবিকাশ আঘাডী সরকার ভেঙে তৈরি হয় বিজেপি-শিবসেনা সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হন বিক্ষুব্ধ শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। সেই সময়ই বিরোধীরা বিজেপির বিরুদ্ধে সরকার ভাঙার অভিযোগ করেছিল। মধ্যপ্রদেশ থেকে শুরু করে সে দিনের মহারাষ্ট্র, ইদানীং একের পর এক রাজ্যে সরকার ভাঙার ক্ষেত্রে বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে। কিন্তু এ বার রাজধানীতে উলটপুরাণ। আপের বিরুদ্ধে নিজেদের কাউন্সিলরকে ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগ করল বিজেপি। শনিবার বিজেপি মুখপাত্র শেহজ়াদ পুনাওয়ালার অভিযোগ, দিল্লি পুরনিগমের ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর মনিকা পন্থ তাঁদের একটি ফোন রেকর্ড শুনিয়েছেন। যে ফোনটি করেছিলেন কেজরীওয়াল-ঘনিষ্ঠ কেউ এক জন। এমনটাই দাবি তাঁর।
দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র হরিশ খুরানা বলেন, ‘‘অরবিন্দ কেজরীওয়ালের এজেন্ট শিখা গর্গ বিজেপি কাউন্সিলর মনিকাকে বলেছিলেন, তিনি মনিকার জন্য এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থের জোগাড় করে দেবেন এবং অন্যান্য ভান্ডার থেকেও টাকা এনে দেবেন। আমাদের কাছে সমস্ত প্রমাণ আছে। সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে আমরা এসিবির কাছে যাব।’’
বিজেপি নেতারা আপকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই বলে যে, এটা অরবিন্দ কেজরীওয়ালের কাছে একটি বিপদসঙ্কেত। এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘ভুলে যাবেন না ওঁরা বিজেপির কাউন্সিলর, আপের নয়। বিজেপি কাউন্সিলরদের টোপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপ বিক্রি হতে পারে, কিন্তু বিজেপির কেউ বিক্রি হবেন না।’’
একই অভিযোগে সরব হয়েছে আপও। শনিবারই আপের অন্যতম শীর্ষ নেতা সঞ্জয় সিংহ তিন জন আপ কাউন্সিলরকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি পুরভোটে হেরে গিয়েও লজ্জা নেই বিজেপির। এ বার আপের কাউন্সিলরদের ভাঙাতে নোংরা খেলা শুরু করে দিয়েছে তারা। ঠিক যে ভাবে মহারাষ্ট্র, অরুণাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, গোয়া এবং গুজরাতে ঘোড়া কেনাবেচার মাধ্যমে সরকার গড়েছে বিজেপি, দিল্লির পুরসভাতেও তেমনই চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’
সঞ্জয়ের অভিযোগ, যোগেন্দ্র চান্দোলিয়া নামে এক ব্যক্তি তাঁদের এক কাউন্সিলরকে ফোন করে জানান, দিল্লি বিজেপির প্রধান আদেশকুমার গুপ্ত তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। আপের ১০ জন কাউন্সিলরকে ‘কিনতে’ ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয় ওই ফোনে বলে অভিযোগ সঞ্জয়ের। তিনি বলেন, ‘‘এই ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে শুধুমাত্র ১০ জন আপের কাউন্সিলরকে কিনতে। অর্থাৎ, কাউন্সিলর পিছু ১০ কোটি টাকা করে খরচ করতে রাজি বিজেপি।’’
মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের সময় বিজেপি নেতাদের দাবি ছিল, নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের যজ্ঞে সামিল হতে এবং জনবিরোধী সরকার সরাতে তাঁরা গেরুয়া শিবিরে চলে আসছেন বা বিজেপির হাত ধরছেন। সে ক্ষেত্রেও বিরোধীরা টাকার খেলার অভিযোগ করেছিল। পদের লোভ দেখানোর অভিযোগও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল। একই অভিযোগ সম্প্রতি উঠেছে তেলঙ্গানায়। অভিযোগ, সেখানেও তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস)-র বিধায়কদের ‘কিনে’ নিতে কোটি কোটি টাকা নিয়ে নেমেছিল বিজেপি। সেই ঘটনা এখন আদালতের বিচারাধীন। এই প্রেক্ষিতেই বিজেপি কাউন্সিলর ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগে বিদ্ধ হল আপ। যদিও এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন আপ নেতারা। তাঁদের কটাক্ষ, বিজেপি এ বার নিজের জালেই নিজে ফেঁসে গিয়েছে!
২৫০ ওয়ার্ডের দিল্লি পুরসভায় আপ জিতেছে ১৩৪টি ওয়ার্ড, বিজেপির হাতে গিয়েছে ১০৪টি, কংগ্রেস পেয়েছে ৯টি ওয়ার্ড এবং তিন জন মহিলা নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy